প্রতীকী ছবি

জান্নাত মানুষের আদি বাড়ি। পৃথিবীতে জান্নাত থেকেই মানুষের আগমন। নির্ধারিত সময় শেষে আবার জান্নাতেই ফিরে যাবে মানুষ। পৃথিবীতে মানুষ প্রেরণের উদ্দেশ্য তাদের পরীক্ষা করা। যারা পৃথিবীতে আগমনের উদ্দেশ্য মনে রেখে নেক আমল করবে, পাপাচার, অশ্লীলতা থেকে নিজেকে বিরত রাখবে, তাদের জন্য রয়েছে চিরস্থায়ী জান্নাত। 

পবিত্র কোরআনে বর্ণিত হয়েছে, এগুলো আল্লাহর নির্ধারিত সীমা। যে ব্যক্তি আল্লাহর ও তার রাসুলের আদেশমতো চলে, তিনি তাকে জান্নাতসমূহে প্রবেশ করাবেন, যেগুলোর তলদেশ দিয়ে নদী প্রবাহিত হবে। তারা সেখানে চিরকাল থাকবে। এটা বিরাট সাফল্য...।’ (সূরা নিসা, আয়াত, ১৩-১৪)

পৃথিবীর জীবন, কবর, কেয়ামত, পুলসিরাত পার হয়ে একজন মুমিন যখন জান্নাতে প্রবেশ করবে, সেখানে সে তার নিজের জন্য বিশাল রাজ্য ও রাজত্ব দেখতে পাবে। পবিত্র কোরআনে এসেছে, ‘তুমি যখন সেখানে দেখবে, দেখবে ভোগ-বিলাসের উপকরণ এবং বিশাল রাজ্য।’ (সূরা দাহর, আয়াত, ২০)

জান্নাতে অসংখ্য নেয়ামতের মাঝে ডুবে থাকবেন জান্নাতিরা। সেখানে কোনো দুঃখ থাকবে না তাদের। যা ইচ্ছা তাই খেতে পারবেন। জান্নাতে প্রবেশের পর জান্নাতিদের সর্বপ্রথম মাছের মাছের কলিজা দিয়ে নাশতা দেওয়া হবে। 

হজরত সাওবান রাদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি একবার রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে দাঁড়িয়ে ছিলাম। ইতোমধ্যে এক ইহুদি পাদ্রি এসে বললো, ‘আসসালামু আলাইকা ইয়া মোহাম্মদ’ তখন আমি তাকে এমন জোরে ধাক্কা দিলাম যে, সে পড়ে যাওয়ার উপক্রম হলো।(ধাক্কা খেয়ে) সে আমাকে বললো, তুমি আমাকে ধাক্কা দিলে কেন? 

আমি বললাম রাসূলুল্লাহ  না বলে ইয়া মোহাম্মদ বললে কেন? ইহুদি বললো, আমি তো তাকে সেই নামেই ডেকেছি তার পরিবার যে নাম রেখেছে। তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, আমার পরিবারের লোকেরা আমার নাম  মোহাম্মদই রেখেছেন। এরপর ইহুদি বললো, আমি আপনাকে কয়েকটি প্রশ্ন করতে এসেছি।

প্রতিত্তরে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে বললেন, আমি তোমার জিজ্ঞাসিত বিষয় সম্পর্কে জানালে তোমার কি লাভ হবে? সে বললো, তা মনোযোগ সহকারে শুনবো। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার হাতে থাকা লাঠি দিয়ে মাটিতে দাগ কাটতে কাটতে বললেন, তোমার যা জিজ্ঞাসা করার জিজ্ঞাসা করো। 

ইহুদি বললো, যেদিন আকাশ ও জমিনকে পরিবর্তন করা হবে (কেয়ামতের দিবসে) সেদিন মানুষ কোথায় থাকবে? রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তারা সেদিন পুলসিরাতের নিকটে একটি অন্ধকার স্থানে থাকবে। কারা সর্বপ্রথম তা পার হবে? 

রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, দরিদ্র মুহাজিরগণ। ইহুদি আবারো প্রশ্ন করলো, তারা জান্নাতে প্রবেশ করার পর সর্বপ্রথম তাদের কী দিয়ে আপ্যায়ন করা হবে? তিনি বললেন, মাছের কলিজার। 

ইহুদি পুনরায় প্রশ্ন করলো, এরপর তাদেরকে কী খাবার পরিবেশন করা হবে? তিনি বললেন, তাদের জন্য জান্নাতে পালিত ষাঁড় জবাই করা হবে । ইহুদি আবার প্রশ্ন করলো, এরপর এদের পানীয় কি হবে? রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন,সালসাবিল নামক ঝর্ণার পানি। অতপর সে বললো, আপনি সত্য বলেছেন। (সহিহ মুসলিম, হাদিস, ৬০৩)

আরেক হাদিসে হজরত আবু সাঈদ খুদরি রাদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বলেন, নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, জান্নাতবাসীরা সর্বপ্রথম যে খাবার খাবে তা হল মাছের কলিজা সংলগ্ন অতিরিক্ত অংশ গুর্দা। (বুখারি, ২৭৩২)

এনটি