বিশেষ অবস্থায় নারীরা কোরআন পড়তে পারবেন?

প্রতি মাসের একটা নির্দিষ্ট সময়ে নারীদের বিশেষ অবস্থা থাকে। সেই অবস্থায় কি তারা কোরআন তেলাওয়াত করতে পারবেন? এমন প্রশ্নের উত্তর হলো- ঋতুবতী নারীদের জন্য কোরআনে কারিমের কোনো অংশই তেলাওয়াত করার অবকাশ নেই। ঋতুবতী নিজেও যেমন তেলাওয়াত করতে পারবে না, অন্যকেও কোরআন শিক্ষা দিতে পারবে না।

মা’মার (রহ.) বলেন, আমি বিখ্যাত তাবেয়ি ইমাম যুহরি (রহ.)-কে জিজ্ঞেস করলাম, ঋতুবতী নারী ও যাদের ওপর গোসল ফরজ হয়েছে— তারা কি আল্লাহর জিকির করতে পারবে? তিনি বললেন, হ্যাঁ। আমি জিজ্ঞেস করলাম, তারা কোরআন তেলাওয়াত করতে পারবে? তিনি বললেন, না। মা’মার বলেন, হাসান বসরি ও কাতাদা (রহ.) বলতেন, ঋতুবতী নারী ও যাদের ওপর গোসল ফরজ হয়েছে, তারা কোরআনের কোনো অংশই তেলাওয়াত করতে পারবে না।’ (মুসান্নাফে আবদুর রাজ্জাক : ১৩০২)

তাছাড়া তিরমিজি শরিফের একটি হাদিসে বর্ণিত হয়েছে, আবদুল্লাহ ইবনে উমর (রা.) বলেন, রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘ঋতুবতী নারী ও নেফাসক্রান্ত (সন্তান জন্ম পরবর্তী সময়ে) নারী কোরআনের কোনো অংশই পড়বে না।’ (তিরমিজি, হাদিস : ১৩১)

তবে কোনো নারী যদি পড়াতে বাধ্য হয়, তাহলে একান্ত প্রয়োজনে তেলাওয়াতের নিয়ত ছাড়া— কেবল এক-দুই শব্দ করে বলে দেওয়ার অবকাশ রয়েছে।

হানাফি ফিকহের প্রসিদ্ধ ফাতাওয়াগ্রন্থ ফাতাওয়া হিন্দয়াতে রয়েছে, ‘ঋতুবতী নারী, নেফাসগ্রস্ত নারী ও যাদের ওপর গোসল ফরজ হয়েছে— তারা কোরআনের কোনো অংশ, আয়াত বা তার আয়াতের খণ্ডিত অংশও তেলাওয়াত করতে পারবে না। তবে যদি আয়াতের খণ্ডিত অংশের মাধ্যমে তেলাওয়াত উদ্দেশ্য না হয় যেমন, শুকরিয়া আদায়ের জন্য আলহামদুলিল্লাহ বলা, কিংবা খাবারের শুরুতে বিসমিল্লাহ বলা ইত্যাদিতে কোনো অসুবিধা নেই।’ (ফাতাওয়া হিন্দিয়া : ১/৩৮)