ইশরাক আরবি শব্দ। এর অর্থ হলো আলোকিত হওয়া। সূর্য উঠার পর পৃথিবী আলোকিত হয়, তাই এই সময় হাদিসে যে নামাজের ইঙ্গিত পাওয়া যায় তাকে সালাতুল ইশরাক বলেছেন মুহাদ্দিসিনে কেরাম। এই নামাজ পড়তে হয় ফজরের নামাজের পর সূর্য উদিত হওয়ার কিছুক্ষণ পর। সকালে এই নামাজ আদায়ের ফলে একটি পরিপূর্ণ হজ ও ওমরাহর সওয়াব পাওয়া যায়।

নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম প্রায় নিয়মিত ফজরের নামাজের পর থেকে সূর্য উদিত হওয়া পর্যন্ত মসজিদে অবস্থান করতেন। তাসবিহ-তাহলিল আদায় করতেন এবং সাহাবাদের নিয়ে দ্বীনি আলোচনা করতেন। এরপর সূর্য উদিত হওয়ার পর তিনি দু’রাকাত নামাজ পড়তেন। 

ইশরাক নামাজের সময়

তবে সূর্য ওঠার সঙ্গে সঙ্গে এ নামাজ পড়তেন না রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, বরং একটু সময় নিয়ে আদায় করতেন। হাদিসের আলোকে আলেমরা বলেন, সূর্য উঠার ১০-১২ মিনিট পর এই নামাজ আদায় করতে হয়। তবে ১৫ মিনিট পর পড়া ভালো। কেউ কেউ ২০ মিনিট পর পড়ার কথাও বলেছেন।

হজরত আবু দারদা ও আবু জর (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে তাঁরা বলেন- রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, আল্লাহ তায়ালা বলেন, হে বানী আদম! তুমি আমার জন্য দিনের প্রথমে চার রাকাত নামাজ আদায় কর। আমি তোমার জন্যে যথেষ্ট হবো দিনের শেষ পর্যন্ত।

ইশরাক নামাজের ফজিলত

ইশরাকের নামাজের ফজিলতের বিষয়ে আনাস ইবনে মালেক (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি জামাতের সঙ্গে ফজরের নামাজ আদায় করল এবং সূর্যোদয় পর্যন্ত আল্লাহর জিকিরে বসে থাকল; অতঃপর দুই রাকাত নামাজ আদায় করল, সে একটি পরিপূর্ণ হজ ও ওমরাহর সওয়াব পাবে।’ (তিরমিজি, হাদিস : ৫৮৬)

নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এই দুই রাকাতের সাথে আরো দু’রাকাত নামাজ আদায় করতেন। এটি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের আমল দ্বারা প্রমাণিত। ইশরাকের নামাজের সাথে আরো দুই রাকাত নামাজ পড়লে এর ফলে বান্দার সব কাজের জিম্মাদার হয়ে যান আল্লাহ তায়ালা।

ইশরাকের নামাজের সাথে আরো দুই রাকাত নামাজের বিষয়ে হাদীসে কুদসিতে এসেছে- ‘আল্লাহ রাববুল আলামীন বলেন, বান্দা যদি সকালে চার রাকাত নামাজ পড়ে, সন্ধ্যা পর্যন্ত বান্দার যত কাজ আছে আমি আল্লাহ তার সকল কাজের জিম্মাদার হয়ে যাই। (জামে তিরমিযী ১/১০৮)

হজরত আবু দারদা ও আবু জর (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে তাঁরা বলেন- রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, আল্লাহ তায়ালা বলেন, হে বানী আদম! তুমি আমার জন্য দিনের প্রথমে চার রাকাত নামাজ আদায় কর। আমি তোমার জন্যে যথেষ্ট হবো দিনের শেষ পর্যন্ত।-(তিরমিজি, ৪৭৫, আত-তারগীব, ৬৭২)

ইশরাক নামাজের নিয়ম

ইশরাক নামাজের জন্য সুস্পষ্ট আলাদা কোনো নিয়ম ও নিয়ত নেই। অন্যান্য নামাজের মতোই দুই রাকাত করে আদায় করতে হয়। শুধু নফল অথবা ইশরাকের দুই রাকাত পড়ছি এমন নিয়ত করে ‘আল্লাহু আকবার’ বলে শুরু করলেই হবে। -(মাজমাউল ফাতাওয়া, ১১/৩৮৯)

এনটি/