কুমিল্লায় গাজী রবিউল হাসান নামের এক প্রবাসফেরত যুবকের গায়ে হলুদ অনুষ্ঠান উদযাপন করা হয়েছে কোরআন তিলাওয়াতের মাধ্যমে। এ নিয়ে রীতিমতো হইচই পড়ে গেছে পুরো এলাকায়। গান বাজনার পরিবর্তে কোরআন শরিফ তিলাওয়াতের খবরে ওই গায়ে হলুদ অনুষ্ঠান দেখতে ভিড় করেছেন অনেকেই। 

বৃহস্পতিবার (৩১ আগস্ট) রাতে জেলার চৌদ্দগ্রাম পৌরসভার ২ নম্বর ওয়ার্ডের কমলপুর গ্রামে ব্যতিক্রমী এ গায়ে হলুদ অনুষ্ঠিত হয়। প্রবাসী গাজী রবিউল হাসান কমলপুর গ্রামের গাজী বাড়ির গাজী মো. দেলোয়ার হোসেনের একমাত্র ছেলে। 

স্থানীয়রা জানান, গত বৃহস্পতিবার রাতে রবিউল হাসানের গায়ে হলুদের অনুষ্ঠান ছিল। অনুষ্ঠানকে ঘিরে বাহারি ফুলের আবহে দৃষ্টিনন্দন হলুদ মঞ্চ তৈরি করা হয়। গান বাজনা আর নৃত্যকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে গায়ে হলুদ অনুষ্ঠানটিকে স্মরণীয় করে রাখতে কোরআন তিলাওয়াতের আয়োজন করা হয়েছে। কোরআন তিলাওয়াতের জন্য পাশের মাদরাসা থেকে ১০ জন কোরআনের হাফেজকে নিয়ে আসেন বরের বাবা গাজী দেলোয়ার হোসেন। এ খবর ছড়িয়ে পড়লে বয়োজ্যেষ্ঠরা ভিড় করেন গায়ে হলুদ অনুষ্ঠান দেখতে।

মো. শাহাবুদ্দিন নামের এক বয়োজ্যেষ্ঠ জানান, প্রথমবারের মতো আমাদের এলাকায় এমন ঘটনা দেখলাম। প্রায় বিয়েতে সারারাত ডিজে গান বাজিয়ে বেপরোয়া নাচ-গান হয়, কিন্তু রবিউলের গায়ে হলুদে কোরআন তিলাওয়াত হলো। এটা খুবই প্রশংসনীয় উদ্যোগ। ভবিষ্যৎ প্রজন্ম অবশ্যই মনে রাখবে বিষয়টি। দেলোয়ার গাজীকে ধন্যবাদ। 

বরের বাবা গাজী দেলোয়ার হোসেন বলেন, রবিউল হাসান আমার একমাত্র ছেলে। আমরা সবাই ধর্মপ্রাণ মুসলিম। আমার ছেলে আরব দেশে থাকে। তাই সব দিক বিবেচনা করে একমাত্র ছেলের গায়ে হলুদে কোনও গুনাহের কাজ হোক তা আমি চাইনি। এর বিপরীতে যেন সওয়াব পাওয়া যায় তাই হাফেজদের নিয়ে আসি। ছেলের গায়ে হলুদে কোরআন তিলাওয়াতের আয়োজন করে প্রশংসা পাচ্ছি সবার। 

চৌদ্দগ্রাম পৌরসভার ২ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ও প্যানেল মেয়র সাইফুল ইসলাম পাটোয়ারী বলেন, গান বাজনার বিপরীতে কোরআন তিলাওয়াতের মাধ্যমেও একটি গায়ে হলুদ অনুষ্ঠান উদযাপন করা যায়, ২ নম্বর ওয়ার্ডের গাজী দেলোয়ার হোসেন তার দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেন। বিয়ের অনুষ্ঠানে ধর্মীয় সংস্কৃতির আবহ তৈরি করায় আয়োজকদের ধন্যবাদ জানাচ্ছি।

আরিফ আজগর/এনটি