জন্মের পর শিশুর রাখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ কাজ। আল্লাহ তায়ালার পক্ষ থেকে সন্তানের মতো নেয়ামত লাভের পর তার সুন্দর নাম রাখাও শুকরিয়া প্রকাশের একটি মাধ্যম। নাম শুধু মানুষের পরিচয় বহন করে না বরং মানুষের ব্যক্তিত্বের ওপর এর ব্যাপক প্রভাব পড়ে। এজন্য সন্তানের সুন্দর, অর্থবোধক, চিত্তাকার্ষক ও ইসলামী নাম রাখা মুসলমান মা-বাবার ওপর আবশ্যক।

রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম শিশুর সুন্দর নাম রাখার প্রতি গুরুত্ব দিয়েছেন এবং তিনি মন্দ ও শিরিকের অর্থবহন করে এমন নাম রাখতে নিষেধ করেছেন।

হজরত ইবনে ওমর রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, আব্দুল্লাহ ও আব্দুর রহমান নাম দুটি আল্লাহ তায়ালার কাছে সব থেকে প্রিয়। এই হাদিসের মাধ্যমে বুঝানো হয়েছে, নাম রাখার সময় এমন নাম নির্বাচন করা উচিত যার মাধ্যমে আল্লাহ তায়ালার দাসত্ব ও তার প্রতি আনুগত্যের বিষয়টি প্রকাশ পায়। - সহিহ মুসলিম, ২৩১২

এক হাদিসে বলা হয়েছে, নবজাতকের নাম কোনো নবীর নামে রাখা যেতে পারে। হজরত জাসামী রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, তোমরা শিশুদের নাম নবী রাসূলদের নামে রাখো। সুতরাং এমন নাম নির্বাচন করা উচিত যা অর্থবহ এবং সত্যতার ওপর যার ভিত্তি রয়েছে। - মুসনাদে ইমাম আহমাদ, ৫৩৩।

যেসব নামের মাধ্যমে কুৎসিত অর্থ প্রকাশ পায় এবং মানুষের সম্মান নষ্ট হয় এমন নাম পরিবর্তন করে রাখতেন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। হজরত আয়েশা রা. বলেছেন, নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মন্দ নাম পরিবর্তন করে রাখতেন।- আবু দাউদ, ৫০৩৯

হজরত ওমর রা.-এর এক নিকটাত্মীয়ের নাম আসিয়া ছিল। যার অর্থ ‘নাফরমান’। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তার নাম পরিবর্তন করে ‘জামিলা’ রাখেন। যার অর্থ সুন্দরী।- সহিহ মুসলিম, ৯৩২১

এমন নাম রাখা থেকেও বিরত থাকতে হবে যা অমঙ্গল এবং এজাতীয় অর্থ বুঝায়।

আবার শিশুর এমন নামও রাখা যাবে না যা আল্লাহ তায়ালার গুণাবলী ও সত্ত্বার সাথে খাস। হজরত আবু দারদা রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, কিয়ামতের দিন সব থেকে দুর্ভাগা হবে সেই ব্যক্তি যে নিজেকে বাদশা বলে বেড়াত। কেননা সব বাদশার বড় বাদশা আল্লাহ তায়ালা। তবে আল্লাহ তায়ালার গুণবাচক নামগুলোর শুরুতে আরবি ‘আবদ’ শব্দটি যুক্ত করে রাখা যেতে পারে।- সহিহ মুসলিম, ৩৩২১

এনটি/