প্রতীকী ছবি

বর্তমানে বিভিন্ন কাজের কারণে নারী-পুরুষের একসঙ্গে বাস-লেগুনা, অটোতে চলাফেরা করতে হয়। চলাফেরা করতে গিয়ে অনেক সময় গায়রে মাহরাম নারী-পুরুষদের পাশাপাশি সিটে বসার মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়।

যেমন, বাসে সিটের তুলনায় যাত্রী সংখ্যা বেশি। অনেক সময় পুরুষ যাত্রীর সংখ্যা বেশি হলেও নারী যাত্রীর সংখ্যা কম থাকে। এমন পরিস্থিতির কারণে গায়রে মাহরাম নারী-পুরুষের পাশাপাশি সিটে বসতে হয়।

এমন পরিস্থিতি সাধারণত ধর্মপরায়ণ এবং সব ঘরনার নারী-পুরুষের জন্য বিব্রতকর। এ ক্ষেত্রে করণীয় বিষয়ে অনেকেই দোদুল্যমনতায় ভোগেন। এমন পরিস্থিতির ক্ষেত্রে ইসলামি চিন্তাবিদের পরামর্শ হলো— 

গায়রে মাহরাম নারী বা পুরুষের সঙ্গে বাস-লেগুনা অথবা অটোতে শরীর লাগিয়ে বসা জায়েজ নেই। তাই এক্ষেত্রে বসতে চাইলে মাঝখানে কোন কিছু রেখে বা যথেষ্ট পরিমাণ ফাঁকা রেখে বসতে হবে। দূরত্ব বজায় রাখা সম্ভব না হলে দাঁড়িয়ে যেতে হবে। কিন্তু চাপাচাপি করে পাশাপাশি বসা যাবে না।

আল্লাহর রাসূল সা. ইরশাদ করেন, চোখের জিনা হলো (হারাম) দৃষ্টিপাত। কানের জিনা হলো (গায়রে মাহরামের যৌন উদ্দীপক) কথাবার্তা মনযোগ দিয়ে শোনা। জিহবার জিনা হলো (গায়রে মাহরামের সাথে সুড়সুড়িমূলক) কথোপকথন। হাতের জিনা হলো (গায়রে মাহরামকে) ধরা বা স্পর্শকরণ। পায়ের জিনা হলো (খারাপ উদ্দেশ্যে) চলা। অন্তর চায় এবং কামনা করে আর লজ্জাস্থান তাকে বাস্তবে রূপ দেয় (যদি জিনা করে) এবং মিথ্যা পরিণত করে (যদি অন্তরের চাওয়া অনুপাতে জিনা না করে)। (মুসলিম, হাদিস, ২৬৫৭, মুসনাদে আহমাদ, হাদিস, ৯৩২)

অপর হাদিসে হজরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ রা. থেকে বর্ণিত। রাসূল সা. বলেছেন, নারী জাতি হলো আপাদমস্তক সতর। যখনি সে বের হয়, তখনি শয়তান তাকে চমৎকৃত করে তোলে। (সুনানে তিরমিজি, হাদিস, ১১৭৩)

এজন্য বাস এবং এ জাতীয় গণ পরিবহনগুলো চলাফেরার ক্ষেত্রে নারীদের জন্য নারীর সঙ্গে এবং পুরুষের জন্য পুরুষের সঙ্গে বসা উচিত। বিশেষ কোনো প্রয়োজনে ঘরের বাইরে বের হলে নারীদের জন্য মাহরামের সঙ্গে বের হওয়া উচিত। কারণ, মাহরাম ছাড়া একাকী নারীর সফরে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে শরীয়তে।

নারী-পুরুষের মাহরাম ১৪জন। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তায়ালা বলেছেন- 

 أَرْضَعْنَكُمْ وَأَخَوَاتُكُم مِّنَ الرَّضَاعَةِ وَأُمَّهَاتُ نِسَائِكُمْ وَرَبَائِبُكُمُ اللَّاتِي فِي حُجُورِكُم مِّن نِّسَائِكُمُ اللَّاتِي دَخَلْتُم بِهِنَّ فَإِن لَّمْ تَكُونُوا دَخَلْتُم بِهِنَّ فَلَا جُنَاحَ عَلَيْكُمْ وَحَلَائِلُ أَبْنَائِكُمُ الَّذِينَ مِنْ أَصْلَابِكُمْ وَأَن تَجْمَعُوا بَيْنَ الْأُخْتَيْنِ إِلَّا مَا قَدْ سَلَفَ ۗ إِنَّ اللَّهَ كَانَ غَفُورًا رَّحِيمًا

‘তোমাদের প্রতি হারাম করা হয়েছে তোমাদের মা এবং মেয়ে, বোন, ফুফু, খালা, ভাইঝি, ভাগিনী, দুধ মা, দুধ বোন, শ্বাশুড়ি, তোমাদের স্ত্রীদের মধ্যে যার সঙ্গে সঙ্গম হয়েছ তার পূর্ব স্বামীর ঔরসজাত মেয়ে যারা তোমাদের তত্ত্বাবধানে আছে, কিন্তু যদি তাদের সঙ্গে তোমরা সহবাস না করে থাক, তবে (তাদের বদলে তাদের মেয়েদেরকে বিয়ে করলে) তোমাদের প্রতি গুনাহ নেই এবং (তোমাদের প্রতি হারাম করা হয়েছে) তোমাদের ঔরসজাত পুত্রের স্ত্রী এবং এক সঙ্গে দু’ বোনকে (বিবাহ বন্ধনে) রাখা, পূর্বে যা হয়ে গেছে, হয়ে গেছে, নিশ্চয়ই আল্লাহ পরম ক্ষমাশীল, দয়ালু।’ (সূরা নিসা, আয়াত, ২৩)