প্রতীকী ছবি

সুস্থতা-অসুস্থতা মিলিয়ে মানুষের জীবন। অসুস্থতা জীবনযাত্রা অস্থিতিশীল করে তোলে। কেউ অস্বাভাবিক জীবন যাপন করতে চায় না। তাই সুস্থ হতে কারো চেষ্টায় কমতি থাকে না।

অসুস্থ হলে ইসলাম প্রয়োজনীয় চিকিৎসা নেওয়ার তাগিদ দিয়েছে। পাশাপাশি রোগীকে অসুস্থতার দরুণ বিপুল সওয়াবের সুসংবাদও দিয়েছে। অন্যদিকে রোগীর সেবা-শুশ্রুষায় উৎসাহ দিয়েছে। যারা রোগীকে দেখতে যান, তাদের জন্য অসংখ্য প্রতিদানের ঘোষণা রয়েছে।

নিম্নে রোগীকে দেখতে যাওয়ার বিভিন্ন নিয়ম উল্লেখিত-

উপযুক্ত সময় নির্বাচন
অসুস্থ ব্যক্তি বা রোগীর সঙ্গে দেখা করতে উপযুক্ত সময়ে যাওয়া চাই। যখন-তখন রোগীর সঙ্গে দেখা করতে যাওয়া মোটেই উচিত নয়। অনেকে এমনটা করে বসেন, কিন্তু এতে রোগীর কষ্ট হয়। অপারেশন থেকে সবেমাত্র বের করা রোগী কিংবা বিশ্রামরত রোগীর সঙ্গেও অসময়ে দেখা করে কষ্ট দেয় কেউ কেউ। ঘুমের সময় ও খাবার গ্রহণের সময়ও রোগীর সঙ্গে সাক্ষাৎ অনুচিত। আনাস (রা.) বর্ণনা করেন, ‘তিনদিন অতিবাহিত হওয়ার পর রাসুল (সা.) রোগী দেখতে যেতেন।’ (ইবনে মাজাহ, হাদিস : ১৪৩৭)

রোগীর অবস্থা জানতে চাওয়া
সাক্ষাৎ করতে গেলে রোগীকে তার শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা সুন্নত। তবে রোগী কথা বলতে না পারলে, কথা না বলাই ভালো।

নাফে (রহ.) বর্ণনা করেন,

‘ওমর (রা.) কোনো রোগীকে দেখতে গেলে তার অবস্থা সম্পর্কে জিজ্ঞেস করতেন। আর রোগীর কাছ থেকে উঠে যাওয়ার পর বলতেন, আল্লাহ তোমার ভালো করুন।’ (আল-আদাবুল মুফরাদ, হাদিস : ৫২৭)

দোয়া করা
রোগী দেখতে এসে তার জন্য দোয়া করা সুন্নাত। এতে রোগীর অন্তর প্রশান্ত হয়। আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত হয়েছে, রাসুল (সা.) কোনো রোগীকে দেখেতে গেলে তার শিয়রে গিয়ে বসতেন। তারপর সাতবার এই দোয়া পড়তেন- ‘আসআলুল্লাহাল আজিম, রাব্বাল আরশিল আজিম, আন ইয়াশফায়াকা।’

(অর্থ : মহান আল্লাহর কাছে কামনা করছি, যিনি আরশের প্রতিপালক, তিনি যেন তোমাকে সুস্থ করে দেন)। এতে রোগী দেরিতে হলেও সুস্থ হয়ে উঠত।’ (মুসনাদে আহমাদ, হাদিস : ২২১২৯; আল আদাবুল মুফরাদ, হাদিস : ৫৩৬)

সাহস জোগানো
যারা রোগীকে দেখতে যান, তাদের উচিত রোগীকে সাহস জোগানো। তার সঙ্গে এমন আচরণ করা, যাতে  কথা বলা, আশা জেগে ওঠে। আর এমনভাবে কথা বলা, যেন অসুস্থ ব্যক্তি মানসিকভাবে শক্তিশালী হয়ে ওঠেন। 

রাসুল (সা.) ইরশাদ করেন, ‘রোগীর সঙ্গে এমনভাবে কথা বলো, যেন সে অন্তরে সান্ত্বনা লাভ করে।’ (তিরমিজি, হাদিস : ২০৯৪)

রোগীকে ধৈর্য ধারণে উদ্বুদ্ধ করাও সুন্নত। হাদিসে কুদসিতে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘আমি কোনো মুমিন বান্দাকে পরীক্ষায় ফেললে, সে এতে ধৈর্য ধারণ করল এবং সওয়াবের প্রত্যাশা করল আর আমার প্রশংসা করল, সে বিছানা থেকে গুনাহমুক্ত হয়ে এমনভাবে উঠবে যেন সে সদ্যোভূমিষ্ঠ শিশু।’ (মুসনাদে আহমাদ, হাদিস : ১৭২৪৮)

দোয়া চাওয়া
অসুস্থ ব্যক্তির কাছে দোয়া চাওয়া মুস্তাহাব। এ সময় আল্লাহ তার প্রতি রহমতের দৃষ্টিতে দেখেন। তাই তার দোয়াগুলো আল্লাহর কাছে দ্রুত কবুল হয়। ওমর (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) আমাকে বলেছেন, ‘তুমি কোনো রোগীর কাছে গেলে তাকে তোমার জন্য দোয়া করতে বলবে। তার দোয়া ফেরেশতাদের মতো আল্লাহর কাছে কবুল হয়।’ (ইবনে মাজাহ, হাদিস : ১৪৪১)

এমএমইউ