মসজিদগুলোতে সাধারণত প্রাপ্তবয়স্ক, বুঝমান মানুষেরাই আজান দিয়ে থাকেন। তবে কখনো কোনও মসজিদের দায়িত্বশীল মুয়াজ্জিন বিশেষ প্রয়োজনে মসজিদে উপস্থিত না থাকলে অপ্রাপ্ত বয়স্ক নাবালক শিশু যদি আজান দেয় তাহলে কি এই আজান শুদ্ধ হবে?

এক্ষেত্রে ইসলামী সমাধান হলো- নামাজের জন্য আজান দেওয়া সুন্নতে মুয়াক্কাদা, যা ওয়াজিবের কাছাকাছি। এছাড়াও আজান ইসলামের অন্যতম নিদর্শন বহন করে। আজানের মাধ্যমেই মুসলমানরা বুঝতে পারেন যে নামাজের সময় হয়েছে। এজন্য ফরজ নামাজ আদায়ের ক্ষেত্রে আজান ও একামতের গুরুত্ব অপরিসীম

আজান সম্পর্কে হাদিসে বলা হয়েছে, আবদুল্লাহ ইবনে ইউসুফ (রহ.) আবদুল্লাহ ইবনে আবদুর রহমান আনসারী মাযিনী (রহ.) থেকে বর্ণনা করেন যে, আবূ সাঈদ খুদরী (রা.) তাকে বললেন, আমি দেখছি তুমি বকরি চরানো এবং বন-জঙ্গলকে ভালোবাস। তাই তুমি যখন বকরি চরাতে থাকো বা বন-জঙ্গলে থাকো তখন উচ্চকন্ঠে আজান দাও। কেননা, জিন, ইনসান বা যেকোনো বস্তুই যতদূর পর্যন্ত মুয়াজ্জিনের আওয়াজ শুনবে, সে কিয়ামতের দিন তার পক্ষে স্বাক্ষ্য দিবে। আবূ সাঈদ (রা.) বলেন, একথা আমি রাসূলুল্লাহ (সা.) এর কাছে শুনেছি। -(বুখারী, ৫৮২)

আজান যেহেতু গুরুত্বপূর্ণ আমল এবং নামাজের আহ্বান তাই প্রাপ্ত বয়স্ক পুরুষদেরই আজান দেওয়া উচিত। তবে বুঝমান নাবালেক ছেলে আজান দিলে তাও আদায় হয়ে যাবে। তবে এমন শিশুকে নিয়মিত আজানের জন্য নিয়োগ দেওয়া ঠিক নয়। তবে একেবারে বুঝ নেই, ইসলামের বিধি-বিধান, হালাল-হারাম সম্পর্কে বুঝতে শেখেনি এমন শিশুর আজান দেওয়া মাকরূহে তাহরিমি।

 

হজরত আব্দুল্লাহ ইবনে আবি বকর বিন আনাস বলেন, ‘আমার চাচারা আামাকে আজান দেওয়ার আদেশ করলে আমি আজান দিতাম। তখন আমি অপ্রাপ্ত বয়স্ক বালক ছিলাম। আনাস বিন মালিক রা. আমাকে আজান দিতে দেখলেও প্রতিবাদ করেননি।’-(ইবনুল মুনজির ৩/১৭৬)

-(সূত্র : মুসান্নাফ ইবনে শাইবা ১/২৫৬; বাদায়েউস সানায়ে ১/৩৭২; আলবাহরুর রায়েক ১/৪৪২; খুলাসাতুল ফাতাওয়া ১/৪৯-৫০; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ১/৫২০; আদ্দুররুল মুখতার ১/৩৯১)

এনটি