প্রতীকী ছবি

রমজানে রাত্রিকালে এশার নামাজের চার রাকাত ফরজ ও দুই রাকাত সুন্নতের পর এবং বিতর নামাজের আগে দুই রাকাত করে ১০ সালামে যে ২০ রাকাত নামাজ আদায় করা হয়, একে ‘তারাবি নামাজ’ বলা হয়। তারাবির নামাজের সময় হলো- এশার নামাজের পর থেকে ফজরের নামাজের আগ পর্যন্ত।

হজরত আবু হুরায়রা রা. বলেন, আমি আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে রমজান সম্পর্কে বলতে শুনেছি, যে ব্যক্তি রমজানে ঈমানের সাথে সওয়াব লাভের আশায় কিয়ামে রমজান অর্থাৎ তারাবির নামাজ আদায় করবে তার পূর্ববর্তী গোনাহসমূহ মাফ করে দেয়া হবে। (বুখারি, (ইসলামিক ফাউন্ডেশন), হাদিস, ১৮৭৯)

রমজানে মসজিদগুলোতে খতম ও সূরা তারাবি পড়া হয়। খতম তারাবিতে ধরাবাহিকভাবে পুরো কোরআন তিলাওয়াত করা হয়। বিপরীতে সূরা তারাবিতে তুলনামূলক কোরআনের ছোট সূরাগুলো পড়া হয়, অনেক জায়গায় কোরআনের ৩০তম পারার শেষের ১০টি সূরার মাধ্যমে সূরা তারাবি পড়ানো হয়। 

আবার কেউ কেউ সূরা তাবাবিতে কোরআনের বিভিন্ন ফজিলতপূর্ণ সূরা তিলাওয়াত করেন। এক্ষেত্রে কোনো একটি সূরা শুরু করে পুরো সূরাটির মাধ্যমে নামাজ শেষ করা হয়।

সূরা তারাবির একই রাকাতে কোরআনের বিভিন্ন আয়াত তিলাওয়াত না করার প্রতি গুরুত্ব দিয়ে থাকেন ফেকাহবিদ আলেমরা।

আলেমদের মতে, নামাজে একই রাকাতে ইচ্ছাকৃত একাধিক স্থান থেকে তিলাওয়াত করা মাকরূহ। 

হাদিস শরিফে এসেছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বিলাল রা.-এর পাশ দিয়ে যাচ্ছিলেন। আর বিলাল রা. একই রাকাতে বিভিন্ন সূরা থেকে তিলাওয়াত করছিলেন। পরে রাসূলুল্লাহু সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে এ বিষয়ে জিজ্ঞাসা করলে তিনি বললেন, আমি একটি উত্তমকে আরেকটি উত্তমের সাথে মিলিয়েছি। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, না, সূরা যেভাবে আছে সেভাবেই পড়। (ফাযাইলুল কোরআন, আবু উবাইদ পৃ. ৯৫)

এ জাতীয় হাদিসের আলোকে ফকীহগণ একই রাকাতে ইচ্ছাকৃত একাধিক স্থান থেকে পড়াকে মাকরূহ বলেছেন। তবে খতম তারাবির ক্ষেত্রে যেসব আয়াত ছুটে গেছে সেগুলো একত্র করে একবারে পড়ে নিলে মাকরূহ হবে না। খতমের ক্ষেত্রে এ বিষয়ে ছাড় দেওয়া হয়েছে।

(ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ২/৬৭; ফাতহুল কাদীর ১/২৯৯; শরহুল মুনয়া পৃ. ৪৯৪; রদ্দুল মুহতার ১/৫৪৬; আল কাউসার অনলাইন, ৪৪৩৪, ইলাউস সুনান ৪/১৩৯)