একজন মুমিন সব সময় অন্যের উপকারের চেষ্টা করবে এবং ক্ষতিসাধন থেকে দূরে থাকবে- এটাই ইসলামের শিক্ষা। কারণ যারা মানুষের উপকার করে, আল্লাহ তাদের ভালোবাসেন। অন্যের ক্ষতিসাধন ও হক নষ্টের চেষ্টাকারীদের আল্লাহ সাময়িকভাবে ছাড় দিলেও তাদের জন্য শাস্তি অবধারিত। 

পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তায়ালা বলেন, তোমরা নিজেদের মধ্যে একে অন্যের অর্থ-সম্পদ অন্যায়ভাবে গ্রাস করো না এবং মানুষের ধন-সম্পদের কিয়দংশ জেনে-শুনে অন্যায়ভাবে গ্রাস করার উদ্দেশ্যে তা বিচারকের কাছে পেশ করো না।  (সূরা আল-বাকারা, আয়াত-১৮৮)

কোরআনে আরও বলা হয়েছে, নিশ্চয়ই আল্লাহ তোমাদের নির্দেশ দিচ্ছেন,  তোমরা আমানতকে তার মালিকের  কাছে প্রত্যার্পণ করো বা ফেরত দাও।  (সূরা আন-নিসা, আয়াত-৫৮)

হজরত আবু সিরমা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি অন্য কারো ক্ষতিসাধন করে, আল্লাহ তায়ালা তা দিয়েই তার ক্ষতিসাধন করেন। যে ব্যক্তি অন্যকে কষ্ট দেয়, আল্লাহ তায়ালা তাকে কষ্টের মধ্যে ফেলেন।’ -(তিরমিজি, হাদিস : ১৯৪০)

অন্য হাদিসে ইরশাদ হয়েছে, আবু সিরমাহ (রা.) থেকে বর্ণিত, নবী (সা.) বলেছেন, ‘কেউ অন্যের ক্ষতি করলে আল্লাহ তার ক্ষতিসাধন করবেন। কেউ অযৌক্তিকভাবে কারো বিরোধিতা করলে আল্লাহ তার বিরোধী হবেন।’ -(আবু দাউদ, হাদিস : ৩৬৩৫)

নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আরও বলেছেন, যার কাছে তার ভাইয়ের হক রয়েছে, তা মান-সম্মানের হোক বা অন্য কিছুর হোক, সে যেন আজই ক্ষমা চেয়ে নেয় (বা পরিশোধ করে মিটমাট করে নেয়)। এমন দিন আসার আগেই, যেদিন কোনো অর্থকড়ি থাকবে না। যদি ব্যক্তির কোনো নেক আমল থাকে তা দিয়ে পাওনাদারের ঋণ বা হক শোধ করা হবে। আর যদি কোনো নেক আমল না থাকে তা হলে পাওনাদারের বা হকদারের পাপের বোঝা সমপরিমাণ তার মাথায় দিয়ে দেয়া হবে।’ -সহীহ বুখারী

এ হাদিস দ্বারা নিশ্চিতভাবে বিশ্বাস করা যায়, দুনিয়াতে মানুষে মানুষে শুধু নয় কুল মাখলুকাতের মাঝে বিদ্যমান সকল অন্যায় বৈষম্য ও বে-ইনসাফির সমতা বিধান ও সমাধান আখেরাতের আদালতে হবে। কেউ কারও হক নষ্ট করে দুনিয়াতে পার পেয়ে গেলেও আখেরাতে তাকে অবশ্যই পাকড়াও করা হবে এবং সে হক আদায় করা হবে। তাই অন্যের হক আদায়ের ব্যাপারে সবার সতর্ক থাকা একান্ত কর্তব্য।

এনটি