মানুষ,গাছ-পালা উদ্ভিদ এক কথায় জীবনের জন্য বৃষ্টির প্রয়োজনীয়তা অপরিহার্য। বৃষ্টিতে সবকিছুর মাঝে সজীবতা ফিরে আসে। সব যেন নতুন জীবন ফিরে পায়।

পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তায়ালা বলেছেন, ‘যখন তা ভারী মেঘমালাকে বয়ে নিয়ে যায়, তখন আমি তাকে কোনো মৃত ভূখন্ডের দিকে চালিয়ে নিয়ে যাই, তারপর সেখানে পানি বর্ষণ করি এবং তা দ্বারা সর্বপ্রকার ফল উৎপন্ন করি। এভাবেই আমি মৃতদেরও জীবিত করে তুলব। হয়তো তোমরা শিক্ষা গ্রহণ করবে’ (সুরা আরাফ : ৫৭)। 

অপর এক আয়াতে আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘আমি আকাশ থেকে বর্ষণ করি পবিত্র পানি। তা দ্বারা মৃত ভূমিকে সঞ্জীবিত করা এবং আমার সৃষ্ট বহু জীবজন্তু ও মানুষকে তা পান করানোর জন্য।’ (সুরা ফুরকান : ৪৮-৪৯)

বৃষ্টির প্রয়োজনীতা অস্বীকারের উপায় নেই। তবে আল্লাহ তায়ালা বিভিন্ন সময় বৃষ্টিপাত বন্ধ রাখেন। পৃথিবীতে দেখা দেয় অনাবৃষ্টি। এর ফলে সৃষ্টিজীবকে অসহনীয় কষ্ট সহ্য করতে হয়।

অনাবৃষ্টির বিষয়টি বিভিন্ন নবী রাসূল এবং আমাদের প্রিয়নবী হজরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সময়কালেও ছিল। এ থেকে মুক্তি পেতে তারা সালাতুল ইসতিসকা বা বৃষ্টি প্রার্থনার নামাজ আদায় করেছেন বলে হাদিসের মাধ্যমে প্রমাণিত।

বিজ্ঞানের দৃষ্টিতে অনাবৃষ্টি বা তীব্র তাপপ্রবাহের বিভিন্ন কারণ রয়েছে। তবে আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম অনাবৃষ্টির কারণ হিসেবে মানুষের একটি পাপাচার ও আল্লাহর বিধান পালনে অবহেলাকে চিহ্নিত করেছেন। এক হাদিসে এ বিষয়ে বর্ণিত হয়েছে— 

ইবনে ওমর রাদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু থেকে বর্ণিত, আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, হে মুহাজিরদল! পাঁচটি কাজ এমন আছে যাতে তোমরা লিপ্ত হয়ে পড়লে (উপযুক্ত শাস্তি তোমাদেরকে গ্রাস করবে)। আমি আল্লাহর কাছে পানাহ চাই, যাতে তোমরা তা প্রত্যক্ষ না কর।

যখনই কোন জাতির মধ্যে অশ্লীলতা (ব্যভিচার) প্রকাশ্যভাবে ব্যাপক হবে, তখনই সেই জাতির মধ্যে প্লেগ এবং এমন মহামারী ব্যাপক হবে যা তাদের পূর্বপুরুষদের মাঝে ছিল না।

যে জাতিই মাপ ও ওজনে কম দেবে, সে জাতিই দুর্ভিক্ষ, কঠিন খাদ্য-সংকট এবং শাসকগোষ্ঠীর অত্যাচারের শিকার হবে।

যে জাতিই তার মালের যাকাত দেওয়া বন্ধ করবে, সে জাতির জন্যই আকাশ হতে বৃষ্টি বন্ধ করে দেওয়া হবে। যদি অন্যান্য প্রাণীকুল না থাকত, তাহলে তাদের জন্য আদৌ বৃষ্টি হত না।

যে জাতি আল্লাহ ও তাঁর রসূলের প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করবে, সে জাতির উপরেই তাদের বিজাতীয় শত্রুদলকে ক্ষমতাসীন করা হবে; যারা তাদের মালিকানা-ভুক্ত বহু ধন-সম্পদ নিজেদের কুক্ষিগত করবে।

আর যে জাতির শাসকগোষ্ঠী যতক্ষণ পর্যন্ত না আল্লাহর কিতাব (বিধান) অনুযায়ী দেশ শাসন করবে, ততক্ষণ পর্যন্ত তিনি তাদের মাঝে গৃহদ্বন্দ্ব অবস্থায় রাখবেন।

(বায়হাকি, ইবনে মাজাহ, হাদিস : ৪০১৯, সহিহ তারগিব, হাদিস : ৭৬৪)