প্রতীকী ছবি

মানুষ মাত্রই ভুল হয়ে থাকে। গুরুত্বপূর্ণ কত কাজেই মানুষ ভুল করে বসে। পরবর্তীতে এর জন্য আফসোস করত হয়, খেসারত গুনতে হয়। আবার কিছু কিছু কাজ এমন থাকে যার খেসারত গোনা সম্ভব হয় না। শুধু আফসোস আর লোকসানই সঙ্গী হয়ে থাকে।

শয়তান মানুষকে ভুলিয়ে দেয়

নামাজের ক্ষেত্রেও মানুষ এমন গুরুত্বপূর্ণ ভুল করে বসে কখনো কখনো। যেমন, ভুল করে অনেক সময় অজু না করেই নামাজ পড়ে ফেলে। বিভিন্ন কাজের ব্যস্ততা অথবা শয়তানের প্ররোচনা মানুষকে অজু করা ভুলিয়ে দেয়। 

পবিত্র কোরআনে বর্ণিত হয়েছে,  মূসা (আ.) হজরত ইউশা’ (আ.) বলেছিলেন, ... ‘যা ঘটেছিল আমি তা আপনাকে জানাতে ভুলে গিয়েছিলাম, শয়তানই সেটার কথা আমাকে ভুলিয়ে দিয়েছিল;... -(সুরা কাহাফ, আয়াত, ৬৩)

অজুর বিধান সম্পর্কে পবিত্র কোরআনে বর্ণিত হয়েছে, ‘হে মুমিনরা! যখন তোমরা নামাজের জন্য প্রস্তুত হবে তখন তোমাদের মুখ ও হাত কনুই পর্যন্ত ধৌত করবে। এবং মাথা মাসেহ করবে আর পা টাখনু (গ্রন্থি) পর্যন্ত ধৌত করবে...। ’ (সুরা : মায়েদা, আয়াত : ৬)

অজুতে ৪টি অঙ্গ ধোয়া ফরজ

তাই কেউ ভুলে অজু ছাড়া নামাজ আদায় করলে তার নামাজ হবে না। কারণ, নামাজের জন্য অন্যতম প্রধান ও প্রথম শর্ত হলো, পবিত্রতা ও অজু করা। অজুতে কমপক্ষে ৪টি অঙ্গ ধোয়ার মাধ্যমে এ ফরজ আদায় করতে হবে। ইচ্ছাকৃতভাবে অজু না করে নামাজ পড়া বিরাট গুনাহের কাজ। কেউ জেনেশুনে ইচ্ছা করে এমন করলে এটাকে কুফুরির সঙ্গে তুলনা করেছেন কোনও কোনও আলেম।

ফিকাহবিদদের অভিমত

তবে অজু ছাড়া ভুলে নামাজ পড়ে ফেললে করণীয় হলো, অজু করে পুনরায় নামাজ আদায় করা। কারণ, অজু ছাড়া নামাজ আদায় হয় না। ফিকাহবিদরা এ অভিমতের ওপর ঐক্যমত প্রকাশ করেছেন।

আল্লাহর রাসুল (সা.) হাদিসে বলেন, ‘তোমাদের কারো যদি অজু ভেঙে যায়, তাহলে পুনরায় অজু করার আগ পর্যন্ত আল্লাহ তাআলা তার নামাজ কবুল করেন না।’ (বুখারি, হাদিস : ৬৯৫৪; মুসলিম, হাদিস : ২২৫)

অন্য হাদিসে আবদুল্লাহ ইবনে উমর (রা.) বলেন, আমি আল্লাহর রাসুল (সা.)-কে বলতে শুনেছি, ‘পবিত্রতা ছাড়া কোনো নামাজ কবুল করা হয় না।’ (মুসলিম, হাদিস : ২২৪)

প্রখ্যাত হাদিসবিশারদ ও ফিকাহবিদ ইমাম শরফ আন-নববি (রহ.) বলেন, ‘অজুহীন ব্যক্তির জন্য নামাজ পড়া হারাম; এ ব্যাপারে আলেম-উলামারা একমত। তারা এ ব্যাপারেও ঐকমত্য পোষণ করেছেন যে, অজুহনী ব্যক্তির নামাজ শুদ্ধ হবে না; অজু না থাকা সম্পর্কে সে অবগত থাকুক কিংবা অজ্ঞ হোক। কিংবা অজু না থাকার কথা ভুলে গিয়ে থাকলেও।

তবে সে যদি একদম অজ্ঞ হয় কিংবা পুরোপুরি ভুলে গিয়ে থাকে, তাহলে তার কোনো গুনাহ হবে না। আর যদি তার অজু না-থাকার বিষয়টি ও অজু ছাড়া নামাজ হারাম হওয়ার বিষয়টি জেনেও সে নামাজ পড়ে এবং পড়ে থাকলে পুনরায় আদায় না করে, তাহলে সে জঘন্য গুনাহে লিপ্ত।’ (আল-মাজমু, খণ্ড: ০২, পৃষ্ঠা: ৭৯)

এনটি