প্রতীকী ছবি

দোয়া বান্দা ও আল্লাহর মাঝে সেতুবন্ধ। দোয়ার মাধ্যমে আল্লাহর সঙ্গে সম্পর্ক গভীর হয়। তাই দোয়া করতে হয় সুস্থির মন ও প্রশান্ত মনোযোগ দিয়ে। দোয়া করতে গিয়ে তাড়াহুড়া করা অনুচিত। কাঙ্ক্ষিত বিষয়টি প্রাপ্তির জন্য অস্থির হতে নেই।

আল্লাহর রাসুল (সা.) বলেন, ‘তোমাদের প্রত্যেকের দোয়া কবুল হয়ে থাকে, যদি সে তাড়াহুড়া না করে আর বলে যে, ‘আমি দোয়া করলাম। কিন্তু আমার দোয়া কবুল হলো না।’ (বুখারি,  হাদিস : ৬৩৪০)

দোয়ায় শুধু দুনিয়ার কল্যাণ কামনা নয়

আল্লাহ তাআলা মানুষের জন্য উভয় জগৎ সৃষ্টি করেছেন। উভয় জগতের কল্যাণের পথ বলে দিয়েছেন। মুমিনের জন্য উভয় জগতে কল্যাণ ও অনুগ্রহ রেখেছেন। কোনো বান্দার জন্য শুধু এক জগতের কল্যাণ কিংবা দুনিয়ার কল্যাণ প্রার্থনা করা উচিত নয়। মহান আল্লাহ বলেন, ‘তারা বলে,  হে আমাদের প্রভু, আমাদের দুনিয়া ও আখেরাতের কল্যাণ দান করো।’ ( সুরা বাকারা, আয়াত : ২০১)

আরও পড়ুন : কোন সময় দোয়া করলে বেশি কবুল হয়?

ভয় ও আশা নিয়ে চাইতে হবে

দোয়াকালে আল্লাহর ভয় হৃদয়ে থাকতে হবে। আল্লাহর শ্রেষ্ঠত্বের কথা চিন্তা করতে হবে। দোয়া মঞ্জুর হওয়ার আশায় বুক ভরে উঠতে হবে। আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘তোমরা ভয় ও আশা নিয়ে আল্লাহর কাছে প্রার্থনা কর।’ (সুরা আরাফ, আয়াত : ৫৫)

দোয়ার মধ্যে ভাব ও ছন্দযুক্ত শব্দ ব্যবহার না করা উত্তম। হাদিসে এসেছে, ইকরামা (রা.) বলেন, ইবনে আব্বাস (রা.) আমাকে বলেছেন, তুমি দোয়ার মধ্যে ছন্দযুক্ত কবিতা বর্জন করবে। আমি রাসুল (সা.) এবং তার সাহাবিদের তা বর্জন করতে দেখেছি।’ (বুখারি, হাদিস : ৬৩৩৭)

দোয়া কবুল হওয়ার দৃঢ় আশা থাকা

হাদিসে রাসুল (সা.) বলেন, ‘তোমাদের কেউ দোয়া করলে দোয়ার সময় দৃঢ় বিশ্বাসের সঙ্গে দোয়া করবে এবং এ কথা বলবে না যে, হে আল্লাহ! আপনার ইচ্ছে হলে আমাকে কিছু দিন।’ (বুখারি, হাদিস : ৬৩৩৮)

প্রথমে নিজের জন্য দোয়া করা

দোয়া করার সময় প্রথমে নিজের জন্য করা উত্তম। উবাই ইবনে কাব (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে এসেছে, ‘রাসুল (সা.) কারও জন্য দোয়া করলে, প্রথমে নিজের জন্য দোয়া করতেন।’ ( সুনানে তিরমিজি, হাদিস : ৩৩৮৬)

দোয়ায় নিজের শাস্তি চাইতে নেই

আনাস (রা.) থেকে বর্ণিত আছে, রাসুল (সা.) একজন মুসলিম রোগীকে সেবা করতে গিয়েছিলেন। সে (অসুখে কাতর হয়ে) অত্যন্ত দুর্বল হয়ে পড়েছিল, এমনকি পাখির ছানার মতো হয়ে গেল। রাসুল (সা.) তাকে বললেন, তুমি কি কোনো প্রার্থনা করেছ অথবা আল্লাহর কাছে বিশেষভাবে কিছু  চেয়েছিলে? সে বলল, হ্যাঁ। আমি বলেছিলাম, হে আল্লাহ! আপনি পরকালে আমাকে যে সাজা দিবেন, তা এ ইহকালেই দিয়ে দিন। সে সময় রাসুল (সা.) বললেন, সুবহানাল্লাহ! তোমার এমন সামর্থ্য নেই যে, তা বহন করবে অথবা তুমি তা সহ্য করতে পারবে না। তুমি এমনটি বললে না কেন? হে আল্লাহ! আমাদের কল্যাণ দাও পৃথিবীতে এবং কল্যাণ দান কর পরকালেও। আর জাহান্নাম থেকে আমাদের রক্ষা করো। তিনি (বর্ণনাকারী) বলেন, তখন তিনি তার জন্য আল্লাহর কাছে দোয়া করেন। আর আল্লাহ তাকে সুস্থ করে দেন।’ (বুখারি, হাদিস : ৬৭২৮)