প্রতীকী ছবি

বিতর নামাজের রাকাত সংখ্যা বেজোড়। এ নিয়ে কারো মতভেদ নেই। তবে রাকাত সংখ্যা নিয়ে বর্ণনায় বৈচিত্র্য রয়েছে। কেউ কেউ বলেছেন, তিন রাকাত। আবার কেউ বলেছেন এক রাকাত। সে ক্ষেত্রে নামাজের ধরন নিয়ে বর্ণনায় পার্থক্য রয়েছে।

হানাফি মাজহাব মোতাবেক বিতর নামাজ তিন রাকাত। এটি অধিক যুক্তিযুক্ত ও দলিলনির্ভর।

আবদুল্লাহ ইবনে আবি কাইস বলেন, আমি আয়েশা (রা.)-এর কাছে জিজ্ঞাসা করলাম যে নবীজি (সা.) বিতরে কত রাকাত পড়তেন? জবাবে তিনি বলেন, চার এবং তিন, ছয় এবং তিন, আট এবং তিন, ১০ এবং তিন। তিনি বিতরে সাত রাকাতের কম এবং ১৩ রাকাতের বেশি পড়তেন না। [সুনানে আবু দাউদ ১/১৯৩, হাদিস : ১৩৫৭ (১৩৬২); তাহাবি শরিফ ১/১৩৯; মুসনাদে আহমদ, হাদিস : ২৫১৫৯)]

এই হাদিসের বর্ণনা মতেও রাসুল (সা.) তাহাজ্জুদ নামাজ কখনো চার রাকাত পড়বেত। কখনো পড়তেন ছয় রাকাত। কখনো আট রাকাকত, আবার কখনো পড়তেন ১০ রাকাত। কিন্তু মূল বিতর সর্বদা তিন রাকাতই পড়তেন।

প্রখ্যাত হাদিসবিশারদ ও ফিকাহবিদ ইমাম ইবনে হাজার আসকালানি (রহ.) লেখেন, আমার জানামতে এটি সংশ্লিষ্ট বিষয়ে সর্বাধিক বিশুদ্ধ বর্ণনা। এ বিষয়ে আয়েশা (রা.) বর্ণিত হাদিসের বর্ণনাকারীদের মধ্যে যে বিভিন্নতা পরিলক্ষিত হয় এর দ্বারা সেসবের মধ্যে সমন্বয় করা সম্ভব। (ফাতহুল বারি : ৩/২৬)

আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) একবার রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর তাহাজ্জুদ ও বিতর নামাজ সচক্ষে জন্য চেষ্টা করেন। তাই তিনি তার খালা উম্মুল মুমিনিন মাইমুনা (রা.)-এর ঘরে অবস্থান করেন। সেদিন রাসুল (সা.)-এর নামাজের যা যা তিনি প্রত্যক্ষ করেছেন, তা বর্ণনা করেছেন। তার ছাত্ররা সে বিবরণ বিভিন্ন শব্দে বর্ণনা করেছেন।

মুহাম্মাদ ইবনে আলী তার পিতা থেকে, তিনি তার পিতা আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণনা করেন যে, রাসুল (সা.) রাতে শয্যা থেকে উঠলেন। এরপর মিসওয়াক করেন, এরপর দুই রাকাত পড়েন, এরপর শুয়ে পড়েন। তারপর আবার শয্যা ত্যাগ করেন, মিসওয়াক করেন, অজু করেন এবং দুই রাকাত পড়েন; এভাবে ছয় রাকাত পূর্ণ করেন। এরপর তিন রাকাত বিতর পড়েন। এরপর দুই রাকাত পড়েন। (সুনানে নাসায়ি : ১/২৪৯, হাদিস : ১৭০৪; মুসনাদে আহমাদ : ১/৩৫০, হাদিস ৩২৭১; ত্বাহাবি শরিফ : ১/২০১-২০২)