দুই ট্রানজিট ধরে কোনিয়ায় পৌঁছে আলজেরিয়া, সেনেগালের কারাতে খেলোয়াড়রা খানিকটা হাফ ছেড়ে যেন বাঁচলেন দীর্ঘ ভ্রমণ শেষে। তবে এ যেন ‘শেষ হয়েও হইল না শেষ’ গল্প। কোনিয়া বিমানবন্দরে এক ঘণ্টার মতো অপেক্ষা করতে হয়েছে ভিলেজে শাটল বাসের জন্য।

আলজেরিয়া, সেনেগালের খেলোয়াড়েরা ক্লান্ত হয়ে বসে পড়ছেন তখন এই প্রতিবেদক ভলান্টিয়ারদের ব্যস্ত মেইন প্রেস সেন্টার বোঝাতে। গেমসের অন্যতম প্রাণ প্রেস সেন্টার। অথচ ভলান্টিয়ার ও গেমস সংশ্লিষ্টরা এই প্রতিবেদকের কাছে প্রথম শুনেছেন প্রেস সেন্টারের কথা। বন্দরে থাকা ভলান্টিয়ার ও উপস্থিত কর্তাব্যক্তিদের কয়েকবার বুঝিয়ে বলার পরেও প্রেস সেন্টারের পরিবর্তে ভিলেজের বাসে উঠতে হয়।

বিমানবন্দর থেকে ৪০ মিনিট বাস ভ্রমণ করে ভিলেজে এসে দেখা মিলল অন্য চিত্র। সেখানে কর্মরতরা প্রেস সেন্টার কি জানেনই না। একজন আধা ইংরেজি জানা ভলান্টিয়ার তুলে দিলেন গেমসের আরেক গাড়িতে। সেই গাড়ি গিয়ে থামল টেবিল টেনিস স্টেডিয়ামে।

টেবিল টেনিসের গেটের সামনে ঢুকতেই উজবেক অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশনের কর্মকর্তার কড়া কণ্ঠস্বর। তিনি যেতে চেয়েছিলেন সাঁতারে, বাস তাকে নিয়ে এসেছে টেবিল টেনিসে। উজবেক কর্তার রাখঢাক দেখে নিজের দুঃখ কিছুটা বিলীন হলো।

টেবিল টেনিস স্টেডিয়ামে গেমসের বাস যখন থামল তখন বাংলাদেশের মৌ এককে কোয়ার্টার ফাইনালে ইরানের বিরুদ্ধে খেলছিলেন। সেই খেলা দেখতে এসেছিলেন বাংলাদেশের শেফ দ্য মিশন সিরাজউদ্দীন মোহাম্মদ আলমগীর। তিনি উপস্থিত ভলান্টিয়ার ও কর্তাদের সঙ্গে ১৫ মিনিট আলাপের পর উদ্ধার করলেন মেইন প্রেস সেন্টারের ঠিকানা।

টেবিল টেনিস থেকে প্রেস সেন্টার আবার চালকরা চিনেন না। গুগল ম্যাপে ও জিজ্ঞেস করে করে অবশেষে প্রেস সেন্টারে পৌঁছানো গেল। শহরের একটু ভেতরে নিরিবিলি এক জায়গায় প্রেস সেন্টার। চার তলা ভবনে বেশ সুসজ্জিত। এরপরও গেমসের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট অনেকেই জানেন না প্রেস সেন্টার কোথায়। এই প্রতিবেদকের মতো অভিজ্ঞতা অন্য দেশের সাংবাদিকদেরও।

প্রেস সেন্টার থেকে অ্যাক্রিডিটেশন কার্ড সংগ্রহের পর পরই অ্যাথলেটিকসের মাঠে যাওয়ার তাড়া। স্থানীয় সময় বিকেল ৩টায় ছিল ১০০ মিটার স্প্রিন্ট। প্রেস সেন্টার থেকে অ্যাথলেটিক্স মাঠে গেমসের শাটল বাসে পৌঁছানো হয় সঠিক সময়ে। ফেরার পথে ঘটে বিপত্তি। এক-দেড় ঘণ্টা অপেক্ষা বাসের জন্য। অপেক্ষা করতে করতে শোনা গেল তাজিকিস্তান দলের শেফ দ্য মিশনের আক্ষেপ। তার জন্য নির্ধারিত প্রাইভেট কার ও ভলান্টিয়ার দুই ঘণ্টা ধরে উধাও। কোনো হদিস নেই। বাংলাদেশ দলের সঙ্গে আসা কর্মকর্তারাও গত কয়েক দিনে এমন অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হয়েছেন। বিশেষ করে ইংরেজিতে বোঝানো বেশ ঝক্কি। গেমস সবে শুরু। বাকি দিনগুলো যে নানা রোমাঞ্চ নিয়ে অপেক্ষা করছে তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না।

এজেড/এসএসএইচ