প্রতীকী ছবি

প্রতিটি মুসলিমের ওপর আল্লাহ তাআলা পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ ফরজ করেছেন। দিনে জোহর ও আসার, আর রাতে মাগরিব, এশা ও ফজর। এছাড়া বিতর নামাজ ও সুন্নতে মুআক্কাদার নামাজ আদায় আবশ্যিক কর্তব্য। এছাড়া বাকি অন্যান্য সুন্নত ও নফল আদায়ের ব্যাপারে এখতিয়ার দেওয়া হয়েছে, যেগুলোর মাধ্যমে বান্দা আল্লাহর নৈকট্য অর্জন করতে পারে। কেননা, মুমিনের দিন-রাতের প্রতিটি ক্ষণ আল্লাহর ইবাদত ও অনুগত্যের অন্তর্ভুক্ত।

তবে কিছু সময় রয়েছে, যখন নামাজ আদায় নিষিদ্ধ, সেগুলো হলো- সূর্যোদয়, সূর্যাস্ত ও সূর্য ঠিক মাঝ আসমানে স্থির থাকার সময়।

তাহাজ্জুদের নামাজের পরিচয়
মানুষ আল্লাহর নৈকট্য লাভের সর্বোত্তম সময় হলো রাতের গভীর। আর রাতের গভীরে যে নামাজ আদায় করা হয়, তাকে ‘সালাতুত তাহাজ্জুদ’ বা ‘তাহাজ্জুদের নামাজ বলা হয়।

তাহাজ্জুদ শব্দটি আরবি ‘হাজ্জাদা’ শব্দ থেকে নির্গত। কেউ যদি রাতের গভীরে নামাজ আদায় করে, তাকে বলা হয় ‘তাহাজ্জাদা ফিল লাইল’ বা সে রাতে তাহাজ্জুদ পড়েছে। (তা’রিফ ওয়া মা’না তাহাজ্জুদ, www.almaany.com ১৭-১১-২০১৭)

পরিভাষায় তাহাজ্জুদ বলা হয়, নামাজ আদায়ের জন্য রাতে ঘুম থেকে জাগ্রত হওয়া। আল্লাহ তাআলা পবিত্র কোরআনে বলেন, ‘রাতের কিছু অংশে তোমার জন্য নফল হিসেবে তাহাজ্জুদ আদায় করো।’ (সুরা বনি ইসরাইল, আয়াত : ৭৯)

অতএব, তাহাজ্জুদ নামাজ হলো- 

রাতের আঁধারে আল্লাহর নৈকট্য লাভে নফল নামাজ আদায়।

তাহাজ্জুদ ও কিয়ামুল লাইলের পার্থক্য
উভয়টির মধ্যে পার্থক্য হলো- রাতে ঘুমের পর কেবল নামাজ আদায়ের জন্য জাগ্রত হওয়া তাহাজ্জুদ। চাই অল্প সময়ের জন্য হোক বা বেশি সময়। আর কিয়ামুল লাইল হলো- নামাজ, জিকির, দোয়া ও কোরআন তেলাওয়াত ইত্যাদির সমষ্টি। এগুলো রাতের যেকোনো অংশে হতে পারে। অতএব, জ্ঞাতব্য যে- তাহাজ্জুদ হলো কিয়ামুল লাইলের একটি প্রকার। এটি ঘুমের পর রাতে নামাজ আদায়ে আবার জাগ্রত হওয়াকে বলে। (হাল হুনাকা ফারকুন বাইনাত তাহাজ্জুদ ওয়া কিয়ামিল লাইল, http://www.islamqa.info/ ২০-১১-২০১৭)

সাহাবি আল-হাজ্জাজ ইবনে গাজিয়্যাহ (রা.) বলেন, ‘তোমার কেউ যদি রাতে জাগ্রত হয়ে সকাল হওয়া পর্যন্ত নামাজ আদায় করে, তাহলে সে তাহাজ্জুদ আদায়কারী হিসেবে ধর্তব্য হবে। কেননা তাহাজ্জদু হলো- ঘুম থেকে জেগে নামাজ পড়া, এরপর ঘুমিয়ে আবার জেগে নামাজ পড়া। রাসুল (সা.)-এর তাহাজ্জুদ নামাজ এমনই ছিল।’ (মাজমাউজ জাওয়ায়েদ : ২৮০/২)

এমএমইউ