সংসার জীবনে স্বামী-স্ত্রী সুখ-শান্তিতে বসবাস করতে চান। তবে সবসময় সুখে বসবাস করা সম্ভব হয় না। অনেক সময় মনোমালিন্যতা, অশান্তি লেগে থাকে। এর অন্যতম একটি কারণ হলো একে-অপরকে মানতে না চাওয়া বা কেউ কাউকে প্রাধান্য না দেওয়া।

শুধু সংসার জীবন নয়, পৃথিবীর অন্য যেকোনো ক্ষেত্রেও শান্তি শৃঙ্খলা অটুট থাকার পূর্বশর্ত হলো একজন অনুসরণকারী এবং অপরজন অনুসৃত হওয়া।  

বর্তমানে সবাই সুখ-শান্তি ঐক্য চায় তবে কেউ এর মূল ভিত্তির বিষয়টি ভেবে দেখে না। অথচ দুইজন মানুষ বা কয়েকজন একসঙ্গে বসবাসের ক্ষেত্রে শান্তির মূলমন্ত্র হলো একজনকে অনুকরণীয় হিসেবে মেনে নেওয়া এবং তার আনুগত্য  স্বীকার করে নেওয়া। যেখানে অনুকরণীয় ও অনুসরণকারী থাকবে না, সবাই নিজেকে অপরের সমকক্ষ মনে করবে এবং এবং নিজেকে অপরের কাছে অনুসরণীয় হওয়ার দাবি করবে সেখানে শান্তি শৃঙ্খলা থাকতে পারে না। 

এজন্য এ বিষয়টিতে স্বামী-স্ত্রীর বুঝে শুনে কাজ করা উচিত।  এবং স্ত্রীদের স্বামীর সঙ্গে সমকক্ষতার দাবি করা মোটেও উচিত নয়। তার অন্তর থেকে স্বামীর বরাবর হওয়ার চিন্তা ঝেড়ে ফেলা উচিত। কারণ, এমন ভাবনা থেকেই সংসারে অধিকাংশ অশান্তির সূচনা হয়ে থাকে।

পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তায়ালা বলেছেন, 

 اَلرِّجَالُ قَوّٰمُوۡنَ عَلَی النِّسَآءِ بِمَا فَضَّلَ اللّٰهُ بَعۡضَهُمۡ عَلٰی بَعۡضٍ وَّ بِمَاۤ اَنۡفَقُوۡا مِنۡ اَمۡوَالِهِمۡ

পুরুষরা নারীদের তত্ত্বাবধায়ক, এ কারণে যে, আল্লাহ তাদের একের উপর অন্যকে শ্রেষ্ঠত্ব দিয়েছেন এবং যেহেতু তারা নিজদের সম্পদ থেকে ব্যয় করে।  (সূরা নিসা আয়াত, ৩৪)

এই আয়াতে পুরুষদের কর্তৃত্ব ও দায়িত্বশীলতার দু’টি কারণ বলা হয়েছে। প্রথমটি হল, আল্লাহ প্রদত্তঃ যেমন, পুরুষোচিত শক্তি ও সাহস এবং মেধাগত যোগ্যতায় পুরুষ সৃষ্টিগতভাবেই নারীর তুলনায় অনেক বেশী। দ্বিতীয়টি হল সব-উপার্জিতঃ এই দায়িত্ব শরীয়ত পুরুষের উপর চাপিয়েছে। মহিলাদেরকে তাদের প্রাকৃতিক দুর্বলতার কারণে এবং তাদের সতীত্ব, শ্লীলতা এবং পবিত্রতার হিফাযতের জন্য ইসলাম বিশেষ করে তাদের জন্য অতীব জরুরী যে বিধি-বিধান প্রণয়ন করেছে সেই কারণেও উপার্জনের ঝামেলা থেকে তাদেরকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। 

পারিবারিক-জীবন, (আশরাফ আলী থানবী রহ.), ৪১