হজরত ইবনে আব্বাস (রা.) বলেন, কোন সময় তোমার অন্তরে আল্লাহ তায়ালা ও ইসলাম সম্পর্কে শয়তানী কুমন্ত্রণা দেখা দিলে নিচের আয়াতটি আস্তে পাঠ করে নাও। 

 هُوَ الْأَوَّلُ وَالْآخِرُ وَالظَّاهِرُ وَالْبَاطِنُ 

উচ্চারণ : হুওয়াল আওওয়ালুওয়াল আ-খিরু ওয়াজ্জা-হিরুওয়াল বা-তিনু ওয়া হুওয়া বিকুল্লি শাইয়িন ‘আলীম।

অর্থ : তিনিই আদি, তিনিই অন্ত এবং তিনিই ব্যক্ত ও তিনিই গুপ্ত। তিনি সবকিছু পরিপূর্ণভাবে জানেন। (সুরা হাদিদ : আয়াত : ০৩, ইবনে কাসীর)

এই আয়াতের তফসীর এবং আউয়াল, আখের, যাহের ও বাতেনের অর্থ সম্পর্কে তফসীরবিদদের দশটিরও অধিক উক্তি বর্ণিত আছে। এসব উক্তির মধ্যে কোন বৈপরীত্য নেই—সবগুলোরই অবকাশ আছে। 

‘আউয়াল’ শব্দের অর্থ তো প্রায় নির্দিষ্ট। অর্থাৎ অস্তিত্বের দিক দিয়ে সকল সৃষ্টজগতের অগ্রে ও আদি। কারণ, তিনি ছাড়া সবকিছু তারই সৃজিত। তাই তিনি সবার আদি। 

কারো কারো মতে আখেরের অর্থ এই যে, সবকিছু বিলীন হয়ে যাওয়ার পরও তিনি বিদ্যমান থাকবেন। 

ইমাম গাযালী (রহ.) বলেন, আল্লাহ তায়ালার মারেফত সবার শেষে হয়। এই দিক দিয়ে তিনি আখের তথা অন্ত। মানুষ জ্ঞান ও মারেফতে ক্রমোন্নতি লাভ করতে থাকে। কিন্তু মানুষের অর্জিত এসব স্তর আল্লাহর পথের বিভিন্ন মনযিল মাত্র। এর চূড়ান্ত ও শেষ সীমা হচ্ছে আল্লাহর মারেফত। (রাহুল মাআনী)

‘যাহের’ বলে সেই সত্তা বোঝানো হয়েছে, যেসব বস্তু অপেক্ষাকৃত অধিক প্রকাশ্য। প্রকাশমান হওয়া অস্তিত্বের একটি শাখা। অতএব আল্লাহ তায়ালার অস্তিত্ব যখন সবার উপরে ও আগে, তখন তার আত্মপ্রকাশও সবার উপরে হবে। জগতে তার চাইতে অধিক কোন বস্তু প্রকাশমান নয়। তার প্রজ্ঞা ও শক্তি-সামর্থ্যের উজ্জ্বল নিদর্শন বিশ্বের প্রতিটি কণায় কণায় দেদীপ্যমান।

স্বীয় সত্তার স্বরূপের দিক দিয়ে আল্লাহ তায়ালা ’বাতেন’ তথা অপ্রকাশমান। জ্ঞান-বুদ্ধি ও কল্পনা তার স্বরূপ পর্যন্ত পৌঁছতে সক্ষম নয়।

এনটি