ঈদের কেনাকাটায় অসহায়দের প্রতি খেয়াল রাখবেন যেভাবে
ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজহা মুসলমানের ধর্মীয় উৎসব। আল্লাহর রাসুল (সা.) এই দিন দুটিকে আনন্দের বলে ঘোষণা করেছেন। ঈদের সময় আনন্দমুখর সময় কাটাতে এবং ভালো খাবার ও পোশাক পরিধানে ইসলাম উৎসাহিত করেছে। তবে ইসলামের দৃষ্টিতে ঈদ নিছক কোনো আনন্দ উৎসব নয়, বরং তা ইবাদতও বটে। তাই ঈদের আনন্দে চাই মুমিনের সংযম ও সংযত আচরণ।
ঈদ উপলক্ষ্যে আমরা সবাই কেনাকাটা করে থাকি। তবে ঈদের নিজেদের কেনাকাটা আনন্দের পাশাপাশি গরীব দুঃখীর প্রতিও খেয়াল রাখা উচিত। ঈদের সময় অপ্রয়োজনীয় খাতে অর্থ ব্যয় না করে তা দিয় সমাজের অসহায় ও দরিদ্র মানুষের মুখে হাসি ফোটানো যেতে পারে। কোরআনে ধনীদের মানবিক কাজে অর্থ ব্যয়ের নির্দেশ প্রদান করে বলা হয়েছে, ‘আত্মীয়-স্বজনকে দেবে তার প্রাপ্য এবং অভাবগ্রস্ত ও মুসাফিরকেও এবং কিছুতেই অপব্যয় কোরো না।’ (সুরা বনি ইসরাঈল, আয়াত : ২৬)
বিজ্ঞাপন
ঈদের সময় সমাজের বিত্তশালীরা চাইলেই হতদরিদ্রের মুখে হাসি ফোটাতে পারে, গরিবের সাদাকালো এই ঈদটাকে করে তুলতে পারে রঙিন। একটুখানি সাহায্যের হাত বাড়ালেই গরীব-দুঃখীর যাপিত জীবন আরো সুন্দর, সুখময় হয়ে ওঠে। হাদিস শরীফে রাসূলুল্লাহ সা. বলেছেন, গোটা সৃষ্টিকুল আল্লাহর পরিবার। অতএব, যে আল্লাহর পরিবারের সঙ্গে সদয় ব্যবহার করে, সে আল্লাহর কাছে সর্বাধিক প্রিয়। -বায়হাকি
অপর হাদিসে রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, মুমিনদের উদাহরণ তাদের পারস্পারিক ভালবাসা, দয়ার্দ্রতা ও সহানুভূতির দিক থেকে একটি মানব দেহের ন্যায় যখন তার একটি অঙ্গ আক্রান্ত হয় তখন তার সমস্ত দেহ ডেকে আনে তাপ ও অনিদ্রা। -সহিহ মুসলিম
বিজ্ঞাপন
গরীব দুঃখীর সঙ্গে ঈদের আনন্দ ভাগ করে নেওয়ার আরেকটি পদ্ধতী হলো সদকাতুল ফিতর আদায় করা। আলেমরা সামর্থ্যবান ব্যক্তিদের জাকাত আদায়েরও পরামর্শ দেন। যেন দাতা রমজানের বরকত লাভ করতে পারে এবং গ্রহীতা ঈদের আনন্দে শরিক হতে পারে।
অথচ বহুজন দুহাত ভরে ঈদের কেনাকাটা করেন; কিন্তু যথাযথভাবে সদকাতুল ফিতর ও জাকাত আদায় করেন না। আবদুল্লাহ ইবনে ওমর (রা.) বলেন, ‘প্রত্যেক দাস, আজাদ, পুরুষ, নারী, প্রাপ্ত বয়স্ক, অপ্রাপ্ত বয়স্ক মুসলিমের ওপর আল্লাহর রাসুল (সা.) সদকাতুল ফিতর হিসেবে খেজুর হোক বা যব হোক এক সা পরিমাণ আদায় করা ফরজ করেছেন এবং লোকজনের ওপর ঈদের সালাতে বের হওয়ার আগেই তা আদায় করার নির্দেশ দিয়েছেন।’ (সহিহ বুখারি, হাদিস : ১৫০৩)
এনটি