প্রতীকী ছবি

পবিত্র কোরআন আল্লাহ তায়ালার কালাম। আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কোরআন মানব জাতির হেদায়েতের জন্য অবতীর্ণ করেছেন। মক্কার হেরা গুহায় কোরআনের প্রথম আয়াত ‘ইকরা’ অবতীর্ণ হওয়ার পর থেকে সবার জন্য কোরআনের বিধান মানা অপরিহার্য। এর বাইরে অন্য কিছু অবলম্বন বা ভাবার কোনও সুযোগ নেই। আল্লাহ তায়ালা বলেছেন, ‘এটা সে কিতাব; যাতে কোন সন্দেহ নেই, মুত্তাকীদের জন্য হেদায়েত। (সূরা বাকারা, (২). আয়াত, ২)

আল্লাহর কালাম পবিত্র কোরআন সর্বাধিক পবিত্র ও সর্বোচ্চ মর্যাদাসম্পন্ন। তাই কোরআনের পবিত্রতা ও মর্যাদা অক্ষুন্ন রাখার জন্য দৈহিক পবিত্রতার শর্তারোপ করা হয়েছে। যেন কোরআন স্পর্শ করার ও তা পাঠ করার ক্ষেত্রে কোনো অসম্মান প্রকাশ না পায়। বিখ্যাত চার মাজহাবের ইমামদের ফতোয়া এটাই। নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাহাবিগণও এ ফতোয়া দিয়েছেন।

ইমাম নববি ও ইমাম তাইমিয়া (রহ.) বলেন, ‘পবিত্র হওয়া ছাড়া কোরআন স্পর্শ করা নিষিদ্ধ— এই বিষয়ে মতামত দিয়েছেন হজরত আলী, সাদ বিন আবি ওয়াক্কাস, সালমান, আবদুল্লাহ ইবনে উমর (রা.) প্রমুখ সাহাবি। অন্য সাহাবিদের এর বিপরীত কোনো অভিমত নেই।’ (শরহুল মুহাজ্জাব : ২/৮০; মাজমুউল ফাতাওয়া : ২১/২৬৬)

অনুরূপভাবে এ বিষয়ে রয়েছে একাধিক বিশুদ্ধ হাদিস। আবদুল্লাহ বিন আবু বকর বিন হাযম বলেন, রাসুল (সা.) আমর বিন হাযম এর কাছে এই মর্মে চিঠি লিখেছিলেন যে, পবিত্র হওয়া ছাড়া কোরআন কেউ স্পর্শ করবে না।’ (মুয়াত্তা মালিক, হাদিস, ৬৮০; কানজুল উম্মাল, হাদিস, ২৮৩০; মারেফাতুস সুনান ওয়াল আসার, হাদিস, ২০৯, আল-মুজামুল কাবির, হাদিস, ১৩২১৭, আল মুজামুস সাগির, হাদিস, ১১৬২, সুনানে দারেমি, হাদিস, ২২৬৬)

আবদুল্লাহ বিন উমর রাদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু থেকে বর্ণিত হাদিসে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘পবিত্র ব্যক্তি ছাড়া কেউ কুরআন স্পর্শ করবে না।’ (মাজমাউজ জাওয়ায়েদ : ৫১২)

কোরআন তিলাওয়াত বা স্পর্শ করার ক্ষেত্রে পবিত্রতার বিধান বালেগ এবং প্রাপ্ত বয়স্কদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। কোনো অপ্রাপ্ত বয়স্ক শিশুর ক্ষেত্রে বিধান আরোপ হয় না। এবং তার কেননা, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,

رفع القلم عن ثلاثة: عن الصغير حتى يبلغ، وعن النائم حتى يستيقظ، وعن المجنون حتى يفيق

তিন ব্যক্তির উপর থেকে (দায়িত্বের) কলম উঠিয়ে নেয়া  হয়েছে, (১) ঘুমন্ত ব্যক্তি জাগ্রত হওয়া পর্যন্ত (২) শিশু বালেগ হওয়া পর্যন্ত এবং (৩) পাগল বিবেকবুদ্ধি ফিরে পাওয়া পর্যন্ত। (আবু দাউদ, হাদিস, ৪৪০৩ তিরমিজি,  হাদিস, ১৪২৩ নাসাঈ, হাদিস, ৩৪৩২, ইবনে মাজাহ, হাদিস, ২০৪১)

তাই কোনো নাবালেগ বা অপ্রাপ্ত বয়স্ক শিশু অজু ছাড়া কোরআন স্পর্শ করলে তার কোন গুনাহ হবে না। তবে বড়দের উচিত, শিশুকে এই শিক্ষা দেয়া যে, কোরআন অজু ছাড়া ধরা যায় না।