ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের পার্থক্য ম্যাচ অভিজ্ঞতায়
নারী ক্রিকেট অঙ্গনে ভারত রীতিমতো এক পরাশক্তিই। দ্বিতীয় নারী বিশ্বকাপ থেকে খেলছে ক্রিকেটের বিশ্বআসরে, ২০১৭ সালে অনুষ্ঠিত সবশেষ বিশ্বকাপের রানার্সআপ এই দল। এমন দলের বিপক্ষে মাত্র প্রথম বিশ্বকাপ খেলতে আসা বাংলাদেশের লড়াইটা যেন ছিল ডেভিড আর গোলিয়াথের। তবে সেই ডেভিড হওয়া হয়নি বাংলাদেশের, রূপকথার জন্ম দিয়ে বধ করা হয়নি গোলিয়াথ ভারতকে। ম্যাচ শেষেও সেই অভিজ্ঞতার অভাবকেই বড় করে দেখলেন বাংলাদেশ অধিনায়ক নিগার সুলতানা।
তবে ভারতের বিপক্ষে সবশেষ এশিয়া কাপে জেতার সুখস্মৃতি আছে বাংলাদেশের। সেটা বিশ্বকাপেও ফিরিয়ে আনার একটা আশাই দেখাচ্ছিল নাহিদা খাতুন, রিতু মনি, জাহানারাদের বোলিং। ভারতকে আটকে রাখা গিয়েছিল ২২৯ রানেই। তবে এরপর অবশ্য ব্যাটিং লাইন আপ সেই ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে পারেনি। ১১৯ রানে শেষ হয়েছে ইনিংস। ম্যাচ হেরেছে ১১০ রানের বিশাল ব্যবধানে।
বিজ্ঞাপন
ভারত নারী ক্রিকেটে বাংলাদেশের চেনা প্রতিপক্ষই। সেই দলের বিপক্ষে বিশ্বকাপে সুযোগ পেয়েও ভালো করতে না পারার আফসোস ঝরে পড়েছে নিগারের কণ্ঠে। তিনি বলেন, ‘ভারতকে ভালো একটা সংগ্রহের মধ্যে আটকে রাখার কাজটা আমাদের বোলাররা চমৎকারভাবে করেছে। টপ অর্ডার রান না করলে চেজিং কঠিন। ওপরে অবদান রাখতে পারলে ম্যাচটা হয়তো ভিন্ন হতে পারত। আজকের কন্ডিশনে ভারত চেনা প্রতিপক্ষ ছিল, আমাদের আরও ভালো করার সুযোগ ছিল।’
ভারতকে বেধে রাখার কাজটা ভালোই সামলেছিলেন নাহিদা, রিতুমনি, জাহানারারা। তবে ব্যাটিংয়ের কারণেই হারতে হলো ম্যাচটা। এর দায় অধিনায়ক নিগার সুলতানা পুরো টপ অর্ডারসহ নিজের কাধেই তুলে নিলেন। বললেন, ‘হ্যামিল্টনে কিন্তু পাকিস্তানের সঙ্গে ২৩৪ করেছিলাম, বিশ্বাস ছিল, উইকেট ভালো ছিল, টপ ফোর বা সিক্স ব্যাটার লম্বা ইনিংস খেলতে পারলে এটা চেজ করতে পারব। স্কিলের দিক দিয়ে বললে আমরা স্কিলফুল, পারফর্ম করতে পারছি না দল হিসেবে। বোলিং ভালো হচ্ছে, হয়তো ব্যাটিংটা ভালো হচ্ছে না। স্কিলে হয়তো ৬০-৪০ হচ্ছে, অভিজ্ঞতাই পিছিয়ে যাচ্ছি। ফ্লাডলাইটে না খেলা, এটা অজুহাত হতে পারে না। টপ অর্ডারের দায়ভার নিতে হবে, আমিসহ। ওই সময় আউট না হয়ে জুটি গড়তে পারলে চিত্রটা ভিন্ন হতে পারত।’
বিজ্ঞাপন
তবে দিন শেষে এসব যে অভিজ্ঞতার অভাব থেকেই ভুগিয়েছে দলকে, সেটাও মনে করিয়ে দিলেন তিনি, ‘আমাদের সঙ্গে তাদের পার্থক্য, তারা ২৪০টি খেলেছে, আমরা ৪৬টি। তারা ক্রমাগত আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলে। তবে শক্তিমত্তা যদি দেখেন, তাদের স্পিন আক্রমণ ও আমাদের—কমবেশি একই রকম। একই ধরনের স্পিনার আছে। আমাদের সাত-আট পর্যন্ত ব্যাটিংয়ের সামর্থ্য আছে, অভিজ্ঞতার দিক দিয়ে পিছিয়ে আমরা।’
ভবিষ্যতে আরও ভালো করতে ঘরোয়া ক্রিকেটেও গুরুত্ব দেওয়ার কথা জানালেন তিনি। নিগারের ভাষ্য, ‘ক্রিকেট বোর্ড অনেককিছু প্ল্যান করেছে। অতীতেও আমাদের স্কিলের উন্নতি করানোর চেষ্টা করেছে। সব মিলিয়ে যদি আমাদের ঘরোয়া টুর্নামেন্ট আরও প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক হয়, তাহলে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে কমপিট করা ইজি হবে। আমি আশাবাদী, ক্রিকেট বোর্ড কাজ করছে।’
বাংলাদেশ নিজেদের পরের ম্যাচে মাঠে নামবে ২৫ মার্চ। বিশ্বকাপে নিজেদের ষষ্ঠ ম্যাচে নিগারদের প্রতিপক্ষ হবে অস্ট্রেলিয়া।
এনইউ