শরিয়তের দৃষ্টিতে শাওয়াল মাসের প্রথম দিন রোজা রাখা হারাম। তার মানে ঈদুল ফিতরের দিন রোজা রাখার কোনো বৈধতা নেই। কেননা রমজান মাসে এক মাস সিয়াম সাধনার পর রোজা পালনকারীদের জন্য শাওয়াল মাসের প্রথম দিন হচ্ছে আনন্দ ও উৎসবের দিন। কিন্তু এ দিনটিও যদি রোজা পালন করা হয়, তাহলে তারা আর আনন্দ অনুভব করতে পারবে না।

ঈদের দিন রোজা রাখা হারাম

দুই ঈদের দিন রোজা রাখা হারাম। আবু সাঈদ খুদরি (রা.) বলেন, ‘নবী (সা.) ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজহার দিন রোজা রাখতে নিষেধ করেছেন।’ (সহিহ বুখারি, হাদিস : ১৯৯২; মুসলিম, হাদিস : ৮২৭)

মুসলিম উম্মাহর ফিকাহবিদরা ঐকমত্য পোষণ করেছেন যে, ‘এ দুইদিন রোজা রাখা হারাম’। আরেকটি হাদিসে আবু উবাইদা (রা.) বলেন, আমি উমর ইবনুল খাত্তাব (রা.)-এর সঙ্গে ঈদের নামাজ আদায় করেছি। তিনি বলেছেন, এ দুই দিনের রোজা রাখাতে নবী (সা.) নিষেধ করেছেন। প্রথম দিন হলো- যখন তোমরা রোজা শেষ করো; আর দ্বিতীয় দিন হলো- যখন তোমরা কোরবানির গোস্ত খাবে। (বুখারি : ২/২৭২; হাদিস : ১৮৫১)

আইয়ামে তাশরিকে রোজা রাখা হারাম

অনুরূপভাবে তাশরিকের দিনগুলোতে রোজা রাখাও হারাম। উম্মে হানির আজদকৃত দাস আবু মুর্‌রা থেকে বর্ণিত আছে যে, তিনি আব্দুল্লাহ বিন আমরের সাথে তার পিতা আমর বিন আসের কাছে যান। তিনি তাদের দুইজনের জন্য খাবার পেশ করে বলেন: খাও। সে বলল: আমি রোজা রেখেছি। তখন আমর (রা.) বললেন: খাও; রাসুল (সা.) এ দিনগুলোতে আমাদের রোজা না রাখার নির্দেশ দিতেন এবং রোজা রাখতে নিষেধ করতেন। (সুনানে আবু দাউদ, হাদিস : ২৪১৮)

ইমাম মালেক বলেন, এ দিনগুলো হচ্ছে- তাশরিকের দিন। প্রসঙ্গত, তাশরিকের দিনগুলো হচ্ছে- ঈদুল আজহার পরের তিনদিন (১১, ১২ ও ১৩ জিলহজ)।

শাইখ উছাইমিন (রহ.) বলেন, ‘তামাত্তু ও ক্বিরান হজকারী হাদির পশু না পেলে, তার জন্য এই তিনদিন রোজা রাখা জায়েজ; যাতে করে রোজা রাখার পূর্বে হজ্জের মৌসুম শেষ হয়ে না যায়। এছাড়া অন্য কোনো রোজা এ দিনগুলোতে রাখা পুরোপুরি নাজায়েজ। এমনকি কোনো ব্যক্তির ওপর যদি দুই মাসের লাগাতর রোজা রাখা ফরজ হয়ে থাকে, সে ব্যক্তিও ঈদের দিন এবং ঈদের পর আরও তিনদিন রোজা রাখবে না। এ দিনগুলোর পর পুনরায় লাগাতর রোজা থাকা শুরু করবে। (ফাতাওয়া রমজান, পৃষ্ঠা : ৭২৭)