প্রতীকী ছবি

তাহাজ্জুদ নামাজ নফল ইবাদত। এটি রাতের শেষ ভাগে ঘুম থেকে উঠে পড়া হয়। রাতের শেষ ভাগে তাহাজ্জুদের নামাজের পাশাপাশি আল্লাহর দরবারে চোখের পানি ফেলা ও আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাওয়া খাঁটি ঈমানদারের বৈশিষ্ট্য। ঈমানদারদের গুণাবলি সম্পর্কে পবিত্র কোরআনে বলা হয়েছে—  ‘তারা ধৈর্যশীল, সত্যবাদী, অনুগত ব্যয়কারী ও রাতের শেষ প্রহরে ক্ষমাপ্রার্থী।-(সুরা আলে ইমরান, আয়াত : ১৭)

আল্লাহ তাআলা পবিত্র কোরআনে আরও বলেন, ‘আর রাতের কিছু অংশে তাহাজ্জুদ পড়বে। এটা তোমার অতিরিক্ত দায়িত্ব। অচিরেই তোমার রব তোমাকে প্রশংসিত স্থানে প্রতিষ্ঠিত করবেন।’ (সুরা বনি ইসরাঈল, আয়াত : ৭৯)

নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘রমজানের পর সর্বশ্রেষ্ঠ রোজা হলো আল্লাহর মাস মুহাররমের রোজা। আর ফরজ নামাজের পর সর্বশ্রেষ্ঠ নামাজ হলো রাতের (তাহাজ্জুদের) নামাজ।’ (মুসলিম, হাদিস নম্বর : ১১৬৩)

কেউ রাতের একেবারে শেষ অংশে তাহাজ্জুদ শুরু করার পর ফজর আজান দিয়ে দিলে তার করণীয় কি?- তাহাজ্জুদের নিয়তে শুরু করা নামাজ কি নফল হবে নাকি ফজরের সুন্নত?

এ বিষয়ে ইসলামী আইন ও ফিকাহ শাস্ত্র বিশেষজ্ঞরা বলেন- কেউ রাতের একেবারে শেষ অংশে তাহাজ্জুদ শুরু করার পর মুয়াজ্জিন যদি সময় (ওয়াক্ত) হওয়ার কিছুক্ষণ পর আজান দিয়ে থাকেন, তাহলে ওই দুই রাকাত নামাজ ফজরের সময় শুরু হওয়ার পর আদায় করা হয়েছে বলে ধরা হবে। এই নামাজ ফজরের সুন্নত হিসেবে আদায় হয়েছে, তাহাজ্জুদের অন্তর্ভুক্ত হবে না। তাই এমন পরিস্থিতিতে  নতুন করে আর তাহাজ্জুদ পড়তে হবে না।

আর যদি মুয়াজ্জিন সময় হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই আজান দিয়ে থাকেন তাহলে সময়ের আগেই নামাজ শুরু করার কারণে তা নফল হিসেবেই আদায় হয়েছে। এক্ষেত্রে ফজর নামাজের সুন্নত আলাদাভাবে আদায় করতে হবে।

উল্লেখ্য, সুবহে সাদিক থেকে ফজরের ওয়াক্ত শেষ হওয়া পর্যন্ত সময়টা গুরুত্বপূর্ণ। এই সময়ে ফজরের সুন্নত ব্যতীত অন্য কোনো নফল নামাজ পড়া নিষেধ। এই ব্যাপারে হাদিসে সুস্পষ্ট নিষেধাজ্ঞা এসেছে। হাফসা (রা.) বলেন, ‘যখন ফজর উদিত হত, তখন রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম শুধু ফজরের দুই রাকাত সুন্নত সংক্ষেপে (ছোট সুরা দিয়ে) পড়তেন।’ (সহিহ মুসলিম, হাদিস : ৭২৩)

আবদুল্লাহ ইবনে আমর (রা.) বলেন, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন- ‘সুবহে সাদিক হওয়ার পর দুই রাকাত সুন্নত ছাড়া কোনো (নফল) নামাজ পড়া যাবে না। (মুসান্নাফে আবদুর রাজ্জাক, হাদিস : ৪৭৫৭)

-আততাজনীস ওয়াল মাযীদ ২/১০৪; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/১১২; ফাতহুল কাদীর ৩/১৮৭; শরহুল মুনইয়া, পৃ. ৪০২; আননাহরুল ফায়েক ১/২৯৪; আদ্দুররুল মুখতার ২/১৫