মুকিদুল ইসলাম মুগ্ধকে মিড অন দিয়ে উড়িয়ে নুরুল হাসান সোহান যেন নিজেই উড়ে যেতে চাইলেন। কয়েক পা এগিয়ে মুঠো পাকিয়ে অদৃশ্য এক ঘুষি দিলেন বাতাসে। স্বস্তির নিঃশ্বাস সোহানের, তার দল শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাবেরও বৈকি! ইনিংসের ৪৯তম ওভারে যে ২৬ রান নিয়ে দলের জয় নিশ্চিত করে ফেলেছেন এই উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান! এই জয় শিরোপার আরও কাছে নিয়ে গেছে ইমরুল কায়েসের দলকে। বিপিএলের পর ডিপিএল শিরোপা থেকে এক জয়ের দূরত্বে আছেন অধিনায়ক ইমরুল।

জয়ের জন্য শেখ জামালের প্রয়োজন ছিল ২৪৮ রান। ৮১ রান তুলতেই ৫ উইকেট হারিয়ে পরাজয়ের শঙ্কায় পড়ে শেখ জামাল। তখন মেহেদী হাসান মিরাজকে নিয়ে দলের হাল ধরেন সোহান। অনবদ্য ব্যাটিংয়ে দলের রান সচল রাখেন। ৬৫ বলে ব্যক্তিগত ফিফটি পূর্ণ করেন তিনি। পরে সেটি রূপ দেন তিন অঙ্কে। ১০৯ বলে ম্যাজিক ফিগার ছুঁয়ে অপরাজিত থাকেন ১৩২ রানে। ১১৮ বলের ইনিংসটি সাজান ১০টি চার আর ৫টি ছয়ের মারে। সঙ্গে মিরাজ করেন ৪৩ রান।

৪ উইকেটে পাওয়া জয়ে এবারের ঢাকা প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লিগের শিরোপায় একটি হাত দিয়ে রাখলো শেখ জামাল। সুপার লিগ পর্বে তাদের বাকি এখনো ৩ ম্যাচ। যেখানে ১টি ম্যাচ জিতলেই শিরোপা উল্লাসে ভাসবে অধিনায়ক ইমরুল কায়েসের দল।

মিরপুরে টস হেরে ব্যাটিং করতে নেমে ৬ উইকেটে ২৪৭ রান করে রূপগঞ্জ। সর্বোচ্চ ৭৫ রান করেন জাকির হাসান। ৯৮ বলে ৭টি চারের মারে এই রান করেন তিনি। এ ছাড়া ৫০ রান করে অপরাজিত ছিলেন দলটির বিদেশি রিক্রুট সাদ নাসিম। তার সঙ্গে ১৭ বলে ২৭ রান করে অপরাজিত ছিলেন নাসুম আহমেদ। শেখ জামালের হয়ে ১০ ওভারে ৪৩ রান দিয়ে সর্বোচ্চ ৩ উইকেট নেন মিরাজ।

রূপগঞ্জের দেওয়া ২৪৮ রানের লক্ষ্যে খেলতে নেমে ৮১ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে ফেলে শেখ জামাল। ক্রিজে থিতু হয়েও ৩২ রানে ফেরেন ডিপিএলের চলতি আসরে প্রথমবারের মতো খেলতে নামা মুশফিকুর রহিম। ইমরুল ১২ ও সাইফ হাসান আউট হন ১১ রানে। রবিউল ইসলাম রানের খাতা খুলতে পারেননি। সঙ্গে পারভেজ রসুলের ব্যাট থেকে আসে ১ রান। 

এরপর মিরাজকে নিয়ে ঘুরে দাঁড়ান সোহান। সিঙ্গেলস-ডাবলসের সঙ্গে মাঝে সাঝে বাউন্ডারি মেরে খেলতে থাকেন। দুজনে জুটি গড়ে এগোচ্ছিলেন জয়ের দিকে। কিন্তু ৪৩ রানে মিরাজের রানআউটে ভেঙে যায় পার্টনারশিপ। ১৩৪ রান আসে জুটি থেকে। 

এরপর ক্রিজে আসেন জিয়াউর রহমান। তাকে নিয়েই খেলা শেষ করে আসেন সোহান। ৬৫ বলে সোহান পেয়েছিলেন হাফ সেঞ্চুরি। আর সিঙ্গেল নিয়ে সেঞ্চুরি করেন ১০৯ বলে। তিন অঙ্ক ছোঁয়ার পর আরো আগ্রাসী সোহান। পরের ৩২ রান আসে মাত্র ৯ বলে। সোহানের অপরাজিত ইনিংসের ওপর ভর করে ৪ উইকেট আর ৬ বল হাতে রেখেই জয় পায় শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাব।

টিআইএস/এনইউ