ছবি : সংগৃহীত

কোনো ব্যক্তির আমলে যদি ইচ্ছাকৃত রিয়া থাকে, তাহলে তা যতই অল্প বা ছোট হোক— আল্লাহ তাআলা সে আমল কবুল করেন না। তাই প্রত্যেক মুমিনের উচিত— তার আমল যেন নিরঙ্কুশভাবে আল্লাহর জন্য হয়।

হাদিসে কুদসিতে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘আমি শরিককারীদের শরিক থেকে অমুখাপেক্ষী। যে ব্যক্তি কোনো আমল করল এবং তাতে আমার সঙ্গে কাউকে শরিক করল, আমি তাকে ও যাকে সে শরিক করল তাকে প্রত্যাখ্যান করি।’ (সহিহ মুসলিম, হাদিস : ৩৫২৮)

কিন্তু কোনো ব্যক্তির রিয়া যদি অনিচ্ছায় হয়, আর সে তা থেকে বিরত থাকার চেষ্টা করে এবং এ জন্য অনুতপ্ত হয়; তবে গ্রহণযোগ্য মত হলো— আশা করা যায়, আল্লাহ তাআলা তার ইবাদত কবুল করবেন। সে ইবাদতের দায় থেকে মুক্ত হয়ে যাবে। তবে তার প্রতিদান দেওয়া হবে কিনা কিং দেওয়া হলেও তা কী হবে, এসব আল্লাহ তাআলাই ভালো জানেন।

লোক দেখানো বেশি আমল নিষিদ্ধ

কেউ যদি নির্ধারিত ইবাদত পালনে বেশি করে কিছু করে— তারা হয়তো লোক দেখানোর জন্য এমনটি করে থাকে; যেন মানুষ তাদের সৎ ও আল্লাহভীরু মনে করে, অথচ তারা মোটেই এমন নয়। মহান আল্লাহ বলেন, ‘যে ব্যক্তি তার প্রভুর সঙ্গে সাক্ষাতের আশা করে সে যেন নেক কাজ করে এবং তার প্রতিপালকের ইবাদতে কাউকে শরিক না করে।’ (সুরা কাহফ, আয়াত : ১১০)। উল্লিখিত আয়াতের ব্যাখ্যায় তাফসিরবিদরা বলেন, ‘সে যেন লোক দেখানোর জন্য আমল না করে।’

এমন লোকদের ব্যাপারে আল্লাহর (সা.)-এর ঘোষণা হলো, ‘যা তোমাকে দেওয়া হয়নি তা দেওয়া হয়েছে বলা এমন প্রতারকের কাজ যে প্রতারণার জন্য দুই প্রস্থ মিথ্যার পোশাক পরিধান করে।’ (সহিহ বুখারি, হাদিস : ৫২১৯)।

রিয়া বা প্রদর্শনপ্রিয়তা থেকে আত্মরক্ষার জন্য আধ্যাত্মিক সাধকরা কয়েকটি প্রচেষ্টার কথা বলেছেন। তা হলো—

এক. ইবাদতের সময় আল্লাহর অস্তিত্বের স্মরণ করা। এটা চিন্তা করা যে আল্লাহ আমার মনের খবর জানেন; আমি কেন করছি, কী করছি সব তিনি দেখছেন। হাদিসে যেমন বর্ণিত হয়েছে, ‘তুমি আল্লাহর ইবাদত এমনভাবে কোরো যেন তুমি তাঁকে দেখছ। যদি তা সম্ভব না হয়, তবে তিনি তোমাকে দেখছেন।’ (সহিহ বুখারি, হাদিস : ১)

দুই. রিয়ার ভয়াবহতার কথা স্মরণ করা। প্রদর্শন আল্লাহর ক্রোধের কারণ, তা সব সময় মনে রাখা। তিন. রিয়ামুক্ত আমলের পুরস্কারের কথা স্মরণ করা এবং তা অর্জনের প্রত্যয় গ্রহণ করা। চার. আল্লাহর কাছে অনুতপ্ত হয়ে ক্ষমা যাওয়া, যেন তিনি অনুগ্রহ করে আমলটি কবুল করে নেন।