দিন রাতের পরিতর্বতন আল্লাহ তায়ালার প্রকৃতি বিধান। আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কোরআনে বলেছেন,  

وَ هُوَ الَّذِیۡ خَلَقَ الَّیۡلَ وَ النَّهَارَ وَ الشَّمۡسَ وَ الۡقَمَرَ ؕ کُلٌّ فِیۡ فَلَکٍ یَّسۡبَحُوۡنَ

 

‘তিনিই (আল্লাহ) যিনি সৃষ্টি করেছেন রাত, দিন, চন্দ্র ও সূর্য। এগুলোর প্রতিটিই নিজ নিজ কক্ষপথে নিজস্ব গতিতে পরিভ্রমণে নিয়োজিত।’ (সূরা আম্বিয়া, আয়াত, ৩৩)

রাত-দিনের পরিবর্তন মানুষের জীবনে নতুন মাস নতুন বছর নিয়ে আসে। এই নতুন বছর বা সময়ের মাঝে আলাদা করে কল্যাণ-বা অকল্যাণের কিছু নেই। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তায়ালা বলেছেন,

আল্লাহ তায়ালা বলেন,

فَإِذَا جَاءَتْهُمُ الْحَسَنَةُ قَالُوا لَنَا هَذِهِ وَإِنْ تُصِبْهُمْ سَيِّئَةٌ يَطَّيَّرُوا بِمُوسَى وَمَنْ مَعَهُ أَلَا إِنَّمَا طَائِرُهُمْ عِنْدَ اللَّهِ وَلَكِنَّ أَكْثَرَهُمْ لَا يَعْلَمُونَ

 

‘এরপর যখন তাদের শুভদিন ফিরে আসতো, তখন তারা বলতো এটা তো আমাদের প্রাপ্য। আর যদি তাদের কাছে অকল্যাণ এসে উপস্থিত হতো, তখন তা মূসা এবং তার সঙ্গীদের অশুভ কারণরূপে মনে করতো। শুনে রাখো! তাদের অকল্যাণ তো আল্লাহ্‌র কাছেই। কিন্তু তাদের অধিকাংশ লোকই অজ্ঞ’। (সূরা আরাফ, আয়াত, ১৩১)

তাই বছরের প্রথম দিন বা মুহুর্তকে বিশেষভাবে বরণ করার কোনো গুরুত্ব নেই ইসলামে। বর্তমানে বর্ষবরণের নামে যা কিছু করা হয়, এসব মানুষের অকল্যাণই নিয়ে আসে। ইসলাম সমর্থন করে না এমন কাজের কারণে পরকালের শাস্তি তো রয়েছেই, একইসঙ্গে পার্থিব জীবনে সম্পদের অপচয়, পরিবেশের ক্ষতিও হচ্ছে ব্যাপক। 

বছরের শুরুতে আল্লাহর রহমত চেয়ে যে দোয়া করবেন

নিজের দুই জীবনের ক্ষতি না করে বছরের শুরুতে আল্লাহর কাছে রহমত কামনা করা যেতে পারে। হাদিসে বর্ণিত দোয়া পড়া যেতে পারে। 

আবদুল্লাহ ইবনে হিশাম বলেন- আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাহাবিরা নতুন বছরের আগমনে কিংবা নতুন মাসের শুরুতে এই দোয়া পড়তে অভ্যস্ত ছিলেন। দোয়াটি হলো-

اللَّهُمَّ أَدْخِلْهُ عَلَيْنَا بِالْأَمْنِ، وَالْإِيمَانِ، وَالسَّلَامَةِ، وَالْإِسْلَامِ، وَرِضْوَانٍ مِنَ الرَّحْمَنِ، وَجَوَار مِنَ الشَّيْطَانِ

 

উচ্চারণ : আল্লাহুম্মা আদখিলহু আলাইনা বিল-আমনি, ওয়াল ইমানি, ওয়াস সালামাতি, ওয়াল ইসলামি, ওয়া রিদওয়ানিম মিনার রাহমানি, ওয়া ঝাওয়ারিম মিনাশ শায়ত্বানি। 

অর্থ : হে আল্লাহ! আমাদের ঈমান ও ইসলামকে নিরাপদ করুন। আমাদের সুরক্ষা দিন। দয়াময় রহমানের কল্যাণ দান করুন। শয়তানের কুমন্ত্রণার মোকাবেলায় আমাদের সাহায্য করুন। (আল-মুজাম আল-আওসাত, হাদিস : ০৬/২২১)

আরেকটি বর্ণনায় কিছুটা ভিন্নতায় এসেছে। সেখানে দোয়ার শেষের দুই অংশ আগে-পরে বর্ণিত হয়েছে। তখন দোয়াটি এভাবে হয়—

 

اللَّهُمَّ أَدْخِلْهُ عَلَيْنَا بِالأَمْنِ ، وَالإِيمَانِ ، وَالسَّلامَةِ ، وَالإِسْلامِ ، وَجَوَار مِنَ الشَّيْطَانِ، وَرِضْوَانٍ مِنَ الرَّحْمَنِ

 

উচ্চারণ : আল্লাহুম্মা আদখিলহু আলাইনা বিল-আমনি, ওয়াল ইমানি, ওয়াস সালামাতি, ওয়াল ইসলামি, ওয়া ঝাওয়ারিম মিনাশ শায়ত্বানি, ওয়া রিদওয়ানিম মিনার রাহমানি।

অর্থ : হে আল্লাহ! আমাদের ঈমান ও ইসলামকে নিরাপদ করুন। আমাদের সুরক্ষা দিন। শয়তানের কুমন্ত্রণার মোকাবেলায় আমাদের সাহায্য করুন। দয়াময় রহমানের কল্যাণ দান করুন। (মু’জামুস সাহাবাহ : ০৩/৫৪৩; আল-ইসাবাহ : ০৬/৪০৭-৪০৮)

বছরের প্রথম প্রহরে উন্মাদনায় না মেতে আল্লাহর কাছে হাদিসে বর্ণিত দোয়াগুলো পড়া উচিত, এতে আল্লাহ তায়ালা ‍দুনিয়া আখেরাতে কল্যাণ দান করবেন ইনশাআল্লাহ।

এনটি