বাংলাদেশকে ২১ রানে হারাল শ্রীলঙ্কা

পাকিস্তানের বিপক্ষে বড় হার দিয়ে সুপার ফোর শুরু করেছে বাংলাদেশ। তাই ফাইনালের আশা বাঁচিয়ে রাখতে আজ জয়ের বিকল্প নেই টাইগারদের। এমন গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে শ্রীলঙ্কার দেওয়া ২৫৮ রানের লক্ষ্যে ব্যাটিং করছে সাকিব আল হাসানের দল।

শ্রীলঙ্কা- ২৫৭/৯ (৫০.০ ওভার)

বাংলাদেশ- ২৩৬/১০ (৪৮.১ ওভার)

২১ রানে হেরে গেল বাংলাদেশ

শেষ পর্যন্ত আর কোনো নাটকীয়তা হয়নি। মাথিশা পাথিরানার করা ইয়র্কার বলে নাসুমের স্টাম্প উড়ে যাওয়ার মাধ্যমেই শেষ বাংলাদেশের ইনিংস। ২৩৬ রানে থেমেছে সাকিবের দল, যা কার্যত বাংলাদেশের ফাইনাল খেলার স্বপ্নও শেষ করে দিয়েছে।

‘শেষ ভরসা’ হৃদয়ও শেষ

বাংলাদেশের আশার প্রদ্বীপ হয়ে এক প্রান্তে জ্বলছিলেন হৃদয়। লাল-সবুজের সেই আশার প্রদ্বীপ টুকুও নিভিয়ে দিলেন মাহিশ থিকশানা।

চাপেই শেষ শামীম

বড় শট খেলার সামর্থ্য আছে, বরাবরই সেটার জন্য প্রশংসা কুড়িয়েছেন শামীম হোসেন। কিন্তু আজ প্রয়জনীয় মুহূর্তে পারলেন না। রানের গতি বাড়ানোর প্রয়জন ছিল যখন, তখন উইকেটে এসে ১০ বলে ৫ রান করে উল্টো দলের বিপদ বাড়িয়েছেন।

হৃদয়ের ফিফটি

এক প্রান্তে একাই লড়ছেন হৃদয়। বাকিদের আসা-যাওয়ার মাঝেও দলকে লড়াইয়ে রেখেছেন এই মিডল অর্ডার ব্যাটার। ইতোমধ্যেই পেয়েছেন হাফ সেঞ্চুরির দেখাও। এই মাইলফলক ছুঁতে খরচ করেছেন ৭৩ বল। 

ফিরলেন মুশফিক

হৃদয়কে নিয়ে চাপ সামলে দলকে টেনে তুলছিলেন মুশফিক। কিন্তু তাকে ফিরতে হলো রান রেট বাড়াতে গিয়ে.৩৮তম ওভারে জায়গা বানিয়ে খেলতে চেয়েছিলেন মুশফিক, কিন্তু মিড অফে কাসুন রাজিতার হাতে ধরা পড়েন। বাংলাদেশকে আশা জোগানো জুটি থামল ৭২ রানে। মুশফিক থেমেছেন ২৯ রানে। 

আশা দেখাচ্ছেন হৃদয়-মুশফিক

প্রথম দশ ওভারে কোনো উইকেট না হারিয়ে ৪৭ রান তুলেছিল বাংলাদেশ। পরের দশ ওভারে ৩৭ রান তুলতেই হারিয়েছে ৪ উইকেট। দ্রুত টপ অর্ডারের চার ব্যাটারকে হারিয়ে বেশ চাপে পড়েছিল সাকিবের দল। তবে মুশফিক-হৃদয় জুটি সেখান থেকে দলকে টেনে তুলছেন। ইতোমধ্যেই পঞ্চম উইকেটে অবিচ্ছিন্ন থেকে তারা যোগ করেছেন ৫৬ রান। ফলে কিছুটা হলেও ঘুরে দাঁড়িয়েছে বাংলাদেশ। 

ব্যর্থ লিটন, ব্যাটিং বিপর্যয়ে বাংলাদেশ

জ্বর থেকে সেরে দলের সঙ্গে যোগ দিয়েছেন বেশ কয়েক দিনই হয়ে গেছে। কিন্তু লিটন যেন স্বরূপে ফিরতে পারছেন না। দুনিথ ভেল্লালাগের অফ স্টাম্পের বাইরে ঝুলিয়ে দেওয়া বল। লিটন জায়গা থেকেই বড়সড় ড্রাইভ করতে গেলেন। ব্যাটের নিচের কানায় লেগে ক্যাচ গেছে কুশল মেন্ডিসের হাতে। প্রথম দফা ধরতে না পারলেও কোলের ওপর আটকেছে ক্যাচ। ২৪ বলে ১৫ রানে শেষ লিটনের ইনিংস।

পারলেন না সাকিবও, বিপর্যয়ে বাংলাদেশ

দুই ওপেনারকে হারিয়ে দল যখন চাপে, তখন উইকেটে আসেন সাকিব। অধিনায়কের কাঁধে তখন গুরু দায়িত্ব। কিন্তু ব্যাট হাতে ব্যর্থ হলেন তিনি। উল্টো দলের বিপদ বাড়িয়ে সাজঘরে ফিরেছেন ৩ রান করে। ১৬তম ওভারে পাথিরানার অফ স্টাম্পের বাইরের বলে কাট করতে গিয়ে উইকেটের পেছনে ধরা পড়েন। আম্পায়ার শুরুতে আউট না দিলেও রিভিউ দেখে আঙুল তুলতে বাধ্য হয়েছেন।

ব্যর্থ নাঈম, চাপে বাংলাদেশ

শুরু থেকেই অস্বস্তিতে ভুগছিলেন নাঈম। পাওয়ার প্লেতে মিরাজ এক প্রান্তে রানের চাকা সচল রাখার কারণে খুব একটা চাপে ছিল না দল। তবে মিরাজ ফেরার পর সেই চাপের ভার আর বইতে পারলেন না এই ওপেনার। ১৪তম ওভারে শানাকার বাউন্সারে অযথা শট খেলতে গিয়ে উইকেট বিলিয়ে দিলেন। তার ২১ রানের ইনিংসের সমাপ্তি ঘটেছে যেভাবে, সেটাকে দৃষ্টিকটু বলা ছাড়া উপায় নেই। আর তার বিদায়ে ৫ রানের ব্যবধানে দুই ওপেনারকে হারিয়ে কিছুটা হলেও চাপে পড়েছে বাংলাদেশ।

ইনিংস বড় করতে পারলেন না মিরাজ

পাওয়ার প্লের পরের ওভারেও পাথিরানাকে দারুণ এক ফ্লিকে বাউন্ডারি হাঁকিয়ে ছিলেন মিরাজ। এমন শুরু পেয়েও ইনিংস বড় করতে পারলেন না তিনি। ১২তম ওভারের প্রথম বলটি খাটো লেন্থে করেছিলেন শানাক। নিচু হয়ে আসা সেই বলে পুল করেই যেন ভুল করেন মিরাজ। মিডউইকেটে সফট ডিসমাল হওয়ার আগে তার ব্যাট থেকে এসেছে ২৯ বলে ২৮ রান।

নাঈম-মিরাজে ভালো শুরু বাংলাদেশের

মাঝারি মানের লক্ষ্য তাড়ায় শুরুটা ভালোই করেছেন দুই ওপেনার মেহেদি হাসান মিরাজ ও নাঈম শেখ। বিশেষ করে মিরাজ দ্রুতই নিজেকে উইকেটের সঙ্গে মানিয়ে নিয়েছেন। পাওয়ার প্লের সুবিধা নিয়ে ফাঁকা জায়গা দিয়ে দারুণ কিছু শট খেলেছেন। প্রথম পাওয়ার প্লেতে কোনো উইকেট না হারিয়ে ৪৭ রান তুলেছে বাংলাদেশ।

২৫৭ রানে থামল শ্রীলঙ্কা

বাংলাদেশের সঙ্গে আগের ম্যাচেও হাফ সেঞ্চুরি পেয়েছিলেন সামাবিক্রমা। হয়েছিলেন দলের সেরা স্কোরার। এবার আরও একবার বাংলাদেশকে পেয়ে জ্বলে ওঠলেন তিনি। খানিকটা চাপ নিয়েই উইকেটে এসেছিলেন। সেখানে দাঁড়িয়েও খেলেছেন দারুণ কিছু শট। হাফ সেঞ্চুরি ছুঁতে খরচ করেছেন মাত্র ৪৫ বল। সেঞ্চুরিটাও পেতে পারতেন। তার কপালে ছিল না বলেই হয়নি! ইনিংসের শেষ বলে আউট হওয়ার আগে তিনি নামের পাশে যোগ করেছেন ৭২ বলে ৯৩ রান।

শানাকাকে ফেরালেন হাসান 

সামারাবিক্রমা ও শানাকার জুটি হতাশ করছিল বাংলাদেশকে। ৪৭তম ওভারে এসে সেটি ভাঙলেন হাসান মাহমুদ। ফুললেংথের বলে আগে থেকেই স্কুপ করতে উদ্যত শানাকা স্টাম্পে ডেকে এনেছেন বল। শ্রীলঙ্কা অধিনায়ক ৩২ বলে করেছেন ২৪ রান।

সামাবিক্রমার ফিফটি

বাংলাদেশের সঙ্গে আগের ম্যাচেও হাফ সেঞ্চুরি পেয়েছিলেন। হয়েছিলেন দলের সেরা স্কোরার। এবার আরও একবার বাংলাদেশকে পেয়ে জ্বলে ওঠলেন সামারাবিক্রমা। খানিকটা চাপ নিয়েই উইকেটে এসেছিলেন। সেখানে দাঁড়িয়েও খেলেছেন দারুণ কিছু শট। হাফ সেঞ্চুরি ছুঁতে খরচ করেছেন মাত্র ৪৫ বল।

ধানাঞ্জয়াকে দাঁড়াতেই দিলেন না হাসান

আসালাঙ্কা দ্রুত ফেরার পর ধানাঞ্জয়া ডি সিলভার কাঁধে দায়িত্ব ছিল। তবে তিনিও সাদিরা সামাবিক্রমাকে সঙ্গ দিতে পারলেন না। ৩৭তম ওভারের প্রথম বলটি অফ স্টাম্পের বাইরে গুড লেন্থে করেছিলেন হাসান। সেখানে কাট করতে গিয়ে উইকেটের পেছনে ধরা পড়েছেন এই মিডল অর্ডার ব্যাটার। সাজঘরে ফেরার আগে তার ব্যাট থেকে এসেছে ১৬ বলে ৬ রান। 

সাকিবের পরিকল্পনায় সফল তাসকিন

শরিফুলকে সরিয়ে তসকিনকে আক্রমণে নিয়ে আসার কারণ ছিল উইকেটে বাঁহাতি ব্যাটার চারিথ আসালঙ্কা। অধিনায়কের সেই পরিকল্পনার সফল বাস্তবায়ন করলেন ডানহাতি এই পেসার। তাসকিনের স্লোয়ারে তুলে মারতে চেয়েছিলেন আসালঙ্কা। কিন্তু টাইমিং হয়নি। মিড অনে থাকা সাকিব তার ডানদিকে ছুটে নিয়েছেন ভালো ক্যাচ। আসালাঙ্কা থেমেছেন ২৩ বলে ১০ রান করে। 

মেন্ডিসকে ফিরিয়ে ম্যাচে ফিরল বাংলাদেশ

নিশাঙ্কা হাফ সেঞ্চুরির আক্ষেপ নিয়ে ফিরলেও মাইলফলক ছুঁয়েছেন কুশল মেন্ডিস। তবে এরপর আর বেশি দূর এগোতে পারলেন না। শরিফুলের খাটো লেন্থের বলে আপার কাট করতে গিয়ে থার্ডম্যানে ধরা পড়েন। এর আগে তার ব্যাট থেকে এসেছে ৭৩ বলে ৫০ রান। দুই সেট ব্যাটারকে সাজঘরে ফিরিয়ে বাংলাদেশকে ম্যাচে ফেরালেন শরিফুল।

নিশাঙ্কাকে ফেরালেন শরিফুল

শরিফুলের স্লোয়ারে ব্যাট নামাতে দেরি করে ফেলেছেন নিশাঙ্কা। আম্পায়ার পল উইলসনের দেওয়া এলবিডব্লিউর সিদ্ধান্ত প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই রিভিউ করেছিলেন, তবে বাঁচেননি। বল ব্যাটের আগে লেগেছে প্যাডে, ইমপ্যাক্টে আম্পায়ার্স কল। ৭৪ রানের জুটি অবশেষে ভাঙলেন শরীফুল। নিশাঙ্কা থেমেছেন ৬০ বলে ৪০ রান করে, যিনি জীবন পেয়েছিলেন ৩৬ রানে

ক্যাচ ফেললেন মুশফিক

১৯তম ওভারে বোলিংয়ে ছিলেন হাসান। দ্বিতীয় বলটি নিশাঙ্কার ব্যাটের কানা ছুঁয়ে চলে যায় প্রথম স্লিপ ও উইকেটকিপারের মাঝামাঝি অঞ্চলে, সেখানে ডানদিকে ডাইভ দিয়েছিলেন মুশফিক। কিন্তু আফগানিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচে ইব্রাহিমের ক্যাচটির পুনরাবৃত্তি করতে পারেননি তিনি। অবশ্য শুরুতে বাঁদিকে একটু এগিয়েছিলেন, পরে ডানদিকে ঝাঁপ দিতে হয়েছে। গ্লাভসে অবশ্য পেয়েছিলেন, রাখতে পারেননি। নিশঙ্কা জীবন পেলেন ৩৬ রানে।

পাওয়ার প্লেতেই দুই স্পিনার

ইনিংসের নবম ওভারে প্রথমবার স্পিন আক্রমণে যায় বাংলাদেশ। সাকিব নিজেই বল হাতে তুলে নেন। পরের ওভারে অপর প্রান্ত থেকেও স্পিন আক্রমণে যান সাকিব। এবার বল হাতে নাসুম আহমেদ। দুই স্পিনারই পাওয়ার প্লেতে একটি করে ওভার করেছেন। দুজনই ভালো শুরু পেয়েছেন। ১ উইকেটে ৫১ রান তুলে প্রথম পাওয়ার প্লে শেষ করেছে শ্রীলঙ্কা।

লঙ্কান শিবিরে প্রথম আঘাত হাসানের

ষষ্ঠ ওভারের শুরুটা হয়েছিল টানা দুই বাউন্ডারিতে। তবে তৃতীয় বলে উইকেট শিকার করে সেটার প্রতিশোধ নিলেন হাসান মাহমুদ। ব্যাকঅব লেন্থ থেকে খানিকটা আউট সুইং করে বেরিয়ে যাওয়া বলে ব্যাট চালিয়ে ছিলেন দিমুথ করুণারত্নে। ব্যাটের বাইরের দিকের কানায় লেগে বল চলে যায় মুশফিকুর রহিমের গ্লাভসে। ১৮ রান করে এই ওপেনার সাজঘরে ফেরায় ভেঙেছে ৩৫ রানের উদ্বোধনী জুটি।

রিভিউ নিয়ে বাঁচলেন নিশাঙ্কা

ইনিংসের প্রথম বলেই ইনসাইড এজে বোল্ড হতে পারতেন নিশাঙ্কা। কপালের জোরেই সেটা স্টাম্পের পাশ ঘেষে বাউন্ডারি হয়েছে। পরের দুই বলও স্বস্তিতে খেলতে পারেননি, চতুর্থ বলে গিয়ে ভেতরের দিকে ঢোকা বলে নিশাঙ্কাকে তো এলবিডব্লিউ দেন আম্পায়ার।  সেখানে একটু সময় নিয়ে রিভিউ নেন এই ওপেনার। উচ্চতা নিয়ে সংশয় ছিলই। শেষ পর্যন্ত বল ট্র্যাকিং দেখিয়েছে, বল যেত স্টাম্পের ওপর দিয়েই।

এক পরিবর্তন নিয়ে ফিল্ডিংয়ে বাংলাদেশ

গত ম্যাচের একাদশ থেকে এক পরিবর্তন নিয়ে আজ মাঠে নেমেছে বাংলাদেশ। মিডল অর্ডার ব্যাটার আফিফ হোসেনের জায়গায় সুযোগ পেয়েছেন স্পিনার নাসুম আহমেদ। অর্থাৎ একজন ব্যাটারকে বাদ দিয়ে বোলিংয়ে শক্তি বাড়িয়েছে সাকিবের দল।

বাংলাদেশ একাদশ-

নাঈম শেখ, লিটন দাস, মেহেদী হাসান মিরাজ, সাকিব আল হাসান, তাওহীদ হৃদয়, শামীম পাটোয়ারী, মুশফিকুর রহিম, নাসুম আহমেদ, তাসকিন আহমেদ, হাসান মাহমুদ ও শরিফুল ইসলাম।

শ্রীলঙ্কা একাদশ-

পাথুম নিশানকা, দিমুথ করুনারত্নে, কুশল মেন্ডিস, সাদেরা সামারাবিক্রমা, চারিথা আসালাঙ্কা, ধনঞ্জয়া ডি সিলভা, দাসুন শানাকা, দুনিথা ওয়েলেগেলে, মাহেশ থিকসেনা, কাসুন রাজিথা, মাথিশা পাথিরানা।

এইচজেএস