মাত্র ৪ মাসে কোরআন মুখস্থ করল স্কুলছাত্র সাফওয়ান। ছবি : সংগৃহীত

তের বছর বয়সী সাফওয়ান। বাবার চাকরির সুবাদে থাকত চট্টগ্রামের পাহাড়তলীতে। বাসার পাশের পাহাড়তলী উচ্চ বিদ্যালয়ের ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়াশোনা চলত তার। কিন্তু করোনা মহামারিতে স্কুলের ছিল দীর্ঘ বিরতি। আর এই সময়টি কাজে লাগানোর চিন্তা এলো মাথায়। পরিবারের সঙ্গে পরামর্শ করে ঠিক করল— অলস বসে না থেকে বিরতিতে পবিত্র কোরআন মুখস্থ করে হাফেজ হবে। 

পাহাড়তলী ছেড়ে চলে আসা হয়েছে জন্মস্থান আনোয়ারায়। হাফেজ হওয়ার স্বপ্ন নিয়ে ভর্তি হল আনোয়ারার আল জামেয়া আরবিয়া ইয়াহইয়াউল উলুম (বোয়ালিয়া হোসাইনিয়া নতুন মাদরাসা)-এর হিফজ বিভাগে। অবাককরা বিষয় হলো- মাত্র ১২১ দিনে পুরো কোরআনুল কারিম মুখস্থ করে হাফেজ হলো এই কিশোর। গত ৮ নভেম্বর তার হিফজ সম্পন্ন হয়। 

মেধাবী এ কিশোর সম্পর্কে জানতে চেয়েছিলাম তার বড় ভাই হাফেজ মুহাম্মদ সুলাইমানের কাছে। তিনি বলেন, আমরা চার বোন ও দুই ভাইয়ের মধ্যে সফওয়ান সবার ছোট। খুবই নরম প্রকৃতির ও। স্কুলে পড়তে চাইত। কিন্তু এক্ষেত্রে বলা যায়-করোনা আমাদের জন্য ‘কল্যাণ’ নিয়ে এসেছে। করোনার বিরতিতে ও হিফজ পড়তে আগ্রহ প্রকাশ করে। পরে আমরা পরিবারের সবাই ওকে মাদরাসায় ভর্তি করাই এবং বিস্ময়করভাবে মাত্র ১২১ দিনে হিফজ শেষ করল আলহামদুলিল্লাহ! ওর এই কীর্তিতে আব্বু-আম্মু এতটাই খুশি হয়েছে যে, গতকাল দুইজনের চোখেই আনন্দাশ্রু ছিল।

আরও পড়ুন : অজু ছাড়া কোরআন স্পর্শ করা যাবে কি?

সাফওয়ান কি এখন মাদরাসায়-ই পড়বে নাকি স্কুলে ফিরে যাবে— বড় ভাইকে এ প্রশ্ন করলে তার উত্তর, ‘ও এখন দুইটিই চালিয়ে যাবে; সাধারণ শিক্ষার পাশাপাশি সফওয়ান ধর্মীয় শিক্ষাও অর্জন করতে চায়। সবার কাছে তার সফলতার জন্য দোয়া চাই।’

সাফওয়ানের হিফজ বিভাগের শিক্ষক হাফেজ তালহা বলেন, ‘আমাদের এখানে ভর্তি হওয়ার পর থেকেই দেখি-ও খুব মেধাবী ও শান্ত স্বভাবের ছেলে। প্রতিদিন সে পবিত্র কোরআনের ৫ থেকে ৭ পৃষ্ঠা মুখস্থ শোনাত। আমরা এরকম মেধাবী খুব কম ছাত্রই পাই। ওকে নিয়ে আমরা গর্বিত। আল্লাহ ওকে অনেক বড় বানাবেন-এই দোয়া করি।’

আরও পড়ুন : কোরআন তেলাওয়াত শেষে দোয়া পড়তে হবে কি?

এদিকে স্কুল পড়ুয়া একজন শিক্ষার্থীর জন্য মাত্র ১২১ দিনে (চার মাসে) হাফেজ হওয়ার প্রেরণার উৎস সম্পর্কে সাফওয়ান বলেন— 

বেলায়েত হুসাইন।। অতিথি লেখক ও মাদরাসা-শিক্ষক