সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মুহূর্তে ছড়িয়ে পড়েছে আবাহনী লিমটেড আর খেলাঘর সমাজ কল্যাণ সমিতির মধ্যকার ম্যাচের একটি ভিডিও চিত্র। এনিয়ে আরেকবার প্রশ্নের মুখে ঘরোয়া ক্রিকেটের আম্পায়ারিং। 

আন্তর্জাতিক ম্যাচ পরিচালনা করা অভিজ্ঞ আম্পায়ার মাসুদুর রহমান মুকুলের নেওয়া একটি সিদ্ধান্তে অবাক সমর্থকরা। ফিল্ডিং দল বর্তমান চ্যাম্পিয়ন তো বটেই, সবশেষ টানা তিন আসরের হ্যাটট্রিক চ্যাম্পিয়ন আবাহনীর পক্ষ থেকে আউটের আবেদন না করতেই আঙুল তুলে দিয়েছেন মুকুল। জয়ের খুব কাছে গিয়েও হেরে যায় খেলাঘর। তবে বিতর্কিত সিদ্ধান্তে ম্যচ হারলেও অভিযোগ জানায়নি খেলাঘরের পক্ষ থেকে।

ঘটনার সূত্রপাত খেলাঘর ইনিংসে। তখন আবাহনীর দেওয়া ২৬২ রানে টার্গেট টপকাতে লড়ছে খেলাঘর। দলটির হয়ে ব্যাট করছেন ওপেনার হাসানুরজ্জামান আর তিনে নামা অমিত মজুমদার। স্পিনার আরাফাত সানির করা ইনিংসের ষষ্ঠ ওভারের শেষ বলটি সরাসরি হাসানুজ্জামানের পায়ে আঘাত করে। ভিডিওতে স্পষ্ট দেখা যায়, বলটি লেগ স্টাম্প মিস করবে। সেটি বুঝেই হয়তো আউটের আবেদন করলেন না বোলার সানি আর উইকেটরক্ষক জাকের আলি অনিক।

ফিল্ডার সাইড তখন আক্ষেপ করছে বলটি আরেকটি ভেতরে খেলানো গেলে আউট না হলেও অন্তত আবেদন করা যেত। দুই ব্যাটসম্যান তখন রানের জন্য ছুটেছেন। এমন মুহূর্তে দেখা গেল আম্পায়ার মুকুল আউটের সংকেত দিয়েছেন। সেটি লক্ষ্য করেননি বোলার আর উইকেটরক্ষক। মাঝ উইকেটে এসে হতাশায় ভেঙে পড়লেন ব্যাটসম্যান হাসানুরজ্জামান। এমন আউটের ব্যাখ্যা ব্যাটসম্যান, বোলার, উইকেটরক্ষক, সমর্থক কারো কাছেই থাকার কথা নয়!

শেষ পর্যন্ত খুব কাছে গিয়েও ম্যাচটি মাত্র ২০ রানে হারে খেলাঘর। তবে ম্যাচ শেষে এমন বিতর্কিত আউটকে ‘বিতর্কিত’ বলতে নারাজ ক্লাবটির কর্মকর্তারা। বিতর্ক উড়িয়ে এটাকে ‘পার্ট অব গেম’ বলছেন খেলাঘর সমাজ কল্যাণ সমিতির ম্যানেজার রাহাত হাসান।

ঢাকা পোস্টকে রাহাত বলেন, ‘এখানে অভিযোগ জানানোর মতো কিছু নেই। হয়তো বা মিসটেক হয়ে গেছে এরকম কিছু একটা। ‌ আমরা এটা ফেসবুকে দেখেছি, ফেসবুকে তো ভাইরাল হয়ে গেছে। আমরা ওরকম কোন অভিযোগ করিনি আমাদের পক্ষ থেকে। যেটা করা হয়েছে যে, আমাদের প্রত্যেক মাসের শেষে যে আম্পায়ার রিপোর্ট দেওয়া হয়, আমরা আম্পায়ার রিপোর্টে শুধু লিখেছি, উনি (মুকুল) এটা মিস করে গেছেন। শুধু এটুকুই অন্য আর কিছু নয়।’

অভিযোগ না জানানো ক্লাবটির পক্ষ থেকে বরণ মুকুলের পক্ষেই সাফাই দেওয়া হলো, ‘এবার কিন্তু লিগে খুবই ভালো আম্পায়ারিং হচ্ছে। দেখেন মুকুল ভাই কিন্তু অনেক ভালো আম্পায়ার। এটা শুধু একটা মিসটেক ছিল। এটা কোনভাবে মিস করে গেছেন। হয়তো অমনোযোগী ছিল বা কোনো কারণে উনি এটা মিস করে গেছেন। কোনো সংশয় নেই মুকুল ভাই খুবই ভালো আম্পায়ার। অনেক সময় এরকম ভুলভ্রান্তি হয়ে যায়। এটা কোন ইস্যু না।’

অথচ ম্যাচ চলাকালীন সেই ঘটনার পর ঢাকা পোস্টকে ক্লাবটির পক্ষ থেকে জানানো হয়, ম্যাচ শেষে ‘বাজে আম্পায়ারিংয়ে’ প্রসঙ্গ টেনে ম্যাচ অফিশিয়াল আর সিসিডিএম বরাবর চিঠি দেওয়া হবে। তবে ম্যাচ শেষ হতেই পাল্টে গেল কণ্ঠস্বর। এটা কি শুধুই সিদ্ধান্তহীনতা নাকি বিশেষ একটি দলকে সুবিধা পাইয়ে দেওয়ার যে অভিযোগ আছে ঢাকার ক্রিকেটে, তারই বাস্তব উদাহরণ, যার বিপক্ষে গিয়ে প্রতিবাদ করতেই হয়তো ভুলে গেছে দলগুলো!

টিআইএস