বরগুনায় ব্যক্তি উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত আব্দুল্লাহ ইবনে উম্মে মাকতুম (রা.) নামের একটি দৃষ্টি প্রতিবন্ধী মাদ্রাসায় কোরআনসহ বাংলা, ইংরেজি শিখছেন ৮ জন দৃষ্টি প্রতিবন্ধী ছেলে ও মেয়ে। বিভিন্ন মানুষের থেকে দানের টাকা সংগ্রহ করে মাদ্রাসাটির শিক্ষার্থীদের ফ্রি শিক্ষা কার্যক্রম চলছে। হাফেজ মাহমুদুর রহমান মিরাজের উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত এ মাদ্রাসায় তিনি ও তার স্ত্রী শিক্ষকতা করছেন। 

মাদ্রাসাটি ঘুরে জানা যায়, বরগুনা পৌর শহরের কলেজ রোড এলাকায় একটি ভাড়া বাসা নিয়ে হাফেজ মাহমুদুর রহমান মিরাজ চার বছর ধরে অসহায় দরিদ্র দৃষ্টি প্রতিবন্ধীদের ফ্রি কোরআন শেখাচ্ছেন। তিনি নিজেও একজন কোরআনের হাফেজ ও জন্ম থেকে দৃষ্টি প্রতিবন্ধী।

শুরুতে মাত্র দু’জন শিক্ষার্থী নিয়ে মাদ্রাসার কার্যক্রম শুরু হলেও বর্তমানে ছেলে ও মেয়ে মিলিয়ে শিক্ষার্থীর সংখ্যা ৮ জন। মানুষের দানের টাকায় শিক্ষার্থীদের বই, খাতা, থাকা খাওয়াসহ সব ব্যবস্থা গ্রহণ করছেন মাহমুদুর রহমান মিরাজ। মেয়ে শিক্ষার্থীদের শিক্ষা দিচ্ছেন তার স্ত্রী হাফেজা লামিয়া মাহমুদ। এছাড়াও বাংলা ও ইংরেজি শেখাচ্ছেন দৃষ্টি প্রতিবন্ধী সৌরভ দাস ও ইমরান হোসেন নামের দুজন শিক্ষক।

 

আরাফাত হোসাইন নামে মাদ্রাসার এক শিক্ষার্থী বলেন, ব্রেইল পদ্ধতিতে বরগুনায় আর কোনো মাদ্রাসা না থাকায় এখানে পড়তে পেরে আমরা অনেক খুশি। মাদ্রাসার প্রাথমিক দিকে ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থী মো. রবিউল ইসলাম বলেন, হাতে ধরে ধরে এখন পর্যন্ত ২২ পাড়া কোরআন মুখস্ত  করেছি, পাশাপশি এখান থেকে বাংলা,ইংরেজি শেখার চেষ্টা করছি। আব্দুল্লাহ নামের আরেক শিক্ষার্থী বলেন, বরগুনায় দৃষ্টি প্রতিবন্ধীদের জন্য মাত্র একটি মাদরাসা রয়েছে। আমরা এখানে মানুষের দানের টাকায় পড়াশোনা করছি। সরকারিভাবে সহযোগিতা পেলে আমরা আরও ভালোভাবে লেখাপড়ার সুযোগ পাব।

মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক হাফেজ মাহমুদুর রহমান মিরাজ বলেন, আমার মায়ের অনুপ্রেরণায় বরগুনার অসহায় দরিদ্র দৃষ্টি প্রতিবন্ধীদের ফ্রি কোরআন শিক্ষার জন্য মাদ্রাসাটি তৈরি করি। শিক্ষার্থীদের থেকে কোনো ধরনের ফি নেওয়া হয় না। আর্থিক সচ্ছলতা না থাকায়, মানুষের দানের টাকায় এ শিক্ষা কার্যক্রম চালাচ্ছি। তিনি আরও বলেন, সমাজের সচেতন কয়েকজনকে নিয়ে একটি পরিচালনা কমিটির গঠন করেছি, তাদের পরামর্শে মাদ্রাসার শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করছি। তবে সরকারিভাবে সহযোগিতা পেলে মাদ্রাসার শিক্ষা কার্যক্রম আরও ভালোভাবে পরিচালনা করা সম্ভব হবে এবং বরগুনার আরও অনেক দৃষ্টি প্রতিবন্ধী এখানে পড়ার সুযোগ পাবে।

মো. আব্দুল আলীম/এনটি