প্রতীকী ছবি

মৃত্যু অমোঘ-অনিবার্য সত্য। যে কোনো সময় মৃত্যু আসতে পারে। কারো মৃত্যু হলে তার জানাজা ও দাফন দেওয়া জীবিতদের উপর ফরজে কিফায়া। কীভাবে মৃতকে দাফন ও কবরস্থ করতে হয়— তার সংক্ষিপ্ত বিবরণ নিম্নে উল্লেখ্য।

একটি কবরে একটি লাশই দাফন করা উচিত। অত্যধিক প্রয়োজনে ও পরিস্থিতি বিবেচনায় এক কবরে একাধিক লাশ দাফনের অনুমতি রয়েছে। সে ক্ষেত্রে লাশগুলো পাশাপাশি রেখে দাফন করতে হয়। একটির ওপর আরেকটি রাখা যায় না।

একাধিক লাশ এক কবরে হলে
এক কবরে একাধিক পুরুষের লাশ দাফন করলে, কিবলার দিকে প্রথমে উত্তম ব্যক্তিকে রাখতে হয়। এরপর ধারাবাহিকভাবে অন্যদের রাখবে।

মৃতরা যদি পুরুষ-নারী কিংবা বাচ্চা হয় এবং তাদের এক কবরে দাফন করা হয়- তাহলে কিবলার দিকে প্রথমে পুরুষ রাখবে। এরপর ধারাবাহিকভাবে শিশু ও নারীদের রাখতে হবে।

প্রতি দুইটি লাশের মাঝে মাটি দিয়ে আড়াল তৈরি করতে হয়। কফিনে দাফন করা সুন্নত পরিপন্থী। তবে একান্ত প্রয়োজনে সেভাবে দাফন করলে- ভেতরে চারদিকে মাটি ছিটিয়ে দিতে হয়। (ফাতাওয়া হিন্দিয়া : ১/১৬৬, ২২৭)

যেভাবে কবরে রাখতে হয়
কবরের দৈর্ঘ্য মৃতের উচ্চতার সমান করে করতে হয়। গভীরতা মৃতের অর্ধেক আর প্রস্থ হতে হয় দুই হাত। মৃতকে কবরে নামানোর আগে কবরের কিবলার দিকে (পশ্চিম পাশে) রাখতে হয়। আর মাথা উত্তর দিকে ও পা দক্ষিণ দিকে রাখতে হয়। কবরেও ঠিক একই নিয়ম।

লাশ কবরে নামানোর সময় ‘বিসমিল্লাহি আলা মিল্লাতি রাসুলিল্লাহ’ পড়া মুস্তাহাব। মৃতকে ডান কাত করে কিবলামুখী করে কবরে রাখা সুন্নত। শুধু চেহারা কিবলামুখী করে দেওয়া জায়েজ হলেও সুন্নতের বিপরিত। (ফাতাওয়া হাক্কানিয়া : ৩/৪৪৬; মারাকিল ফালাহ : ২২০)

কবরে মাটি দেওয়ার নিয়ম
মাথার দিক থেকে কবর ভরাট করা মুস্তাহাব। দুই হাতে কবরে মাটি-বালি রাখা উত্তম। প্রথমবার মাটি দেওয়ার সময় ‘মিনহা খালাকনাকুম’ বলতে হয়। দ্বিতীয়বার ‘ওয়া ফিহা নুঈদুকুম’ বলতে হয়। আর তৃতীয়বার বলতে হয়— ‘ওয়া মিনহা নুখরিজুকুম তারাতান উখরা’।

পায়ের চাপে কবরের মাটি ঠাসিয়ে দেওয়া মাকরুহ বা অপছন্দনীয়। দাফনকার্য শেষে কিছুক্ষণ কবরের পাশে থেকে মৃতের জন্য দোয়া করা মুস্তাহাব। মাটি দেওয়া শেষে কবরের ওপর পানি ছিটানো মুস্তাহাব। (রদ্দুল মুহতার : ৩/১৪৩, ১৫৪)

শোক পালনের সুন্নত পদ্ধতি
মৃতের জন্য শোক পালনে বিভিন্ন সুন্নত রয়েছে। তন্মধ্যে দাফনের পরে বা আগে মৃত ব্যক্তির পরিবারের লোকদের কাছে গিয়ে তাদের সান্ত্বনা দেওয়া। ধৈর্য ধারণের প্রতি উৎসাহিত করা এবং তার ও তাদের জন্য দোয়া করা ইত্যাদি অন্যতম।

আর আয়োজন করে নীরবতা পালন করা বা কবরে ফুল দেওয়া ভিন্ন ধর্মাবলম্বীদের সংস্কৃতি। (তিরমিজি : ১/২০৫; ফাতাওয়া রাহিমিয়া : ৭/৮৩)