ছবি : সংগৃহীত

প্রশ্ন: প্রতিবন্ধী ব্যক্তি বসে বসে নামাজ পড়ার কারণে কেবল অর্ধেক সওয়াব পাবে? ব্যাপারে আপনাদের অভিমত কী? আমার মত যাদের অবস্থা— তাদের ক্ষেত্রে ইসলাম কী বলে?

উত্তর :
এক.

আপনার ভাষ্যমতে আপনি শারিরিক প্রতিন্ধী। এর মাধ্যমে আল্লাহ্‌ আপনাকে পরীক্ষা করছেন। তার মানে এই নয় যে, আল্লাহ্‌ আপনাকে পছন্দ করেন না কিংবা ভালোবাসেন না। বরং হতে পারে এর বিপরীতটাই ঠিক। আনাস (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে রাসুল (সা.) বলেন, ‘নিশ্চয় বিপদ যত বড় প্রতিদান তত বড়। নিশ্চয় আল্লাহ কোনো জাতিকে ভালবাসলে তাদের পরীক্ষা করেন। অতএব, যে সন্তুষ্ট হয় তার জন্য রয়েছে সন্তুষ্টি। আর যে অসন্তুষ্ট হয়, তার জন্য রয়েছে অসন্তুষ্টি।’ (সুনানে তিরমিজি, হাদিস : ২৩৯৬; সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদিস : ৪০৩১)

বিপদগ্রস্ত ধৈর্যশীল ও সওয়াবপ্রত্যাশী গুনাহহীন অবস্থায় আল্লাহর সঙ্গে সাক্ষাৎ করবে। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত রাসুল (সা.) বলেন, ‘মুমিন নর ও নারীর নিজের জান, সন্তান ও সম্পদের উপর বিপদ আসতেই থাকে; এক পর্যায়ে সে এমন অবস্থায় আল্লাহ্‌র সঙ্গে সাক্ষাৎ করে যে, তার কোনো গুনাহ নেই।’ (সুনানে তিরমিজি, হাদিস : ২৩৯৯)

এ কারণে ধৈর্যশীল মানুষেরা কেয়ামতের দিন মহান মর্যাদার অধিকারী হবেন। এমনকি দুনিয়াতে যারা সুস্থ-সবল ছিল, তারা কামনা করবে- যদি তারাও দুনিয়াতে তাদের মত হতো। জাবের (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে রাসুল (সা.) বলেন, ‘কেয়ামতের দিন পরীক্ষার শিকার লোকদের যখন পুরস্কার দেওয়া হবে, তখন সুস্থ লোকেরা কামনা করবে- যদি দুনিয়াতে তাদের চামড়াগুলো কাঁচি দিয়ে কাটা হত।’ (সুনানে তিরমিজি, হাদিস : ২৪০২)

দুই.
বসে নামায পড়ার কারণে প্রতিবন্ধী ব্যক্তি অর্ধেক সওয়াব পাবে না। বরং পরিপূর্ণ সওয়াব লাভ করবেন। আর অর্ধেক সওয়াব পাবে ওই ব্যক্তি, যে ব্যক্তি দাঁড়িয়ে নামাজ পড়ার সক্ষমতা থাকা সত্ত্বেও বসে বসে নামাজ আদায় করে। অবশ্য কোনো রোগের ওজরের কারণে বসে নামাজ পড়লে, পরিপূর্ণ সওয়াব লাভ করবে।

ইমাম নববী (রহ.) বলেন, গোটা উম্মাহ একমত যে, অক্ষমতার কারণে কেউ ফরজ নামাজে দাঁড়াতে না পারলে তাকে পুনরায় নামাজ আদায় করতে হবে না। আমাদের মাজহাবের আলেমগণ বলেছেন, এ কারণে তার নামাজের সওয়াব কোনো রূপ কমতি করা হবে না। কারণ, তিনি অপারগতার শিকার। এক হাদিসে  রাসুল (সা.) বলেন, ‘যদি কোনো বান্দা রোগে আক্রান্ত হয় কিংবা সফরে থাকে, তাহলে সুস্থ ও মুকিম অবস্থায় সে যে আমলগুলো করত; তার জন্য সেই আমলগুলো লেখা হবে।’ (সহিহ বুখারি; আল-মাজমু : ৪/৩১০)