চট্টগ্রাম টেস্টে অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউস যেভাবে উইকেট আকড়ে ছিলেন তাতে মনে হচ্ছিল, তাকে আউট করা বুঝি সম্ভবই নয়! শ্রীলঙ্কাকে আটকাতে হলে অপরপ্রান্তের ব্যাটসম্যানদের লক্ষ্য বানাতে হবে। বাংলাদেশ দলও যেন সেই পরিকল্পনাতেই হাঁটে। সতীর্থরা আসা-যাওয়ায় যোগ দিলেও একপ্রান্তে অবিচল ম্যাথিউস। তবে ব্যক্তিগত সংগ্রহ ১৯৯ হতেই মনযোগ হারিয়ে বসেন। ১ রানের আক্ষেপে পুড়ে দ্বিশতক থেকে বঞ্চিত হন এই ডানহাতি।

৫৭৮ মিনিট উইকেটে কাটিয়ে খেলেছেন ৩৯৭ বল। ১৯৯ রানের আউট হয়ে কতখানি আক্ষেপে পুড়েছেন ম্যাথিউস? দ্বিতীয় দিনের খেলা শেষে জানালেন, নাঈম হাসানের ওই বলটা খেলতে গিয়ে হিসেবে গড়বড় পাকিয়ে ফেলেন তিনি, শেষ ব্যাটসম্যান নিয়ে ব্যাট করার ফলে তড়িঘড়ি করে মাইলফলক ছুঁতে গিয়ে বিপদ বাঁধিয়েছেন।

ম্যাথিউস বলেন, ‘অবশ্যই আরও এক রান হলে দারুণ হতো। কিন্তু ঈশ্বর যা দেন সেটাই নিতে হবে। আমি কৃতজ্ঞ যে আমি একটা ভালো ইনিংস খেলেছি। আশা করছি এটা খেলায় প্রভাব ফেলবে। আমি পূর্ব পরিকল্পনা থেকে শটটি খেলেছি। এটা আসলে (ব্যাটে) ঠিকমতো লাগেনি। এটা দুর্ভাগ্যজনক ঘটনাগুলোর একটি।’

সঙ্গে যোগ করেন ম্যাথিউস, ‘শেষ ব্যাটসম্যানকে নিয়ে ডাবল সেঞ্চুরির জন্য এক রান করা, আমি খুব করে তা করতে চেয়েছিলাম। আমি হিসেবে ভুল করে ফেলি। দুর্ভাগ্যজনকভাবে সাকিব তা লুফে নেয় (হাসি)। এক রান হলে দারুণ হতো। কিন্তু আবারও বলি এটা ক্রিকেট।’

ম্যাথুস অবশ্য ১৯৯ রানের ইনিংসে জীবন পেয়েছেন দুই বার। প্রথমবার অর্ধশতক হাঁকানোর পর তার ক্যাচ ফসকেছে উইকেটের পিছন। দ্বিতীয়বার জীবন পেয়েছেন ১১৯ রানে ব্যাট করার সময়। সেটি ছিল আজ দিনের চতুর্থ ওভার। খালেদ আহমেদের লেংথ বলে খোঁচা মারেন ম্যাথিউস। তবে ফিল্ডিং সাইট বুঝতে পারেননি তার ব্যাট ছুঁয়ে বল জমা পড়ে কিপার লিটন দাসের হাতে। একটুর জন‍্য ব‍্যাটের কানা নেয়নি ভেবে হতাশা প্রকাশ করেন বোলার-কিপার। পরে রিপ্লেতে দেখা গেছে ব‍্যাটের কানা ছুঁয়ে লিটনের গ্লাভসে গিয়েছিল বল।

এই ঘটনায় রিভিউ না নেওয়ায় অনেকেই অধিনায়ক মুমিনুল হর বোলার-কিপারকে দুষছেন। তবে ম্যাথিউস দাঁড়িয়েছেন তাদের পাশে, ‘সত্যি কথা বললে সে সময় আমি নিশ্চিত ছিলাম না। আমিও অবাক হয়েছিলাম, একদমই শুনতে পাইনি। তাই আমি উল্টো লিটনকে জিজ্ঞেস করেছিলাম যে সে কিছু শুনেছে কি না। তবে স্বাভাবিকভাবেই আমি যেটা শুনিনি, সেটা লিটন কিভাবে শুনবে? এসব জিনিস হয় ক্রিকেটে।’

বাংলাদেশ দলের প্রতিনিধি হয়ে সংবাদ সম্মেলনে আসা নাঈম হাসানও কথা বলেছেন ম্যাথিউসের সুরে, ‘আসলে ওটার শব্দই পাইনি আমরা। ব্যাটে লেগেছে কি না নিশ্চিত ছিলাম না। বাইরে থেকে মনে হয় অনেক সহজ রিভিউ নেওয়া, কিন্তু যারা মাঝখানে থাকে তাদের জন্য কঠিন। কারণ একটা বল যেতে বেশি সময় লাগে না। মিলি সেকেন্ডের ভেতরে বল চলে যায়।’

টিআইএস/এনইউ