মিজানুর রহমান আজহারী ইনশাআল্লাহ প্রসঙ্গে যা বললেন

আমরা প্রাত্যহিক জীবনে নানা পরিভাষা ব্যবহার করে থাকি। এটা আমাদের যাপিত জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ। কোনো না কোনোভাবে মানুষ অন্যকে ধন্যবাদ জানায়। কিংবা সৌজন্যবোধ জ্ঞাপন করে। অথবা ভিন্ন কিছুতে পরিভাষা ব্যবহার করে। সেই ধরনের ইসলামী পরিভাষা নিয়ে আমাদের আয়োজন।

পরিভাষাগুলোর ক্ষেত্রে ‘ইনশাআল্লাহ’ অন্যতম। প্রতিটি মুসলমান কোনো না কোনো কাজে ও ক্ষেত্রে এটি বলে থাকেন। প্রখ্যাত ইসলামিক গবেষক ও জনপ্রিয় ধর্মীয় আলোচক মিজানুর রহমান আজহারী ‘ইনশাআল্লাহ’ বিষয়ে কিছু কথা বলেছেন। তিনি তার ভেরিফায়েড পেজে লিখেছেন—

ভবিষ্যতের কোনো কথা কিংবা কাজের পূর্বে ‘ইনশাআল্লাহ’ বলা— ইসলাম ও মুসলমানদের ধর্মীয় রীতি; যা আল্লাহ তাআলা নিজেই শিখিয়েছেন। কোরআনে আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেছেন, ‘তোমাদের কোনো ইচ্ছে বাস্তবে রূপ নেবে না, যদি না আল্লাহ ইচ্ছা করেন; যিনি জগৎসমূহের প্রতিপালক।’ (সুরা আত-তাকওয়ির, আয়াত : ২৯)

মুমিন তার জীবনের প্রতিটি কাজেই আল্লাহকে স্মরণ করবে। সে নির্ভর করবে একমাত্র আল্লাহর ওপর, নিজের শক্তি-সামর্থ্য ও অন্যান্য উপায়-উপকরণের ওপর নয়। তাই তো মুমিন ভবিষ্যতের কোনো কাজের কথা বলতে গিয়ে— ‘ইনশাআল্লাহ’ বলে। ‘ইনশাআল্লাহ’ শব্দের অর্থ— যদি আল্লাহ চান। অর্থাৎ যদি আল্লাহ চান, তাহলে আমি অমুক কাজটি করব বা অমুক কাজটি হবে। এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ ইসলামিক এটিকেট বা আদব।

কোরআনুল কারিমে আল্লাহ তাআলা নিজেই ইনশাআল্লাহ বলেছেন, ‘প্রকৃতপক্ষে আল্লাহ‌ তাঁর রাসুলকে সত্য স্বপ্ন দেখিয়েছিলেন— যা ছিল সরাসরি হক। ইনশাআল্লাহ তোমরা পূর্ণ নিরাপত্তার সঙ্গে অবশ্যই মসজিদে হারামে প্রবেশ করবে।’ (সুরা আল- ফাতহ, আয়াত : ২৭)

পাশাপাশি তার প্রিয় হাবিবকেও তিনি ভবিষ্যতের কোনো কাজের আগে ইনশাআল্লাহ বলার নির্দেশনা দিয়েছেন, ‘ইনশাআল্লাহ বলা ব্যতিরেকে, কোনো জিনিসের ব্যাপারে কখনো একথা বলো না যে, আমি আগামীকাল এ কাজটি করবো৷ যদি ভুলে এমন কথা মুখ থেকে বেরিয়ে যায়, তাহলে সাথে সাথেই নিজের রবকে স্মরণ করো এবং বলো, আশা করা যায়, আমার রব এ ব্যাপারে সত্যের নিকটতর কথার দিকে আমাকে পথ দেখিয়ে দেবেন।’ (সুরা আল-কাহাফ, আয়াত : ২৩-২৪)

ইনশাআল্লাহ বলার মাধ্যমে বান্দার বিনয়, আকুতি এবং আল্লাহ তাআলার ওপর পূর্ণ তাওয়াক্কুল প্রকাশ পায়। ভবিষ্যতের কোনো কাজের ইচ্ছা পোষণের ক্ষেত্রে, আল্লাহর নাম নেওয়া থেকে বিরত থাকলে— বান্দার ঔদ্ধত্য-অহংকার প্রকাশ পায়। যা তার কাজটাকে বরকতহীন বানিয়ে দেয়। তাই আমাদের উচিত— ভবিষ্যতের যে কোন কাজের আগে ইনশাআল্লাহ বলার অভ্যাস করা এবং আমাদের শিশুকিশোরদের এই কুরআনিক এটিকেটে অভ্যস্ত করে তোলা।

আল্লাহ তাআলা আমাদের সবাইকে পূর্ণ আস্থা ও অনুভূতির সঙ্গে ‘ইনশাআল্লাহ’ বলার এবং এটাকে আমাদের সবসময়কার অভ্যাসে পরিণত করার তাওফিক দান করুন। আমিন।