প্রতীকী ছবি

মুমিনের প্রতিটি কাজ ও মুহূর্ত আমল ও ইবাদত। যখন সবকিছু আল্লাহর হুকুম ও রাসুল (সা.)-এর সুন্নত অনুযায়ী হয়, তখন সবকিছু ইবাদতে পরিণত হয় এবং সওয়াবযোগ্য হয়। আল্লাহ তাআলা বান্দার জন্য এর সবকিছু পুণ্যময় করে দেন।

অন্য সবকিছুর মতো প্রত্যেক নামাজের পর কিছু আমল রয়েছে। আমলগুলো করলে বান্দার জীবন সুন্দর, বরকতময় ও সুশৃঙ্খল হয়। আল্লাহর রাসুল (সা.) বলেন, ‘প্রত্যেক ফরজ নামাজের শেষে কিছু দোয়া আছে, যে ব্যক্তি ওইগুলো পড়ে বা কাজে লাগায়— সে কখনো ক্ষতিগ্রস্থ হয় না। (সহিহ মুসলিম, হাদিস : ১২৩৭)

এখানে পাঠকদের জন্য প্রত্যেক নামাজের পরের তাসবিহ, জিকির ও আমল উল্লেখ করা হলো।

এক.
রাসুল (সা.) প্রত্যেক ফরজ নামাজ শেষে ৩ বার আসতাগফিরুল্লাহ্‌ বলতেন। (মুসলিম, হাদিস : ১২২২)

দুই.
তারপর ‘আল্লাহুম্মা আনতাস সালাম ওয়া মিনকাস সালাম, তাবারকতা ইয়া যাল-জালা-লী ওয়াল ইকরাম’ – এটি পরতেন । (মুসলিম, হাদিস : ১২২১)

তিন.
সুবহানাল্লাহ [৩৩ বার], আলহাদুলিল্লাহ [৩৩ বার], আল্লাহু আকবার [৩৩ বার], [লা-ইলা-হা ইল্লাল্লাহু ওয়াহদাহু লা-শারিকা লাহু; লাহুল মুলকু; ওয়ালাহুল হামদু; ওয়াহুওয়া আলা- কুল্লি শাইয়িন ক্বাদির) (১ বার)। এগুলো পাঠে গুনাহসমূহ সমুদ্রের ফেনারাশির মতো অসংখ্য হলেও ক্ষমা করে দেওয়া হয়। (মুসলিম, হাদিস : ১২৪০)

চার.
রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি প্রতেক ফরজ নামাজের পর আয়াতুল কুরসি পড়বে, তার জন্য জান্নাতে প্রবেশের পথে মৃত্যু ব্যতীত আর কোনো বাঁধা থাকবে না।’ (নাসায়ি, হাদিস : ৯৪৪৮; তাবারানি, হাদিস : ৭৮৩২)

পাঁচ.
‘আল্লাহুম্মা আজিরনী মিনান নার’ ৭ বার, ফজর ও মাগরিবের পর। সে দিন বা সে রাতে মারা গেলে আল্লাহ তাকে জাহান্নাম থেকে রক্ষা করবেন। (আবু দাউদ, হাদিস : ৫০৮০)

ছয়.
সুরা ইখলাস, ফালাক্ব ও সুরা নাস, প্রত্যেকটি ৩ বার করে, ফজর ও মাগরিবের পর। রাসুল (সা.) বলেন, সকাল-সন্ধ্যায় এগুলো পাঠ করলে তোমার আর কিছুরই দরকার হবে না।

সাত.
দরুদ শরিফ ১০ বার, ফজর ও মাগরিবের পর। কেয়ামতের দিন রাসুল (সা.)-এর শাফাআত লাভ হবে।

আট.
রাদ্বিতু বিল্লাহি রাব্বা, ওয়াবিল ইসলামি দ্বীনাঁও, ওয়াবি মুহাম্মাদিন নাবিয়্যা— এই দোয়াটি ৩ বার, ফজর ও মাগরিবের পর। এটা পড়লে রাসুল (সা.) হাত ধরে জান্নাতে প্রবেশ করাবেন, আল্লাহ উক্ত ব্যক্তিকে সন্তুষ্ট করবেন। (ইবনে আবি শাইবা, হাদিস : ০৬/৩৬)

নয়.
রাসুল (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি দৈনিক ১০০ বার বলে,
«سُبْحَانَ اللَّهِ وَبِحَمْدِهِ» (সুব্‌হানাল্লা-হি ওয়াবিহামদিহি) তার পাপগুলো মুছে ফেলা হয়, যদিও তা সাগরের ফেনারাশির সমান হয়ে থাকে। (বুখারি, হাদিস : ৬৪০৫; মুসলিম, হাদিস : ২৬৯১)

মহান রাব্বুল আলামিন আল্লাহ তাআলা আমাদের সবাইকে উক্ত আমলগুলো যথাযথভাবে পালন করার তাওফিক দান করুন। আমিন।