প্রতীকী ছবি

মিথ্যা কথা মানুষকে বড় ধরনের অপরাধে উৎসাহ-প্রশ্রয় দিয়ে থাকে। অপরাধ ছাড়াও হাসি-রসিকতা কিংবা স্বাভাবিক অবস্থা, সবসময় মিথ্যা বলা হারাম। রাসূলুল্লাহর (সা.) যেকোনও পরিস্থিতিতে মিথ্যা বরা থেকে বিরত থাকতে কঠোরভাবে নিষেধ করেছেন। আল্লা হতায়ালা বলেন, মিথ্যা তো তারাই বানায় যারা আল্লাহর নিদর্শনগুলোর ওপর ইমান রাখে না। বস্তুত তারাই মিথ্যাবাদী। (সূরা নাহাল :১০৫)

কোরআনে মিথ্যা বলায় বারণ

আরেক আয়াতে বলা হয়েছে, ‘মিথ্যা বলার কারণে তাদের জন্য রয়েছে মর্মন্তুদ শাস্তি।’ (সুরা : বাকারা, আয়াত : ১০) অন্য আয়াতে বলা হয়েছে, ‘এবং তোমরা মিথ্যা কথা পরিহার করো।’ (সুরা : হজ, আয়াত : ৩০)

হাদিস শরিফে ইরশাদ হয়েছে, ‘তোমরা মিথ্যা পরিহার করো। কেননা মিথ্যা পাপের পথে পরিচালিত করে। আর পাপ মানুষকে জাহান্নামে পৌঁছে দেয়।’ (সুনানে তিরমিজি, হাদিস : ১৯৭১)

হাসি-ঠাট্টার ছলে মিথ্যা

আর হাসিঠাট্টা ও কৌতুকের ছলে বলা মিথ্যাকে হয়তো মিথ্যাই মনে করে না। অথবা অনেকে মনে করে, হাসি-ঠাট্টার সময় বলা মিথ্যা ‘নির্দোষ মিথ্যা’। অথচ ইসলামে মিথ্যার কোনো শ্রেণি নেই। মিথ্যা যে উদ্দেশ্যেই বলা হোক সৎ বা অসৎ এবং সচেতনভাবে বা কৌতুক করে কোনোভাবে তা গ্রহণযোগ্য নয়। আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুল (সা.) বলেন, ‘ইচ্ছা বা কৌতুক কোনোভাবেই মিথ্যা গ্রহণযোগ্য হয় না।’ (সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদিস : ৪৬)

মানুষ হাসানোর জন্য মিথ্যা

আরেক হাদিসে রাসুল (সা.) বলেন, ‘অভিশাপ তাদের জন্য যারা কথা বলে এবং মানুষ হাসানোর জন্য মিথ্যা বলে। তার জন্য অভিশাপ! তার জন্য অভিশাপ!!’ (সুনানে আবি দাউদ, হাদিস : ৪৯৯০)

অন্য হাদিসে রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘আমি তার জান্নাতের নিশ্চয়তা প্রদান করব যে মিথ্যা পরিহার করবে, এমনকি হাসির ছলে বলাটাও।’ (সুনানে আবি দাউদ, হাদিস : ৪৮০০)

এ হাদিসের ব্যাখ্যায় আল্লামা সানআনি (রহ.) বলেন, ‘এ হাদিস প্রমাণ করে, মানুষ হাসানোর জন্য মিথ্যা বলা হারাম। এটি বিশেষ ধারার নিষেধাজ্ঞা। শ্রোতার জন্যও তা শোনা হারাম যদি তারা বুঝতে পারে মিথ্যা বলা হচ্ছে। কেননা তা শোনা মিথ্যারই স্বীকৃতি, বরং তার দায়িত্ব হলো প্রতিবাদ করা এবং আড্ডা পরিহার করা।’ (মুহাম্মদ বিন ইসমাইল আস-সানআনি, সুবুলুস-সালাম : ২/৬৮৩)

এনটি