অ্যাকুরিয়ামে মাছ পালন করা কি জায়েজ?

মানুষের নানা ধরনের শখ থাকে। অ্যাকুরিয়ামে মাছ পোষাও ঠিক তেমন একটি। এটি এখন শহর-নগর ও গ্রাম-গঞ্জ সবখানে বেশ জনপ্রিয়। হোটেল-রেস্টুরেন্ট ও বাসাবাড়িতে এখন অ্যাকুরিয়াম দেখা যাওয়া— খুব স্বাভাবিক ব্যাপার। প্রশ্ন হলো- এভাবে শখের বশে মাছ পোষা কি শরিয়তসম্মত? এটা কি জায়েজ হবে?

এর উত্তর হলো- অ্যাকুরিয়ামে মাছ পোষার ব্যাপারে শরিয়তে কোনো ধরনের নিষেধাজ্ঞা নেই। সাহাবায়ে কেরাম শৌখিনতা ও শখের বশে বিভিন্ন ধরনের প্রাণী পুষেছেন বলে বিভিন্ন কিতাবপত্র ও ঐতিহাসিক গ্রন্থগুলোতে বর্ণনা পাওয়া যায়।

মাছের পরিচর্যা ও নিয়মিত যন্ত্র নেওয়া

অ্যাকুরিয়ামে মাছ পালন করতে গেলে অবশ্যই মাছের পরিচর্যা জরুরি। চাহিদামাফিক নিয়মিত খাবার দেওয়া, নিয়মতান্ত্রিক পানি পরিবর্তন করা ইত্যাদিতে যেন কোনো অবহেলা না হয়, সেদিকে লক্ষ রাখাটা জরুরি।

আনাস (রা.) বলেন, ‘রাসুল (সা.) আমার ছোট ভাই আবু উমায়েরকে খুব পছন্দ ও স্নেহ করতেন। আমার এখনো মনে আছে, সে তখন মায়ের বুকের দুধ ছেড়েছে মাত্র– এমন শিশু। রাসুল (সা.) তার কাছে আসতেন এবং বলতেন, ‘হে আবু উমায়ের! কী করেছে তোমার নুগায়ের?’ নুগায়ের হলো এমন একটি ছোট পাখি, যেটির সঙ্গে আবু উমায়ের খেলা করত। নুগায়ের মারা যাওয়ায় সে খুব চিন্তিত ও ব্যথিত ছিল। তাই রাসুল (সা.) তার সঙ্গে খেলা করতেন।’ (বুখারি, হাদিস : ৬২০৩)

অ্যাকুরিয়ামে মাছ পালনে যখন সওয়াব লাভ

যথাযথভাবে খাবার দিলে এবং পরিচর্যা ও যত্ন নিলে সওয়াব লাভেরও সম্ভাবনা রয়েছে। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে এসেছে, সাহাবায়ে কেরাম রাসুল (সা.)-কে জিজ্ঞাসা করেন, ‘হে আল্লাহর রাসুল! জীবজন্তুর জন্যও কি আমাদের পুরস্কার দেওয়া হবে?’ রাসুল (সা.) বলেন, ‘হ্যাঁ, প্রত্যেক দয়ার্দ্র হৃদয়ের অধিকারীদের জন্য পুরস্কার রয়েছে।’ (বুখারি, হাদিস : ২৩৬৩)

আর যথাযথভাবে খাবার না দিলে এবং পরিচর্যা ও যত্ন না নিলে, অ্যাকুরিয়ামে মাছ পোষা জায়েজ নেই। আবদুল্লাহ ইবনে উমর (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে রাসুল (সা.) বলেন, ‘এক নারীকে একটি বিড়ালের জন্য শািস্ত দেওয়া হয়েছে। সে নারী বিড়ালটি বেঁধে রেখেছিল এবং পরে সেটি মারা গিয়েছিল। নারীটিকে এই কারণে জাহান্নামে প্রবেশ করানো হয়। সে যখন বিড়ালটি বেঁধে রেখেছিল, তখন তাকে পানাহার করাত না এবং ছেড়েও দিত না– যাতে কীটপতঙ্গ ধরে খাবে।’ (বুখারি, হাদিস : ২৩৬৫; মুসলিম, হাদিস : ২২৪২; দারেমি, হাদিস : ২৮১৪)