ছবি : সংগৃহীত

শবে কদরের বছরের সেরা রাত। এই রাতের তুলনা কেবল এই রাত। সর্বাত্মক চেষ্টা করা উচিত যেন এই রাত কোনোভাবে অবহেলায় নষ্ট না হয়। অন্য দিকে আজ লাইলাতুল কদরের সর্বাধিক সম্ভাবনাময় (২৭ তম) রাত। ফলে কোনো অবহেলা ও গাফিলতি যেন না হয়, সে জন্য অত্যন্ত সতর্ক থাকা চাই।

সাহাবি উবাই ইবনু কাব (রা.) কদরের রাত সম্পর্কে বলেন, ‘আল্লাহর শপথ! সেই রাতটি সম্পর্কে আমি খুব ভালো করেই জানি। রাসুলুল্লাহ (সা.) আমাদের ২৭ তম রাতে ইবাদতের জন্য জেগে থাকার নির্দেশ দিয়েছেন।’ (মুসলিম, হাদিস : ২৬৬৮)

মুআবিয়া (রা.) নবী (সা.) হতে লাইলাতুল কদর সম্পর্কে বর্ণনা করেন। তিনি (নবিজি) বলেন, ‘রমজানের ২৭ তারিখ হলো লাইলাতুল কদর।’ (আবু দাউদ, হাদিস : ১৩৮৬)

এছাড়াও উমর ইবনুল খাত্তাব, হুযাইফা ইবনুল ইয়ামান এবং অন্যান্য অনেক সাহাবি (রা.) এ ব্যাপারে কোনো সন্দেহ করতেন না যে, কদরের রাত ২৭ তম রাত। [মুসান্নাফে ইবনে আবি শাইবাহ]

তবে, এসব হাদিসের বিপরীতে শেষ দশকের অন্যান্য রাত—২১, ২৩, ২৪, ২৫ ও ২৯ তারিখের ব্যাপারেও সহিহ বর্ণনা রয়েছে যে, নবি করিম (সা.) এই রাতগুলোতে কদর তালাশ করতে বলেছেন। মূলত, কদরের রাতটি এজন্য গোপন রাখা হয়েছে, যেন সবাই শেষ দশকের প্রতিটি রাতেই ইবাদত করে।

আরও পড়ুন : শবে কদরে যে দোয়া করতে বলেছেন নবীজি (সা.)

আল্লাহর রাসুল (সা.) বলেন, ‘তোমরা রামাদানের শেষ দশকে লাইলাতুল কদর তালাশ করো।’ (বুখারি, হাদিস : ২০২০)

আমরা আরেকটু অগ্রসর হয়ে বলতে পারি, এটি শেষ দশকের বিজোড় রাতগুলোতে আছে। হাদিসে এসেছে, ‘তোমরা শেষ দশকের বিজোড় রাতগুলোতে লাইলাতুল কদর তালাশ করো।’ (বুখারি, হাদিস : ২০১৭)

বিজোড় রাতগুলোর মাঝে ২৭ তম রাতটি সবচেয়ে সম্ভাবনাময়। এ ব্যাপারে অধিকাংশ আলিম একমত। তবে, সুনিশ্চিতভাবে এটি বলার অবকাশ নেই যে, ২৭ তম রাতটিই লাইলাতুল কদর। এটি অধিক সম্ভাবনার দাবি রাখে কেবল। কারণ, কদরের রাতটি স্থানান্তরিত হয়; প্রতি বছর একই তারিখে হয় না; যেমনটি আমরা আগের একটি লেখায় আলোচনা করেছি।

আজ ফজরের ওয়াক্ত শুরু হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত আমলে লেগে থাকুন। রাতের সীমারেখা হলো- মাগরিব থেকে ফজরের ওয়াক্ত শুরু হওয়ার আগ পর্যন্ত।

আল্লাহ্ তাআলা বলেন, ‘আমি একে (কোরআন মাজিদকে) অবতীর্ণ করেছি লাইলাতুল কদরে (সম্মানিত রাতে)। লাইলাতুল কদরের ব্যাপারে আপনি কি জানেন? লাইলাতুল কদর (সম্মানিত রাতটি) এক হাজার মাস অপেক্ষা শ্রেষ্ঠ।’ (সুরা আল-ক্বাদর, আয়াত : ১-৩)

আল্লাহর রাসুল (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি ঈমানের সাথে, সওয়াবের আশায় কদরের রাতে (ইবাদতের জন্য) দণ্ডায়মান হবে, তার পূর্বের গুনাহ ক্ষমা করে দেওয়া হবে।’ (বুখারি, হাদিস : ২০১৪)

আল্লাহ তাআলা আমাদের সৌভাগ্যের রজনী শবে কদর প্রাপ্তির তাওফিক দান করুন। আমিন।