পবিত্র কাবা শরিফের ইমাম ও খতিব শায়খ ড. বান্দার আবদুল আজিজ বালিলাহ। ছবি : সংগৃহীত

গোঁফ ছোট রাখা এবং দাড়ি লম্বা রাখা মুসলমানদের ধর্মীয় প্রতীক। দাড়ি রাখা কোনো ফ্যাশন নয়, এটি ইবাদত। এটি মহানবী (সা.)-সহ অন্য সব নবী-রাসুলদের সুন্নত। সুন্নাহসম্মত দাড়ি কোনো ব্যক্তি মুসলিম হওয়ার অন্যতম নিদর্শন।

ব্যক্তির আত্মিক ও বাহ্যিক সৌন্দর্য প্রকৃত ইসলাম পালনের মধ্যেই বিদ্যমান। এছাড়াও আল্লাহপ্রদত্ত নিয়ামতের মধ্যে দৈহিক সৌন্দর্য অন্যতম। অন্যদিকে ইবাদতের পাশাপাশি এটি ব্যক্তির সম্মান, সৌন্দর্য ও মর্যাদা বৃদ্ধির প্রতীক।

দাড়ি মুণ্ডন করা কিংবা কর্তন (যখন এক মুঠ থেকে কম) করা হারাম এবং কবিরা গুনাহ। আয়েশা (রা.) বলেন, রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘দশটি কাজ প্রকৃতির অন্তর্গত, এর মধ্যে প্রথম দুইটি হচ্ছে- গোঁফ খাটো করা, দাড়ি বড় করা।’ (মুসলিম : ২/৫১১)

হাদিস-সুন্নাহর বিধান অনুযায়ী দাড়ি রাখা ওয়াজিব। আল্লাহর রাসুল (সা.) দাড়ি রাখার আদেশ করেছেন। আবদুল্লাহ ইবনে ওমর (রা.) বলেন, ‘আল্লাহর রাসুল (সা.) মোঁচ কাটার ও দাড়ি লম্বা করার আদেশ করেছেন।’ (সহিহ মুসলিম, হাদিস : ১/১২৯)

বিভিন্ন হাদিসে আদেশের শব্দগুলোও বর্ণিত হয়েছে। যেমন- আবদুল্লাহ ইবনে ওমর (রা.) থেকে বর্ণিত এক হাদিসে রাসুল (সা.) বলেন, ‘মুশরিকদের বিরোধিতা করো। দাড়ি বাড়াও ও মোচ কাট।’ (বুখারি, হাদিস : ২/৮৭৫)

ইবনে ওমর (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘মুশরিকদের বিরোধিতা কর এবং মোচ কাট ও দাড়ি পূর্ণ কর।’ (মুসলিম, হাদিস : ১/১২৯)

 ইবনে ওমর (রা.) থেকে বর্ণিত আরেক হাদিসে রাসুল (সা.) বলেন, ‘মোচ উত্তমরূপে কাট এবং দাড়ি লম্বা করো।’ (বুখারি, হাদিস : ২/৮৭৫)

আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে মহানবী (সা.) বলেন, ‘মোচ কাট ও দাড়ি ঝুলিয়ে ঝুলিয়ে দাও, অগ্নিপূজারীদের বিরোধিতা কর।’ (মুসলিম, হাদিস : ১/১২৯)

কতটুকু দাড়ির সীমারেখা?
ইসলামী ফিকাহবিদদের সর্বসম্মতিক্রমে দাড়ি বলা হয়— দুই চোয়ালের দাঁতবিশিষ্ট হাড়ের ওপর গজানো পশম এবং কান ও চোখের মধ্যবর্তী স্থানে গজানো সারিবদ্ধ পশমকে। কোনো কোনো ইসলামী আইনবিদের মতে, ঠোঁটের নিচের অংশে গজানো পশম ও নাকের উভয় দিক সংলগ্ন গালের ওপর গজানো ও থুতনির নিচের নরম অংশে গজানো পশমও দাড়ির অন্তর্ভুক্ত। সুতরাং এসব পশম কাটা বা উপড়ানো অনুচিত। (রাদ্দুল মুহতার : ১/১০০, ৫/৩৭৩, হিন্দিয়া : ৫/৩৫৮)