প্রতীকী ছবি

প্রস্রাব-পায়খানা মানুষের প্রকৃতিগত বিষয়। কেউ এর থেকে মুক্ত থাকতে পারে না। ইসলাম জীবনের প্রতিটি বিষয়ের মতো একান্ত প্রাকৃতিক এই বিষয়টি নিয়েও গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশনা দিয়েছে। হাদিসের গ্রন্থগুলোতে ইস্তেঞ্জা নিয়ে বিশদ বর্ণনা ও আলাদা আলাদা অধ্যায় রয়েছে।

স্বভাবগত এই প্রয়োজন দেখা দিলে মানুষ তাৎক্ষণিক এ থেকে মু্ক্ত হয়ে হাফ ছেড়ে বাঁচেন। অনেকে কিছুটা বিলম্বও করেন। বিশেষত নামাজ বা কোনও ইবাদতের আগে ইস্তেঞ্জার বেগ পেলে কেউ কেউ তা চেপে রাখেন, নতুন করে অজু করতে অলসতার কারণে। এভাবেই দাঁড়িয়ে যান নামাজে।

কিন্তু প্রস্রাব-পায়খানা এবং বায়ুর চাপ নিয়ে নামাজ পড়া মাকরুহ বলে থাকেন ইসলামী আইন ও ফিকাহ শাস্ত্র বিশেষজ্ঞরা। কেননা এতে নামাজের খুশু-খুজু বিঘ্নিত হয় এবং এক ধ্যানে নামাজ আদায় করা যায় না। এসব চাপ থেকে মুক্ত হয়ে পূর্ণ স্থিরতা ও একাগ্রতার সঙ্গে নামাজ আদায় করা কর্তব্য। 

হাদিস প্রস্রাব-পায়খানা ও বায়ুর চাপ নিয়ে নামাজ আদায় করতে নিষেধ করা হয়েছে। আবদুল্লাহ ইবনে আরকাম (রা.) বলেন, ‘আমি রাসুলুল্লাহ (সা.)-কে বলতে শুনেছি, যখন নামাজে দাঁড়িয়ে যায় আর তোমাদের কারও প্রস্রাব-পায়খানার প্রয়োজন দেখা দেয় সে যেন প্রথমে প্রয়োজন সেরে নেয়।’ (তিরমিজি : ১৪২)। 

হজরত সাওবান (রা.) থেকে বর্ণিত- রাসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেছেন, ‘কোনো ব্যক্তির জন্য হালাল নয় কারও গৃহাভ্যন্তরে অনুমতি ব্যতীত দৃষ্টিপাত করা... এবং কেউ যেন প্রস্রাব-পায়খানার চাপ নিয়ে নামাজ না পড়ে।’ (তিরমিজি : ৩৫৭)

 

নাফে (র.)-কে জিজ্ঞাসা করা হলো যে, এক ব্যক্তি পেটে বায়ুর চাপ বোধ করে। তিনি বললেন, ‘বায়ুর চাপ বোধ করা অবস্থায় সে যেন নামাজ না পড়ে।’ (মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা : ৮০২২)

এসব হাদিস ও আসারের ওপর ভিত্তি করে ফুকাহায়ে কেরাম বলেছেন, প্রস্রাব-পায়খানা এবং বায়ুর চাপ নিয়ে নামাজ আরম্ভ করা মাকরুহ তাহরিমি। আর স্বাভাবিক অবস্থায় নামাজ শুরু করার পর নামাজের ভেতরে এমন চাপ সৃষ্টি হলে নামাজের পর্যাপ্ত ওয়াক্ত বাকি থাকা সত্ত্বেও এ অবস্থায় নামাজ চালিয়ে যাওয়া মাকরুহ। এ ধরনের ক্ষেত্রে নামাজ ছেড়ে দিয়ে অজু-ইস্তিঞ্জা সেরে পূর্ণ চাপমুক্ত হয়ে নামাজ আদায় করা কর্তব্য। 

হ্যাঁ, নামাজের ওয়াক্ত যদি এত স্বল্প থাকে যে, প্রয়োজন সারতে গেলে নামাজ কাজা হয়ে যাবে তাহলে সম্ভব হলে এ অবস্থায়ই নামাজ পড়ে নিবে। অবশ্য পর্যাপ্ত ওয়াক্ত থাকার পরও কোনো ইমাম বা একাকী নামাজ আদায়কারী যদি এ অবস্থায় নামাজ পড়ে নেয় তবে এমনটি করা মাকরুহ হলেও তাদের নামাজ আদায় হয়ে যাবে। (রদ্দুল মুহতার : ১/৩৪১-৬৪৪)

এনটি