প্রতীকী ছবি

কেয়ামতের দিন পৃথিবীর আদি-অন্ত সব মানুষের পুনরুত্থান হবে। সবাইকে সারিবদ্ধভাবে আল্লাহর সামনে হাজির করা হবে। সেদিন সবার আমলনামা উপস্থিত করা হবে। এটা দেখে ঈমানদাররা আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করবে; কিন্তু অপরাধীরা আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে পড়বে। 

তবে সেদিন যাদের ডান হাতে আমলনামা দেওয়া হবে তাদের কোনও চিন্তা থাকবে না এবং তারাই সৌভাগ্যবানদের অন্তর্ভূক্ত হবে। পবিত্র কোরআনে বর্ণিত হয়েছে, ‘সেদিন যাকে তার আমলনামা ডান হাতে দেওয়া হবে, সে (আনন্দে অন্যদের ডেকে) বলবে, নাও তোমরা আমার আমলনামা পড়ে দেখো। আমি জানতাম যে আমাকে জবাবদিহির সম্মুখীন করা হবে।’ -(সুরা : হাককাহ, আয়াত : ১৯-২০)

কেয়ামতের দিন বিচারপর্বে ডান হাতে বা বাম হাতে আমল প্রদানের বিষয়টি নির্ণয় হবে আমলের ওজনের মাধ্যমে। যার নেক আমল বেশি হবে তার আমলনামাই ডান হাতে দেওয়া হবে। 

ডান হাতে আমলনামা পাওয়াটা মুক্তির নিদর্শন। এতে হিসাব হবে খুব সহজ হবে। আমলে কিছুটা ত্রুটি-বিচ্যুতি থাকলেও ক্ষমা করে দেওয়া হবে। আল্লাহ বলেন, যার আমলনামা ডান হাতে দেওয়া হবে, শিগগিরই তার থেকে সহজ হিসাব নেওয়া হবে।’ -(সুরা ইনশিকাক: ৭-৮)

হিসাব সহজ হওয়ার অর্থ হলো, তার হিসাবের ব্যাপারে পর্যবেক্ষণ হবে না। পর্যবেক্ষণ হলেই বিপদ। হজরত আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে এসেছে, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘কেয়ামতের দিন যে কারও হিসাব নেওয়া হবে; সে ধ্বংস হবে। আমি (আয়েশা) বললাম, হে আল্লাহর রাসুল, আল্লাহ তায়ালা কি বলেননি, ‘আর যার ডান হাতে আমলনামা দেওয়া হবে তার হিসাব-নিকাশ সহজ হবে।’ 

রাসুল (সা.) বলেন, এ তো শুধু (আমলনামা) পেশ মাত্র; কারণ কেয়ামতের দিন যে কারও হিসাব পর্যবেক্ষণ করা হবে সে নির্ঘাত ধ্বংস হবে।’ (মুসলিম : ২৮৭৬)

যারা আমলনামা ডানহাতে পাবে তারা সাথে সাথেই আনন্দে উদ্বেলিত হয়ে উঠবে এবং নিজের বন্ধু-বান্ধবদের তা দেখাবে। সে আহলাদে আটখানা হয়ে আশেপাশের লোকজনকে বলবে, আমার আমলনামা পাঠ করে দেখ।

আর যাদের আমলনামা বাম হাতে দেওয়া হবে তাদের অবস্থা হবে খুবই ভয়ানক। এ হতভাগারা খুব লজ্জিত হবে। বাম হাতে আমলনামা নিতে চাইবে না; বাম হাতের পৃষ্ঠদেশকে লুকিয়ে রাখবে; কিন্তু বাম হাতে তাদের আমলনামা ধরিয়ে দেওয়া হবে। আল্লাহ বলেন, ‘আর যার আমলনামা বাম হাতে দেওয়া হবে, সে বলবে, কতই না ভালো হতো যদি আমাকে আমার আমলনামা না দেওয়া হতো!’ -(সুরা আল-হাক্কাহ : ২৫)

এনটি