প্রতীকী ছবি

বিয়ের পর স্বামীর পক্ষ থেকে স্ত্রীর দেনমোহর আদায়কে আবশ্যক করা হয়েছে। পুরুষের জন্য নারীর এই প্রাপ্য অধিকার আদায়ে গড়িমসির কোনও সুযোগ দেওয়া হয়নি।

দেন-মোহর একেবারেইই আদায় না করলে...

নারীর মোহরকে হালকা করে দেখা বা আদায়ের ইচ্ছা না থাকলে আল্লাহর সামনে জবাবদিহীতা করতে হবে। কানজুলউম্মাল এবং বায়হাকিতে বর্ণিত একটি হাদিসে আল্লাহর রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, যে ব্যক্তি কোনও নারীকে বিয়ে করলো এবং তার মোহর বাকি রাখলো এরপর সে ইচ্ছা করলো মোহর আংশিক বা একেবারেই আদায় করবে না তাহলে সে ব্যভিচারী হয়ে যাবে এবং আল্লাহর সঙ্গে ব্যভিচারী হিসেবে সাক্ষাৎ করবে। (ইসলাহে ইনকিলাব, ২য় খন্ড, পৃষ্ঠা , ১২৭, কানজুল উম্মাল, ৮ম খন্ড, পৃষ্ঠা ২৪৮)

দেন-মোহরও এক প্রকার ঋণ...

এই হাদিসের আরেকটি অংশে বলা হয়েছে, যদি কোনও ব্যক্তি কারো কাছ থেকে কোনও পণ্য কিনে এবং তার মূল্য পরিশোধের ইচ্ছা না রাখে অথবা কারও ওপর কিছু ঋণ আছে কিন্তু সে তা আদায়ের ইচ্ছা না রাখে, তাহলে ওই ব্যক্তি মৃত্যুর সময় ও কেয়ামতের দিন প্রতারক ও চোর হিসেবে চিহ্নিত হবে। 

মোহরও এক প্রকার ঋণ। কেউ যদি তা আদায়ের ইচ্ছা না রাখে তাহলে হাদিসের দ্বিতীয় অংশের বর্ণনা অনুযায়ী সে ব্যক্তিও প্রতারক-চোর হিসেবে বিবেচিত হবে। 

দেন-মোহর ঠিকমতো আদায় না করলে দুই অপরাধ

তাই কোনও ব্যক্তি স্ত্রীর দেনমোহর ঠিকমতো আদায়ের ইচ্ছা না রাখলে তার ওপর দুই অপরাধের দায় এসে পড়বে। প্রথমটি হলো- ব্যভিচার, দ্বিতীয় হলো, প্রতারণা বা চুরি। (ইসলাহে ইনকিলাব, খন্ড,২, পৃষ্ঠা, ১২৭)

সাধ্যের মধ্যে দেন-মোহর

তাই প্রত্যেক মুসলিম পুরুষের উচিত এমন মারাত্মক বিষয় থেকে বেঁচে থাকা আর এজন্য মোহর আদায়ের পুরো ইচ্ছা থাকতে হবে।

অভিজ্ঞ আলেমরা বলেন,  মানুষের সাধ্যের মধ্যে কোনও বিষয় থাকলেই মানুষ তা আদায়ের পুরোপুরি ইচ্ছা করে এবং তা আদায় করতে পারে। তাই সবার উচিত বিয়ের সময় মানুষকে দেখানোর জন্য বড় অংকের মোহর নির্ধারণ না করে নিজের সাধ্যমতো মোহর নির্ধারণ করা। এতে মোহর আদায় করা সহজ হবে এবং বড়ধরনের পাপ থেকে বেঁচে থাকা যাবে। (ইসলাহে ইনকিলাব, খন্ড,২, পৃষ্ঠা, ১২, বর=কনে, ১৫১) 

এছাড়া ইসলামী শরীয়তে সাধ্যের অতিরিক্ত কোনও বিষয় মাথায় চাপাতে নিষেধ করা হয়েছে। রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘কোনও মুমিনের জন্য উচিত নয় নিজেকে অপদস্থ করা। সাহাবায়েকেরাম জিগেস করলেন, মানুষ নিজেকে অপদস্থ করে কীভাবে? তিনি বললেন, সাধ্যাতীত বিপদ নিজের ওপর চাপিয়ে নেয়া’। 

এই হাদিসের মাধ্যমে বুঝা যায়, সাধ্যের অতিরিক্ত মোহর নির্ধারণ না করা এবং তা কম হওয়া কাম্য।(ইসলাহে ইনকিলাব, খন্ড,২, পৃষ্ঠা, ১৩০) 

এনটি