সবুজে বেষ্টিত মসজিদে কুবা। ছবি : সংগৃহীত

মসজিদে কুবার গুরুত্ব ইসলামে অনেক বেশি। কারণ, ইসলামের ইতিহাসে সবচেয়ে ফজিলতপূর্ণ ও মর্যাদাসম্পন্ন মসজিদ তিনটি। মক্কার মসজিদুল হারাম, মদীনার মসজিদে নববি ও জেরুজালেমের মসজিদুল আকসা। এই তিন মসজিদে সফরের ব্যাপারে আল্লাহর রাসুল (সা.) আলাদাভাবে গুরুত্ব দিয়ে নির্দেশনা দিয়েছেন।

আর এই তিন মসজিদের পর সর্বাধিক মর্যাদান মসজিদ হলো- মসজিদে কুবা। এই মসজিদে নামাজ আদায় করলে এক ওমরাহর সমপরিমাণ সওয়াব। ইসলামের ইতিহাসে নির্মিত প্রথম মসজিদ এটি। আল্লাহর রাসুল (সা.) হিজরতের সময় মদিনা গমনকালে এই মসজিদের নির্মাণ কাজে নিজে অংশ গ্রহণ করেন।

আল্লাহ তাআলা পবিত্র কোরআনে কুবার অধিবাসী ও মসজিদে কুবার প্রশংসা করে বলেন, ‘যে মসজিদ প্রথম দিন থেকে তাকওয়ার ওপর প্রতিষ্ঠিত সেখানে অবস্থান করা আপনার জন্য অধিক সঙ্গত। সেখানে এমন কিছু লোক রয়েছে যারা পবিত্রতা পছন্দ করে। আর আল্লাহ পবিত্র ব্যক্তিদের ভালোবাসেন।’ (সুরা তওবা, আয়াত : ১০৮)

মসজিদে কুবায় নামাজ পড়ার অনেক ফজিলতের কথা হাদিসে বর্ণিত হয়েছে। এক বর্ণনায় এসেছে, ‘নবী কারিম (সা.) প্রতি শনিবার কুবা মসজিদে আসতেন,  কখনও পায়ে হেঁটে, কখন আরোহণ করে।’ (সহিহ বুখারি, খণ্ড : ০২, হাদিস : ১১১৯)

উসাইদ ইবনে খুদাইর (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে আছে, ‘মসজিদে কুবায় নামাজ, ওমরাহর সমতুল্য।’ (তিরমিজি, হাদিস : ২২৪; ইবনে মাজাহ, হাদিস : ১৪১১)

নাফি (রহ.) হতে বর্ণিত আছে যে, ‘আবদুল্লাহ ইবনে উমার (রা.) দুইদিন ছাড়া অন্য সময়ে চাশতের সালাত আদায় করতেন না। এক. যেদিন তিনি মক্কা্য় আগমন করতেন; তাঁর অভ্যাস ছিল যে, তিনি চাশতের সময় মক্কায় আগমন করতেন। তিনি বাইতুল্লাহ তাওয়াফ করার পর মাকামে ইব্রাহিমের পেছনে দাঁড়িয়ে দুই রাকাত সালাত আদায় করতেন। দুই. আর যেদিন তিনি কুবা মসজিদে গমন করতেন। তিনি প্রতি শনিবার সেখানে গমন করতেন এবং সেখানে সালাত আদায় না করে— বেরিয়ে আসা অপছন্দ করতেন।’ নাফি (রহ.) আরও বলেন, তিনি (আবদুল্লাহ ইবনু উমর (রা.) হাদিস বর্ণনা করতেন যে, ‘আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কুবা মাসজিদ জিয়ারত করতেন; কখনো আরোহন করে, আর কখনো পদব্রজে।’ (বুখারি, হাদিস : ১১৯৩, ১১৯৪, ৭৩২৬) (আধুনিক প্রকাশনী, হাদিস : ১১১৪, ইসলামিক ফাউন্ডেশন, হাদিস : ১১১৮)

সাহাল ইবনে হানিফ (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে এসেছে, ‘যে ব্যক্তি নিজের ঘরে ভালোভাবে পবিত্রতা অর্জন করে (সুন্নত মোতাবেক অজু করে) মসজিদে কুবায় আগমন করে নামাজ আদায় করে তাকে একটি ওমরার সমপরিমাণ সওয়াব দান করা হবে।’ (সুনান ইবনে মাজাহ, খণ্ড : ০১, হাদিস : ১৪১১)