প্রতীকী ছবি

খুব নিঃশব্দে আমাদের মাঝে হাজির হয়েছে আরো একটি নতুন বছর—১৪৪৫ হিজরি সন।

নিঃশব্দে বললাম, কারণ, কোনো এক অদ্ভুত কারণে অন্যান্য নববর্ষের মতো হিজরি নববর্ষ এদেশের মিডিয়ার মনোযোগ পায় না। অথচ এই পঞ্জিকার সাথে এদেশের কোটি কোটি মুসলমানের ছোট-বড় ইবাদত ও উৎসবের তারিখ জড়িয়ে আছে। 

তারপরও সচেতন মুসলিম সমাজ তাৎপর্যপূর্ণ এই পঞ্জিকার খবর রাখেন, এর ভালোবাসা হৃদয়ে ধারণ করেন, আলহামদুলিল্লাহ। 

হিজরি নববর্ষ শুরু হলেই আমাদের মনে পড়ে রাসুল সা.-এর হিজরতের স্মৃতি। রাসুল সা. যখন মক্কা থেকে মদিনায় হিজরত করেছিলেন, সঙ্গে ছিলেন একজন মুসলিম। আর যখন তিনি মদিনা থেকে মক্কায় ফিরে আসেন, তখন তার সঙ্গী দশ হাজার মুসলমান। 

এ থেকে শিক্ষা পাই—ছেড়ে যাওয়া মানেই হেরে যাওয়া নয়। কিছু কিছু হারের মাঝে লুকিয়ে থাকে বিজয়ের আলোকচ্ছটা। 

হিজরতের শাব্দিক অর্থ ত্যাগ করা। নতুন বছর এসেছে। হিজরি নতুন বছরে আমাদের প্রতীজ্ঞা হোক—অন্তত পাঁচটি বদঅভ্যাস অথবা গুনাহকে আজীবনের জন্য ত্যাগ করব। তবেই নতুন বছরের আগমন কিছুটা হলেও সার্থক হবে। 

হিজরি পঞ্জিকার প্রথম মাস মুহাররম। এটি কুরআন-বর্ণিত সম্মানিত চারটি মাসেরও একটি। হাদীসে মুহাররমকে আল্লাহর মাস হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে এবং রমাদানের পরে এই মাসের সিয়ামকে সবচেয়ে বেশি ফজীলতপূর্ণ আখ্যা দেয়া হয়েছে। তাই, এই মাসে অধিক পরিমাণে নফল সিয়ামের প্রতি মনোযোগী হওয়া উচিত। 

আল্লাহ আমাদের নতুন বছরকে বরকতময় করুন, সকল অনিষ্টকে দূর করে দিন। উত্তম গুণাবলি অর্জন এবং দোষত্রুটি বর্জনের ভেতর দিয়ে শুরু হোক আমাদের নতুন বছরের অভিযাত্রা।

রাসুলের সা. যুগে মুসলমানদের নির্ধারিত কোনো পঞ্জিকা ছিল না। ওমর রা. এর যুগে রাষ্ট্রের সীমানা বৃদ্ধির সাথে সাথে প্রশাসনিক কাজের তৎপরতা বেড়ে যায়। তখন মুসলমানদের জন্য প্রয়োজন হয় আলাদা ক্যালেন্ডারের।

আলী রা. এর পরামর্শে রাসুলের সা. হিজরতের বছরকে প্রথম বর্ষ ধরে নতুন পঞ্জিকার রূপ দেয়া হয়। হিজরি পঞ্জিকার সাথে তাই জড়িয়ে আছে হিজরতের স্মৃতি ও শিক্ষা।