প্রতীকী ছবি

কালের স্রোত ও সময়ের গতিপ্রবাহ অবিরাম বয়ে যায়। ঘড়ির কাঁটা ঘুরতে থাকে অবিরত। এভাবে দিন ফুরিয়ে রাত নামে। রাত পেরিয়ে সূর্য হাসে। নির্ঘণ্ট অনুযায়ী একটি বছর শেষ হয়ে নতুন বছরের সূচনা হতে চলেছে।

মানুষের পার্থিব জীবন খুবই ক্ষণস্থায়ী। বিরতি ও ফিরতিহীন ধাবমান রেলগাড়ির (Nonstop and Non-returnable train) সঙ্গে এটির তুলনা চলে। যার (Time and Starting point of journey) যাত্রাকাল ও যাত্রাস্থান জানা থাকলেও শেষ গন্তব্য ও যাত্রার সমাপ্তিকাল (Ending point) একমাত্র মহান আল্লাহ ছাড়া কেউ জানে না।

বস্তুত টুকরো টুকরো ক্ষণ-মুহূর্ত, দিন-রাত, সপ্তাহ, মাস ও বছর- মহাকালের মিছিলে বিরামহীন যোগ হতে থাকে। এভাবে মানুষ একদিন পৌঁছে যায় অমোঘ-অনিবার্য মৃত্যুর দোরগোড়ায়।

আল্লাহ তাআলা বলেন,

‘তিনি তাদের একটি নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত বিলম্ব করান। অতএব, যখন তাদের মৃত্যুর নির্দিষ্ট সময় আসে, তখন সামান্য কালক্ষেপণও করে না আবার ত্বরান্বিতও করে না।’

(সুরা নাহল, আয়াত: ৬১)

সমালোচনা হোক অতীতের
প্রতিটি মানুষের উচিত ফেলে আসা দিনগুলোর কথা ভেবে চিন্তিত হওয়া। কিন্তু খুবই দুঃখজনক সত্য হলো- কিছু মানুষ বছরের শুরুর দিনে বল্গাহারা হয়ে যায়। সুন্দর মুহূর্তগুলো অপ্রীতিকর ও অনৈতিক কর্মে নষ্ট করে। ভুলে যায়, নববর্ষে একটি বছরের সূচনা-আনন্দের সঙ্গে মিশে আছে আরেকটি বছর হারানোর বেদনা। অথচ আলোকোজ্জ্বল ভবিষ্যৎ বিনির্মাণের জন্যই প্রয়োজন ছিল তীব্র আত্মসমালোচনা ও অত্যধিক অনুশোচনার।

বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম ও পত্র-পত্রিকায় প্রকাশিত খবরে দেখা যায়, ‘থার্টিফার্স্ট নাইট’ নামে দেশের কিছু জায়গায় প্রতি বছরের শেষ রাতে অশ্লীলতার হিড়িক পড়ে যায়। নানা অনৈতিক ও অশালীন কার্যকলাপ বেড়ে যায়। থার্টিফার্স্ট নাইটের আড়ালে এতে বছরের প্রথম প্রহর পঙ্কিল করা হয়। যে জাতি ও সমাজ বছরের প্রথম প্রহর অশ্লীলতা ও পাপাচারে কাটায়, তাদের আগামীর দিনগুলো সুখকর ও কল্যাণমুখর হবে কি না, তা ভাবলেই ভয় কাজ করে।

ইসলাম সুস্থ বিনোদনচর্চায় উৎসাহিত করে। কিন্তু অশ্লীলতা, কদর্য আচরণ, প্রবৃত্তির অনুসরণ ও অনৈতিকতার সঙ্গে কখনো সমঝোতা করে না। তাই প্রত্যেক মুসলিমের উচিত, অতীতের পাপের মার্জনা চেয়ে আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করা। ভবিষ্যৎ দিনগুলো যাতে সুন্দর-সমৃদ্ধ, পুণ্যময় হয়, সে জন্য দোয়া করা।