আজান ইসলামের একটি গুরুত্বপূর্ণ নির্দশন। এর সঙ্গে জরিয়ে আছে ইসলামের অন্যতম বিধান নামাজ। আজানই মুসলমানদের নামাজের কথা মনে করিয়ে দেন। জানিয়ে দেয় মহান রবের সামনে দাঁড়িয়ে একনিষ্ঠ চিত্তে তাকে স্মরণের সময় হয়েছে। সব কাজ রেখে মসজিদ পানে চলার আহ্বান আজান। 

নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মদীনায় হিজরতের পর আজানের প্রচলন হয়। আজানের ফজিলত সম্পর্কে হাদিসে এসেছে, আবদুল্লাহ ইবনে ইউসুফ (রহ.) আবদুল্লাহ ইবনে আবদুর রহমান আনসারী মাযিনী (রহ.) থেকে বর্ণনা করেন যে, আবূ সাঈদ খুদরী (রা.) তাকে বললেন, আমি দেখছি তুমি বকরি চরানো এবং বন-জঙ্গলকে ভালোবাস। তাই তুমি যখন বকরি চরাতে থাকো বা বন-জঙ্গলে থাকো তখন উচ্চকন্ঠে আজান দাও। কেননা, জিন, ইনসান বা যেকোনো বস্তুই যতদূর পর্যন্ত মুয়াজ্জিনের আওয়াজ শুনবে, সে কিয়ামতের দিন তার পক্ষে স্বাক্ষ্য দিবে। আবূ সাঈদ (রা.) বলেন, একথা আমি রাসূলুল্লাহ (সা.) এর কাছে শুনেছি। -(বুখারী, ৫৮২)

আজান দেওয়ার সময় কোনো মুয়াজ্জিন যদি আজানে ভুল করেন তাহলে আজান চলা অবস্থায় স্মরণ হলে যে শব্দে ভুল হয়েছে সে শব্দ পুনরায় বলে আজানের বাকি শব্দগুলো বলতে হবে। আর যদি আজান শেষ হওয়ার পর কারো সাথে কথা বলার আগে স্মরণ হয় তাহলে যে শব্দে ভুল হয়েছে সে শব্দ থেকে শেষ পর্যন্ত পুনরায় আজান দিতে হবে।

কিন্তু যদি আজান শেষ করার পর কথা বলে ফেলে তাহলে পুরো আজান পুনরায় দিতে হবে। তবে নামাজা শুদ্ধ হওয়ার জন্য আজান জরুরি নয়। বরং আজান ছাড়াও নামাজ হয়ে যায়, তবে এমন করাটা মাকরুহ। হাদিস শরিফে এসেছে, আসওয়াদ ও আলকামা (রহ.) থেকে বর্ণিত তারা বলেন-

أَتَيْنَا عَبْدَ اللهِ بْنَ مَسْعُودٍ فِي دَارِه، فَقَالَ: أَصَلّى هؤُلَاءِ خَلْفَكُمْ؟ فَقُلنَا: لَا، قَالَ: فَقُومُوا فَصَلّوا، فَلَمْ يَأمُرْنَا بِأَذَانٍ وَلَا إِقَامَةٍ

আমরা হজরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ রাদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুর ঘরে এলাম। তিনি জিজ্ঞেস করলেন, তোমাদের পেছনের লোকেরা কি নামাজ পড়েছে? আমরা বললাম, না। তিনি বললেন, (তাহলে) তোমরা দাঁড়াও, নামাজ পড়। তখন তিনি আমাদের আজান ও ইকামতের নির্দেশ দেননি।’ (সহিহ মুসলিম, হাদিস, ৫৩৪, দুররুল মুখতার, ২/৫৬, ফতোয়ায়ে হিন্দিয়া, ১/৫৪)