প্রতিদিন ফরজ নামাজের আগে-পরে ১২ রাকাত সুন্নত নামাজ রয়েছে। সেগুলো হলো- জোহরের আগে চার রাকাত। পরে দুই রাকাত। মাগরিবের পরে দুই রাকাত। এশার পরে দুই রাকাত। ফজরের আগে দুই রাকাত।

এ সম্পর্কে এক হাদিসে উম্মে হাবিবা রাদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহা বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, ‘যে ব্যক্তি দিনে-রাতে ১২ রাকাত নামাজ পড়ে তার জন্য জান্নাতে একটি বাড়ি বানানো হয়। জোহরের আগে চার রাকাত। পরে দুই রাকাত। মাগরিবের পরে দুই রাকাত। এশার পরে দুই রাকাত। ফজরের আগে দুই রাকাত।’ (তিরমিজি, হাদিস, ৬৩৬২)

এ ধরনের সুন্নত নামাজগুলোর বিধান হলো, এসব সুন্নত কোনও কারণ ছাড়া নিয়মিত ছেড়ে দেওয়া গুনাহ, তবে হঠাৎ বিশেষ প্রয়োজনে ছাড়তে পারবে। কারণ ছাড়া এমন সুন্নত ছেড়ে দেওয়া ব্যক্তিকে তিরস্কার করা হবে, তবে তাকে ফাসিক বা কাফির বলা যাবে না। (আত-তাআরিফাতুল ফিক্বহিয়্যাহ : ৩২৮, আল-মুজিজ ফি উসুলিল ফিকহ : ৪৩৯-৪০)। সুন্নতে মুয়াক্কাদা ওয়াজিবের মতোই।

 

এই ১২ রাকাত সুন্নতে মুয়াক্কাদার মধ্যে ফজরের আগে দুই রাকাত এবং জোহরের আগে চার সুন্নত নামাজ রয়েছে। এই সুন্নতগুলো ফজর অথবা জোহরের নামাজের সময় শুরু হওয়ার পর থেকেই পড়া যায়। তাই ফজর অথবা জোহরের ওয়াক্ত (সময়) হওয়ার পর আজান না দেওয়া হলেও এই সু্ন্নত নামাজগুলো আদায় করা যাবে।

অনেকে মসজিদে এসেও শুধু এই মনে করে বসে থাকেন যে, এখনো তো আজান হয়নি, নামাজ কীভাবে পড়ব? অথচ নামাজের ওয়াক্ত হওয়ার পর আজান না হলেও সুন্নত পড়তে কোনো অসুবিধা নেই।

তাছাড়া নির্দিষ্ট কয়েকটি সময় ছাড়া অন্য সব সময় নফল নামাজ পড়া যায়। সুতরাং মসজিদে প্রবেশের পর হাদিসের নির্দেশনা অনুযায়ী বসার আগে দুই রাকাত (তাহিয়্যাতুল মসজিদ) পড়ে নেওয়া উচিত বা সরাসরি সুন্নত নামাজ পড়ে নেওয়া উচিত তাহলে তা তাহিয়্যাতুল মসজিদের স্থলাভিষিক্ত হয়ে যাবে।  

মোটকথা ওয়াক্ত হয়ে যাওয়ার পর শুধু আজান হয়নি-এ অজুহাতে নফল কিংবা সুন্নত পড়া থেকে বিরত থাকা ঠিক নয়। 

আজান দেওয়া হয় মূলত মানুষ যেন জামাতের সাথে ফরজ নামাজ পড়তে পারে সে কারণে। ব্যস্ততার কারণে যেন মানুষ নামাজের কথা ভুলে না যায়। তাই নামাজের কথা স্মরণ করিয়ে দিতে আজান দেওয়া হয়। আর ফরজ ছাড়া অন্যান্য নামাজের জন্য আজানের প্রচলন করা হয়নি। কাজেই ওয়াক্ত হওয়ার পর আজানের আগে ওই ওয়াক্তের সুন্নত নামাজ পড়া যাবে। (বাদায়েউস সানায়ে ১/৩৭৬; হিন্দিয়া ১/৫৩; আল বাহরুর রায়েক ১/৪৪৪)

এনটি