প্রতীকী ছবি

মুসলিম সমাজে মসজিদের গুরুত্ব অপরিসীম। মসজিদের সঙ্গে মুসলমানদের সম্পর্ক অনেক বেশি। সবাই প্রতিদিন পাঁচবার উপস্থিত হন মসজিদে। সমাজে মসজিদ কেন্দ্রীক অনেক জনকল্যাণমূলক কাজ হতে দেখা যায়। মসজিদের ইমামের কাছে মানুষ নিজের বিভিন্ন সমস্যা, সুখ-দুঃখের কথা বলেন। প্রশান্তি ও শান্ত্বনা খোঁজার চেষ্টা করেন। মসজিদের মিম্বার থেকে ব্যক্তি, সমাজ, পার্থিব ও পরকালীন জীবনে সুখ-সমৃদ্ধির বার্তা পেতে চান মুসল্লিারা।

অনেক এলাকায় মসজিদের জমিতে বিভিন্ন ফলের গাছ লাগানো থাকে। ভরা মৌসুমে ফলে-ফুলে ভরে উঠে গাছ। ঘ্রাণে মৌ-মৌ করে। নজর কাড়ে মুসল্লি-পথচারীদের।

অনেকেই মসজিদের গাছ থেকে পাকা ফল পেড়ে খান বা খেতে চান। এমন পরিস্থিতিতে সচেতন মুসল্লিদের কেউ কেউ জানতে চান- এভাবে মসজিদের গাছের ফল খাওয়া বৈধ কিনা?

 

এ বিষয়ে ইসলামী আইন ও ফেকাহ শাস্ত্রবিদেরা বলেন, মসজিদের জমিতে ফল গাছ যদি এ উদ্দেশ্যে লাগানো হয় যে, এর ফল মুসল্লিসহ অন্যরাও খেতে পারবে। তাহলে তা মুসল্লি ও অন্যদের জন্য খাওয়া জায়েজ হবে।

আর যদি মসজিদের জন্য লাগানো হয় কিংবা লাগানোর উদ্দেশ্য জানা না যায়। তাহলে তা মুসল্লি বা অন্য কারো জন্য বিনামূল্যে খাওয়া জায়েজ হবে না। তা বিক্রি করে পুরোটাই মসজিদের কাজে ব্যয় করতে হবে। -(ফাতাওয়ায়ে মাহমুদিয়া ২১/৪৩৩, কেফায়াতুল মুফতি ১০/৩৫৬, আদদুররুল মুখতার ৬/৬৪৮)

মনে রাখতে হবে, মসজিদের প্রতি কোনও ধরনের অসৌজন্যতা ও বেয়াদবি অথবা মসজিদের সম্পদে কোনও ধরনের খেয়ানত যেন না হয়, এ বিষয়ে পূর্ণ সতর্ক ও সজাগ থাকতে হবে। কারণ, মসজিদ আল্লাহর ঘর। এর প্রতি অসম্মান প্রর্দশনের কোনও সুযোগ নেই।

পবিত্র কোরআনে বর্ণিত হয়েছে, ‘আল্লাহ যে ঘরগুলোকে (মসজিদ) উচ্চমর্যাদা দিতে এবং তাতে তার নাম উচ্চারণ করতে আদেশ করেছেন, তাতে সকাল ও সন্ধ্যায় তাসবিহ পাঠ করে এমন লোক, যাদের ব্যবসা-বাণিজ্য ও বেচা-কেনা আল্লাহর স্মরণ, নামাজ কায়েম ও জাকাত আদায় থেকে গাফেল করতে পারে না। তারা ভয় করে সেদিনকে, যেদিন অন্তর ও দৃষ্টি ওলট-পালট হয়ে যাবে।’ -(সুরা নুর, আয়াত : ৩৬-৩৭)

মসজিদের প্রতি সম্মান প্রদর্শন ও সবসময় মসজিদের সঙ্গে অন্তরের সম্পৃক্ততার বিশেষ ফজিলত রয়েছে। হাদিসে ইরশাদ হয়েছে, সাত শ্রেণির মানুষকে আল্লাহ তার (আরশের) ছায়াতলে আশ্রয় দেবেন, যেদিন তার (আরশের) ছায়া ছাড়া আর কোনো ছায়া থাকবে না। ন্যায়পরায়ণ বাদশাহ। ওই যুবক, যে তার প্রতিপালকের ইবাদতে লালিত-পালিত হয়। ওই ব্যক্তি, যার অন্তর মসজিদের সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকে (এখান থেকে বেরুবার পর থেকে আবার ফেরা পর্যন্ত)...। –(সহিহ বোখারি: ৬৬০)

এনটি