প্রতীকী ছবি

ঈদুল আজহা কিংবা ঈদুল ফিতর— এই দুইদিন কি রোজা রাখা যায়? রোজা রাখলে কি কোনো অসুবিধা আছে? এমনটা অনেকে প্রশ্ন করেন। আসলে উভয় ঈদের যেকোনো দিন রোজা রাখা হারাম। এ দুই ঈদের দিন রোজা রাখা ‘হারাম’ হওয়া মর্মে আলেমগণ ইজমা (ঐকমত্য) করেছেন।

দুই ঈদের দিন রোজা রাখা হারাম

আবু সাঈদ খুদরি (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে এসেছে, ‘রাসুল (সা.) ঈদুল ফিতরের দিন ও কোরবানির দিন রোজা রাখতে নিষেধ করেছেন।’ (সহিহ বুখারি, হাদিস : ১৯৯২; সহিহ মুসলিম, হাদিস :  ৮২৭)

অনুরূপভাবে তাশরিকের দিনগুলোতে রোজা রাখাও হারাম। তাশরিকের দিনগুলো হচ্ছে- ঈদুল আজহার পরের তিনদিন (১১, ১২ ও ১৩ই যিলহজ)। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘তাশরিকের দিনগুলো হচ্ছে- পানাহার ও আল্লাহ্‌কে স্মরণ করার দিন।’ (সহিহ মুসলিম, হাদিস : ১১৪১)

উম্মে হানির আযাদকৃত দাস আবু মুর্‌রা থেকে বর্ণিত আছে যে, তিনি আব্দুল্লাহ বিন আমরের সঙ্গে তার পিতা আমর বিন আসের কাছে যান। তিনি তাদের দুইজনের জন্য খাবার পেশ করে বলেন, খাও। সে বলল, আমি রোজা রেখেছি। তখন আমর (রা.) বললেন, খাও; আল্লাহর রাসুল (সা.) এ দিনগুলোতে আমাদের রোজা না-রাখার নির্দেশ দিতেন এবং রোজা রাখতে নিষেধ করতেন। ইমাম মালেক বলেন, এ দিনগুলো হচ্ছে- তাশরিকের দিন। (সুনানে আবু দাউদ, হাদিস : ২৪১৮; আলবানি ‘সহিহ আবু দাউদ’ গ্রন্থে হাদিসটিকে সহিহ আখ্যায়িত করেছেন)

তবে যে হাজি সাহেব কোরবানির পশু সংগ্রহ করতে পারেননি, তার জন্যে এ দিনগুলোতে রোজা রাখা জায়েজ। আয়েশা (রা.) ও ইবনে উমর (রা.) থেকে বর্ণিত তারা বলেন, ‘যে ব্যক্তি হাদির পশু সংগ্রহ করতে পারেনি, সে ব্যক্তি ছাড়া তাশরিকের দিনগুলোতে অন্য কাউকে রোজা রাখার অবকাশ দেয়া হয়নি।’ (সহিহ বুখারি, হাদিস : ১৯৯৮)

শাইখ উছাইমিন (রহ.) বলেন, ‘তামাত্তু ও ক্বিরান হজকারী হাদির পশু না পেলে, তার জন্য এই (ঈদুল আজহার) তিনদিন রোজা রাখা জায়েজ; যাতে করে রোজা রাখার পূর্বে হজের মৌসুম শেষ হয়ে না যায়। এছাড়াও অন্য কোনো রোজা এ দিনগুলোতে রাখা জায়েজ নেই। এমনকি কোনো ব্যক্তির উপর যদি দুই মাসের লাগাতার রোজা রাখা ফরজ হয়ে থাকে, সে ব্যক্তিও ঈদের দিন এবং ঈদের পর আরও তিনদিন রোজা রাখবে না। এ দিনগুলোর পর পুনরায় লাগাতর রোজা থাকা শুরু করবে।’ (ফাতাওয়া রামাদান, পৃষ্ঠা : ৭২৭)

আয়েশা (রা.) ও ইবন উমর (রা.) থেকে বর্ণিত, তারা উভয়ে বলেন, ‘যে (হাজি)-র নিকট কোরবানির পশু নেই, তিনি ছাড়া অন্য কারও জন্য আইয়্যামে তাশরিকে সাওম পালন করার অনুমতি দেওয়া হয়নি।’ (সহিহ বুখারি, হাদিস : ১৯৯৭)

আরও পড়ুন : জিলহজ মাসে যেসব আমল করবেন

নুবাইশা আল-হুজালি (রা.) আনহা থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আল্লাহর রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘আইয়্যামে তাশরীক পানাহার ও আল্লাহর জিকিরের দিন।’ (সহিহুল জামে, হাদিস : ২৬৮৯)

রাসুল (সা.) আরও বলেন, ‘তোমরা এই দিনগুলোতে রোজা রাখিও না। কেননা, এগুলো পানাহারের দিন।’ (সহিহল জামে, হাদিস : ৭৩৫৫; হামজা ইবনে আমর আল-আসলামি থেকে বর্ণিত )