টুপি মাথার সৌন্দর্য বাড়ায় এবং তা ইসলামী সংস্কৃতির অংশ। আল্লাহর রাসুল (সা.) এবং সাহাবায়ে-কেরাম সবসময় টুপি পরতেন। উম্মুল মুমিনীন হজরত আয়েশা রা. বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সফর অবস্থায় কান বিশিষ্ট টুপি পরতেন আর আবাসে শামী টুপি পরতেন।-(আখলাকুন নুবুওয়্যাহ, আল জামে লি আখলাকির রাবী ওয়া আদাবিস সামে পৃ. ২০২)

হাসান বিন মেহরান থেকে বর্ণিত- একজন সাহাবী বলেছেন, ‘আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাথে তাঁর দস্তরখানে খেয়েছি এবং তাঁর মাথায় সাদা টুপি দেখেছি’। -(আল ইসাবাহ ৪/৩৩৯)

সাহাবায়ে কেরাম এবং তাবেয়ীগণ টুপি পড়ার প্রতি গুরুত্ব দিতেন। ফেকাহবিদ আলেমরা বলেন, একজন মুসলমান হিসেবে সবসময় টুপি পরা মুস্তাহাব এবং নামাজে পরা সুন্নত। বিভিন্ন সময়ে অনেকে টুপি ছাড়া নামাজ পড়েন। টুপি যেহেতু রাসুলের সুন্নত তাই টুপি ছাড়া নামাজ আদায় করা যাবে কি?

এ বিষয়ে আলেমরা বলেন, আল্লাহ তায়ালা এরশাদ করেন, ‘তোমরা নামাজের সময় তোমাদের সর্বোৎকৃষ্ট পোশাক পরিধান করো’। (সূরা আরাফ : ৩১)

এ আয়াত থেকে বোঝা যায়, নামাজ আদায় করার ক্ষেত্রে পোশাক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মাথা ঢেকে নামাজ আদায় করতেন, আমাদেরও তাই করা উচিত। সাহাবায়েকেরাম ও তাবিঈগণও এ বিষয়ে যথেষ্ট গুরুত্ব দিতেন।

যেমন-হাসান ইবনে আলী রা. সম্পর্কে এসেছে, তিনি নামাজের সময় সর্বোৎকৃষ্ট পোশাক পরতেন। একদিন কেউ তাঁকে এ ব্যাপারে জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন, নিশ্চয়ই আল্লাহ তাআলা সুন্দর এবং তিনি সুন্দরকে পছন্দ করেন। তাই আমি আমার প্রভুর জন্য সুন্দর পোশাক পরি। -(রুহুল মাআনি ৪/৩৪৯)

হাসান বসরি রহ. বলেন, তারা (সাহাবায়ে কেরাম গরমের কারণে) পাগড়ি বা টুপির ওপর সিজদা করতেন। (বোখারি ১/৮৬)

যুহাইর (রহ.) বলেন, আমি প্রখ্যাত তাবেয়ি আবু ইসহাক সাবিয়ীকে দেখেছি, তিনি আমাদের নিয়ে নামাজ পড়েছেন। তিনি মাটি থেকে টুপি উঠিয়ে মাথায় পরেছেন। -(তাবাকাতে ইবনে সাদ ৬/৩১৪)

তাই ফুকাহায়ে কেরাম নামাজে টুপি পরা সুন্নত বলেছেন এবং অবহেলা করে টুপি না পরে নামাজ পড়াকে মাকরুহ বলেছেন, যদিও নামাজ আদায় হয়ে যাবে। তবে এটাকে অভ্যাসে পরিণত করা নিন্দনীয়।’

-(ফাতাওয়া কাজিখান : ১/১৩৫, আদ দুররুল মুখতার মাআ রদ্দুল মুহতার, খণ্ড-২, পৃষ্ঠা-৪০৬, মাকতাবায়ে জাকারিয়া, দেওবন্দ। ফতোয়া উসমানী (৪/৩৪২, করাচি)